আজ (১০ই ডিসেম্বার)বাংলাদেশে বিদেশী হাঙ্গর ও দেশীয় রূপালি ইলিশের মাঝে খেলা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। গত এক বছর ধরেই আমাদের সংস্কৃতি ক্রমেই বিদেশী সংস্কৃতি দ্বারা খতিগ্রস্ত হচ্ছে। হুজুগে প্রিয় বাংগালীরা নিজেদের ভষা,ঐতিয্য,সংস্কৃতি বাদ দিয়ে ভীনদেশী সংস্কৃতিতে গা ভাসিয়ে দিয়েছে। এর ফলে তারা ভুলতে বসেছে নিজের অস্তিত্বকেই। আমাদের স্বভাবটাই এমন যে আমরা পহেলা বৈশাখ চলে গেলে ভুলে যাই আমাদের সংস্কৃতি,ফেব্রুয়ারী চলে গেলে ভাষার মর্ম ভূলে যাই আর ১৬ই ডিসেম্বার চলে গেলে স্বাধীনতার ত্যাগ ও উদ্দেশ্য ভুলে যাই।
বাংলাদেশে আজ ইভ টিসিং অনেক বড় সমস্যায় রুপ নিয়েছে, কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না যে ইভ টিসিং টা আমাদের দেশে ডুকেছে মূলত চলচ্চিত্রের মাধ্যমে। হিন্দি সিনেমা গুলোতে এরকম ইভ টিসিং ব্যাপক হারে দেখানো হত এবং তা থেকে আমাদের কপি পেস্ট (চুরি করা) প্রিয় বাংগালি পরিচালকেরা ইভ টিসিং টেনে নিয়ে আসল আমাদের চলচ্চিত্রে। এভাবে ইভ টিসিং এর মত আরো অনেক অপসংস্কৃতি আমাদের দেশে ডুকেছে।
আমার সবথেকে খারাপ লাগে যখন দেখি একজন মেয়ে ভারতীয় প্রায় সবগুলো চ্যানেলের সিরিয়াল গুলোর পরিচালক থেকে শুরু করে সবার প্রোফাইল জানলেও আমাদের আমদের দেশীয় জনপ্রিয় কোন পরিচালকের নাম বললেও তাকে যখন না চিনে। হিন্দি সিরিয়াল কেন দেখে?অনেক কে এই প্রশ্ন করে যে উত্তর পেয়েছি তা হলঃ বাংলা নাটক গাঁজাখুড়ো গল্পে ভরা,নাটক গুলো আধুনিক নয় এবং বাংলা নাটকের কাহিনী আগে থেকেই বলা যায় যে এর পর কি হবে।
বাংলা নাটকের কাহিনী যদি গাজাঁখুড়ো হয়, তাহলে আমি বলব হিন্দি নাটকের কাহীনি হচ্ছে মহা গাঁজাখুড়ো।
আপনি কথায় দেখছেন যে রাতে মানুষ মেকাপ করে,ভারী গহনা ও জমকালো শাড়ী পরে ঘুমাতে যায়?এমনকী রান্নাও করে এমন গেট আপ-এ!একজন মানুষকে পরিচালম যে কয়েকবার বিয়ে দেয় তা আমি বেশকিছু পরিসংখান খুজেও ভারতের বাস্তব অবস্থার সাথে মিলাতে পারলাম না। এগুলো কি গাজাখুড়ো না??????????আর আধু্নিকতার বেলায় আমার তো মনে হয় না আমাদের নাটক অনাধুনিক!এখন আপনি যদি আধুনিকতা বলতে ছোট পোষাক আর খোলামেলা জীবন ব্যাবস্থাকেই শুধু বুঝান তাহলে বাংলা নাটক অনাধুনিক তাছাড়া নয়। সর্বশেষ বিষয়টি হচ্ছে নাটকের কাহিনি আগে থেকেই বলতে পারা। সে ক্ষেত্রে আমার মনে হয় এটা বংলা না হিন্দি সিরিয়ালের জন্যই প্রোযোজ্য।
(বি.দ্রঃ যারা হিন্দি সিরিয়াল দেখেন তারা একটু ভালো করে খেয়াল করলেই উত্তর পাবেন আর যারা দেখেন না তাদের বলছি “ভাই আপনারা ভালো আছেন এটা আর দেখে টেস্ট করার দরকার নেই)
এবার আসি বাংলা সিনেমার ক্ষেত্রে। এক্ষেত্রে বিদেশী হাঙ্গর থেকে নিজেদের রুপালী ইলিশে একটু ভেজাল আছে। আমাদের পরিচালর,প্রযোজক এবং কাহিনীকারদের ব্যার্থতা এবং সর্বপরি সেন্সর বোর্ডই এর জন্য দায়ী। স্বাধিনতা পুর্ববর্তি এবং পরবর্তি এক দশক অনেক ভালো চলচ্চিত্র তৈরি হলেও পরবর্তি সময়ে নিয়মিত ভালো সিনেমার অভাবে এবং পরিচালকদের কপি পেষ্ট(চুরি বিদ্যা) পন্থা ও অশ্লিলতার কারনে বাংলা সিনেমা পিছিয়ে পরেছে। আর গত এক যুগধরে স্যাটালাইটের কল্যানে (অভিশাপে) সিনেমার বাজার পুরোটাই দখল করেছে ভারতীয় সিনেমা।
বর্তমানের মুক্ত সংস্কৃতির যুগে এটা অবশ্য খুবি স্বাভাবিক কিন্তু এটাই কি মুক্তসংস্কৃতি যে “বাংলাদেশে আমরা হিন্দি চ্যানেল ছাড়া একদিন পাড় না করতে পারলেও ভারতে আমাদের দেশীয় চ্যানেলগুলো প্রচারের অনুমতি এখনো পায়নি”
আপনি যদি এমন লোক হন যে আপনি আপনার বড়ির সামনের রাস্তা আপনার প্রতিবেশীকে ব্যাবহার করার জন্য লাল গালিচা বসিয়ে দিলেন আর আপনার প্রতিবেশি তার সিমানায় ডুকলেই আপনাকে বন্দুক নিয়ে তাড়া করে এবং মাঝে মাঝে গুলিও করে। আপনি ফিরে এসে আবার লাল গালিচা পরিস্কার করেন এবং সে যেন ভালো করে চলতে পারে সে ব্যাবস্থা করেন। তাহলে আপনাকে আমার আর বলার কিছু নেই। কিন্তু আপনি যদি প্রতিবাদী হন তাহলে আপনার জন্য আমাদের দেশে ভারতীয় চ্যানেলের প্রচার অনেক কিছু।
আমদের দেশে বিদেশী হাঙ্গর নিয়ে এসে বিভিন্ন অনুষ্ঠান করে এখন নিয়মিত ঘটনা।
আপনি হয়ত খেয়াল করবেন কিছু দিন পর পরই ভারতীয় দাদাদের গান গাইতে দেখা যায় বিভিন্ন অডিটরিয়ামে। চড়া দামে টিকিট ও বিক্রি হয় এর মাঝে দেশ থেকে হাতিয়ে নিয়ে যাচ্ছে অনেক টাকা। আপনি কি জানেন তারা এই টাকার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে কোন রকম ট্যাক্স না দিয়েই চলে যাচ্ছে?
এরই ধারাবাহিকতায় আজ বাংলাদেশে অপসংস্কৃতি নিয়ে আসছে শাহরুখ খান সহ দুই ডজন ভারতীয় হাঙ্গর।
আমদের বিজয়ের এই মহান মাসে হাঙ্গর ফাকা মাঠে গোল করে যাবে তা হতে পারে না। তাই শিখা চিরন্তনে আয়োজন করা হয়েছে জাগরনের গানের ২য় সংকলনের উন্মোচন উপলক্ষে দিন ব্যাপি দেশীয় শীল্পীদের গানের কনসার্ট।
এছাড়া বিকেল সাড়ে পাচটায় রবিন্দ্রা সারোবরে আবৃত্তি সংগঠন বৈকুন্ঠ আয়োজন করেছে শিমূল মুস্তফার একক আবৃত্তি অনুষ্ঠান। হঙ্গর সংস্কৃতির বিরুদ্ধে আপনার অবস্থান জানাতে উপস্থিত থাকুন যে কোন একটি দেশিয় অনুষ্ঠানে এবং দেশীয় সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিতে ভূমিকা রাখুন।
>>>>যারা কষ্ট করে আমার পোস্ট টি পরেছেন তাদের জা্নাই হ্রিদয়ের অন্তস্থল থেকে ধন্যবাদ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।