শনিবার হেফাজতে ইসলামের পক্ষ থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে অভিযান নিয়ে সরকারি প্রেসনোটকে ‘বানোয়াট’ উল্লেখ করে বলা হয়, "শাপলা চত্বরে তৌহিদী জনতার ওপর গণহত্যার বিষয়টি ধামাচাপা চেষ্টা করছে সরকার। "
বিবৃতিতে বলা হয়, "সরকারি প্রেস নোটের বক্তব্য সম্পূর্ণ বানোয়াট, কাল্পনিক এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত। নিরীহ ঘুমন্ত মানুষের ওপর যে বর্বরোচিত গণহত্যা চালানো হয়েছে তা ধামাচাপা দিতেই হেফাজতের ওপর দায় চাপিয়ে এই প্রেসনোট দেয়া হয়েছে। "
চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠনটির কেন্দ্রীয় প্রচার সচিব মাওলানা মুনীর আহমদ স্বাক্ষরিত এই বিবৃতিতে বলা হয়, "এতে নিহতদের যে সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে তা শুধু হাস্যকরই নয়, সংখ্যার কারণেই পুরো প্রেসনোটটি অসত্য প্রমাণিত হওয়ার জন্য যথেষ্ট। "
সরকার বলছে, অভিযানে কেউ নিহত হয়নি।
তবে দিনের সংঘাতে তিন জন পথচারী, একজন পুলিশ সদস্যসহ মোট ১১ জন নিহত হয়।
বিবৃতির ভাষ্য, "অভিযানে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার না করা ও বিভিন্ন ভবনে ও অলি গলিতে আশ্রয় নেয়া লোককে অভয় দিয়ে সরিয়ে দেয়া হয়েছিল মর্মে যে কথা বলা হয়েছে, তা নির্জলা মিথ্যা। ঘটনার ধারণ করা ভিডিও ফুটেজ সরকারের এই বক্তব্যকে সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রমাণ করে। "
প্রেস নোটে ৫ মে পল্টন, গুলিস্তান ও বিজয় নগর এলাকায় ভাংচুর অগ্নিসংযোগের জন্য হেফাজত কর্মীদের দায়ী করে যে বক্তব্য দেয়া হয়েছে সেটিও সঠিক নয় বলে দাবি করা হয়।
হেফাজতের মিছিলের ওপর পুলিশ ও সরকারি দলের কর্মীরা হামলা চালায় দাবি করে বিবৃতিতে বলা হয়, "তারা নিরীহ আলেমদের গুলি করে পিটিয়ে হত্যা করে।
আর সরকারি দলের লোকেরা সরাসরি এবং কিছু সংখ্যক হেফাজতকর্মী সেজে বিভিন্ন স্থানে অগ্নিসংযোগ করে এবং জানমালের ক্ষয়ক্ষতি সাধন করে। "
হেফাজতের আমীর শাহ আহমদ শফী রওনা হয়েও বিএনপির উপর মহল থেকে ফোন পেয়ে শাপলা চত্বরে না গিয়ে ফিরে যাওয়ার যে কথা বলা হয়েছে, তাও অসত্য বলে বিবৃতিতে দাবি করা হয়।
বিবৃতিতে এই প্রেসনোট প্রত্যাখ্যান করে ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের জন্য কমিশন গঠনের দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, শাপলা চত্বরে ব্যাপক প্রাণহানির বিষয়টি গুজব নয়, 'একেবারেই সত্যি'। ঘটনার পর সেখান থেকে লাশ সরিয়ে নেয়ার বিষয়টিও সত্য।
তবে ওই দিন ঠিক কতলোক পুলিশের গুলি ও নির্মম পিটুনিতে ‘শহীদ’ হয়েছেন তার সঠিক পরিসংখ্যান এখনই বলা যাচ্ছে না। এটি তৈরির কাজ চলছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর আচরণ ছিল উস্কানিমুলক। প্রেসনোটে শাপলা চত্বরে আসার সময় হেফাজত কর্মীরা উচ্ছৃংখল আচরণ করে এবং নাশকতামুলক কাজ করে বলে যে কথা উল্লেখ করা হয়েছে তাও ঠিক নয়।
সরকার মূলত হেফাজতকে দমন করতেই এ অভিযান চালিয়েছে বলে বিবৃতিতে দাবি করা হয়।
‘নাস্তিক’ ব্লগারদের শাস্তি এবং প্রকাশ্যে নারী-পুরুষ পুরুষের অবাধ বিচরণ বন্ধের দাবিতে গত ৫ মে ঢাকা অবরোধের পর মতিঝিলে সমাবেশ করে হেফাজত। ওই সমাবেশস্থল থেকে আধা কিলোমিটার এলাকাজুড়ে গাড়ি পুড়িয়ে, ভবনে আগুন ধরিয়ে চলে তাণ্ডব।
হেফাজতকর্মীরা মতিঝিলে টানা অবস্থানের ঘোষণা দিলে রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালিয়ে তাদের সরিয়ে দেয়।
ওই অভিযানে আড়াই হাজার মানুষ নিহত হয়েছে বলে বিএনপি দাবি করলে প্রথমে আইন-শৃংঙ্খলা বাহিনীর সংবাদ সম্মেলনে এবং পরে সরকারি প্রেসনোটে অভিযানের বিষয়ে বক্তব্য দেয় সরকার।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।