আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জুলিয়ান এ্যাসাঞ্জ, ড.ইউনুস ও শাহরুখ খান সমাচার…

আমার ব্যাপারে কিছু বলব না
কিছুদিন ধরেই ৩জনকে বাংলাদেশ সহ পুরা বিশ্ব বেশ গরম! উইকিলিকসের জুলিয়ান এ্যাসাঞ্জ, আমাদের নবেল বিজয়ী ড.ইউনুস ও কিং খান শাহরুখ খান! ব্লগগুলোও মারাত্মকভাবে গরম এদের নিয়ে! তবে উইকিলিকসকে নিয়ে লেখা প্রায় চোখেই পড়েনি! যাকগে এদের নিয়ে বেশকিছু কথা মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। পড়ায় মন বসাতে পারছিনা। তাই ঠিক করলাম কথাগুলো উগড়ে দেই। উইকিলিক্স ও পল এ্যাসাঞ্জঃ আজকে একজনের একটা লেখায় পড়লাম আল কায়েদাও যুক্তরাষ্ট্রের ততটা ক্ষতি করতে পারেনি যতটা করেছেন এ্যাসাঞ্জ। একেবারে হাটে হাড়ি ভেঙ্গে দিয়েছেন, দিচ্ছেন।

বেশ গরম গরম খবর পাচ্ছিলাম উইকিলিক্সের মাধ্যমে। আরব নেতাদের ইরানের উপর হামলার ইচ্ছে, সৌদি রাজপূত্রদের খুল্লাম খুল্লা জীবন যাপন এসবতো আছেই, আরো নানা গোপনীয় নথি প্রকাশ করে মাতব্বরদের ঘুম হারাম করে দিয়েছে উইকিলিক্স। এতটাই যে যুক্তরাষ্ট্রের এক আইনজীবি বলেছেন 'মার্কিন সরকারের উচিত এ্যাসাঞ্জকে গুপ্তহত্যা করা। সে গোপন নথি প্রকাশ করে যে অন্যায় করেছে হত্যা ছাড়া অন্য যেকোনো শাস্তি তারজন্য কম হয়ে যায়'। কুত্তার বাচ্চা তোরা যখন ইরাক-আফগান, ফিলিস্তিনি লাখ লাখ নিষ্পাপ মানুষকে বিনা কারনে হত্যা করিস তখন কোনো অপরাধ হয়না? উইকিলিক্সের কারনে কোন দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়েছে? মানুষ জানতে পারছে পশ্চিমা মাতব্বররা সহ বিভিন্ন দেশের আকাম কুকামের কথা।

এরা নাকি আবার নিজেদের গণতান্ত্রিক দাবী করে! আর আমাদের মত উন্নয়নশীলদেশের মানুষেরা ভাবে আহা কি সুন্দর গনতন্ত্র তাদের!! সবার মত প্রকাশের (!!!) স্বাধীনতা আছে! এতটাই যে একজন মত প্রকাশ করেছে বলে তাকে যৌন নির্যাতনের কেস দিয়ে হলেও আটকানোর চেষ্টা করা হয়েছে!! হায় গনতন্ত্র! কেউ কি বলতে পারেন প্রকৃত গনতন্ত্র কাকে বলে? কোনো দেশে কি আছে প্রকৃত গনতন্ত্র? পল এ্যাসাঞ্জের ভবিষ্যত জানিনা, কিন্তু তিনি যে পথ দেখিয়ে গেছেন অবশ্যই কেউনা কেউ তা অনুসরন করে যাবে। বলা হচ্ছে পল এ্যাসাঞ্জ সাংবাদিকতার ইতিহাসে নতুন ধারার সূচনা করেছেন। জয় হোক এ্যাসাঞ্জের, জয় হোক উইকিলিক্সের। ড.মোহাম্মদ ইউনুসঃ একমাত্র নোবেল বিজয়ী বাংলাদেশী। এই লোকটাকে নিয়ে শুরু হয়েছে পুরোনো বিষয় নিয়ে নতুন ক্যাচাল।

কেউ তার পক্ষে, কেউ বিপক্ষে। সংবাদপত্রের সম্পাদকেরা থেকে শুরু করে ব্লগাররা পর্যন্ত বিভক্ত। মাহফুজ আনামকে দেখলাম ইউনুসের পক্ষে সাফাই গেয়ে মুখে ফেনা তুলে ফেলছেন। আবার বিডি নিউজের এডিটরকে দেখলাম বিপক্ষে বলছেন! ব্লগেও অনেককে তার পক্ষে কথা বলছেন দেখলাম। একজন তো দেখলাম বলছেন আরেকটা ইউনুসের জন্ম না দিয়ে এই ইউনুসের সমালোচনা করা যাবেনা, উচিতনা।

এতে বুঝি দেশের সম্মানহানি হবে!! হবে অবশ্যই! একজন নোবেল বিজয়ী তহবিলের টাকা মেরে দিয়েছেন এটা প্রমানিত হলে বাংলাদেশের মানসম্মান আর থাকবেনা। তবে তার আগে আমাদেরই উচিত তার কাজের মূল্যায়ন করা। আসলেই তিনি কতটা দারিদ্রতা দূর করতে পেরেছেন? তার মাইক্রো ক্রেডিট যদি এতটাই সফল হয়ে থাকে তাহলে এখনো কেন বাংলাদেশে ৫০-৬০ শতাংশ লোক দারিদ্রসীমার নিচে বাস করে? যারা তার পক্ষে কথা বলছেন তারা কি কখনো গ্রামে গিয়ে দেখেছেন প্রকৃত অবস্থা? দেখেছেন কিভাবে কিস্তির নামে ৫০-৭০ শতাংশ পর্যন্ত সুদ নেয়া হয়? সুদ দিতে না পারলে ঘড়ের চাল পর্যন্ত খুলে নেয়া হয়? সিডর আক্রান্ত মানুষও নিস্তার পায়না সুদখোরদের কাছ থেকে!! বাসার ড্রয়িংরুমে গরম চা পান করতে করতে আর বেনসন টানতে টানতে অনেক কথাই বলা যায়। শাহরুখ খানঃ এই ভদ্রলোককে নিয়ে আলাদা পোষ্ট দেয়ার ইচ্ছে ছিলো। পরে ভাবলাম না থাক, একসাথেই দেই।

উনি ল্যাটেষ্ট ক্যাচালের উৎস। ক্যাচালটা অবশ্য উনি তৈরী করেননি, করেছি আমরাই। স্বপন চৌধূরী নাম নিয়ে, গাজি ইলিয়াস নাম নিয়ে। আমি গাজি ইলিয়াস হিন্দি বুঝিনা, ইংলিশ বুঝিনা, এমনকি হিন্দি হেট করে, তাইলে আমি শাহরুখ খানের প্রোগ্রামে কোন বালটা ফালাইতে গেসি? (অবশ্য বিশেষ সূত্রে জানতে পেরেছি তথাকথিত গাজি ইলিয়াস নাকি বাংলাদেশি না! শাহরুখের বয়ে আনা কলকাতার ঘটি!) এই শাহরুখ খানকে নিয়ে আমার সাথে আমার বন্ধুতের ফেসবুকে তুমুল আকারে ঝগড়া হয়ে গেছে! এক বন্ধু তো বলেছে আমার কোনো স্ট্যটাসে আর কমেন্টই করবেনা! কারন? আমি শাকিব খানের পক্ষ নিয়ে তাকে কিছু অপ্রিয় কথা শুনিয়েছিলাম! শাহরুখ আসুক। আরো ১০০ বাস আসুক।

গ্লোবালাইজেশনের যুগে এক দেশের সাথে আরেকদেশে সাংস্কৃতিক বিনিময় হবেই। আমার প্রশ্ন বিনিময়টা একপক্ষীয় কেন? আমার দেশের কজন শিল্পীকে ভারত ডেকে নিয়ে গেছে? অথচ প্রায়ই তাদের শিল্পীরা এসে নাচ গান করে যাচ্ছেন! তারা আসবে, এসে টাকা নিয়ে যাবে, অথচ আমরা যেতে পারবোনা! কেনো? এসব নিয়ে কারো কোনো মাথাব্যাথা নেই! আর কতটা মেরুদন্ডহীন হলে এসব নিয়ে প্রশ্ন উঠবে? আর কতটা মেরুদন্ডহীন হব আমরা বাঙ্গালীরা? আজ আমার দেশের গুনী শিল্পীরা কোনো মর্যাদা পাননা। অসুস্থ হয়ে বিনা চিকিৎসায় মারা যান। কোনো অন্তর শোবিজকে দেখিনা একটা কনসার্ট করে তাদের সাহার্যার্থে টাকা তুলতে!!! শাহরুখকে নিয়ে যেভাবে উচ্চকন্ঠিত হয় বাংলাদেশীরা, নিজ শিল্পীদেরকে নিয়ে তার ১/১০ ও আওয়াজ শোনা যায়না!! হায়রে বাংগালি, হায়রে বাংলাদেশ। মেরুদন্ডহীন জাতি একেই বলে বোধহয়! আরেকটা ব্যাপার খেয়াল করলাম।

যারা সারাদিন হিন্দি সংস্কৃতির আগ্রাসন নিয়ে, ভারতের কাছে দেশ বিক্রি নিয়ে উচ্চকন্ঠিত থাকেন তাদেরকেই দেখলাম কালকে শাহরুখের প্রোগ্রাম নিয়ে খুব ব্যস্ত থাকতে! তখন আর ভারতীয় আগ্রাসনের কথা মনে ছিলোনা তাদের! অর্ধনগ্ন ললনাদের নৃত্য তাদের সব ভুলিয়ে দিয়েছিলো। নিজের সম্মানটা নিজেকেই আদায় করে নিতে হবে। কেউ যেচে এসে আপনাকে সম্মান দেখাবেনা।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.