আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হিজবুত তাহরীরের কার্যক্রম নিষিদ্ধকরনঃ প্রিয় সামহোয়ার, আপনাদেরও কিছু করণীয় আছে

সবকিছুই চুকিয়ে গেছে গালিব! বাকি আছে শুধু মৃত্যু!!

যেকোন রাষ্ট্রব্যবস্থায় সরকার হচ্ছেন সে রাষ্ট্রের জনগণের সার্বভৌমত্বের প্রতিক। সরকারের মাধ্যমেই জনগণ তার সার্বভৌম ক্ষমতার প্রয়োগ ঘটান। সরকার বলতে এখানে অবশ্যই সাংবিধানীক সরকারকে বুঝানো হয়েছে, জোরপূর্বক চেপে বসা বা অসাংবিধানীক কোন কর্তৃপক্ষকে নয়। এটা সত্যি যে সরকার ও রাষ্ট্র এক নয়। সরকার রাষ্ট্রের একটি উপাদান মাত্র।

এটাও সত্যি সরকার ও রাষ্ট্রের প্রতি ব্যক্তির আনুগত্যে পরিমান এক নয়। আপনি রাষ্ট্রের বিরোধীতা করতে পারেননা, কিন্তু সরকারের বিরোধীতা করতে পারেন। অবশ্য এই বিরোধীতার একটা মাত্রা আছে। আপনি সরকারের নীতির বিরোধীতা করতে পারেন। কিন্তু সাংবিধানীক সরকারের অস্তিত্বকে অস্বীকার করা বা তাঁর উৎখাতে শামিল হওয়া বা চেষ্টা করা অবশ্যই রাষ্ট্রের বিরোধীতা করার পর্যায়ে পড়ে।

একটি সাংবিধানীক সরকারের অস্তিত্বকে অস্বীকার করে মূলত আপনি রাষ্ট্রের সংবিধান এবং জনগণের সার্বভৌমত্বের বিপক্ষে কাজ করছেন। এক্ষেত্রে আপনি নিঃসন্দেহে রাষ্ট্রের বিরোধীতা করছেন। হিজবুত তাহরীর একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে গঠিত ধর্মীয় সংগঠন। পৃথিবীর প্রায় সকল মুসলিম দেশে (জনসংখ্যার বিবেচনায়) এর কার্যক্রম আছে। এরা খিলাফত ব্যবস্থায় বিশ্বাসী।

সকল মুসলিম রাষ্ট্রকে একটি অভিন্ন ভৌগলিক সীমানায় একত্রিত করে তাঁরা একটি একক ধর্মভিত্তিক কেন্দ্রিয় ব্যবস্থা গঠন করতে চায়। তাঁরা রাষ্ট্রের প্রচলিত সংবিধান মানেনা। তাঁদের সংবিধান হচ্ছে মুসলিম ধর্মগ্রন্থ কোরআন। এখন রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সকল তত্ত্ব এবং আমাদের সংবিধান-কে বিবেচনায় আনলে তাঁদের এ সকল বিশ্বাস এবং কার্যক্রমকে অবশ্যই রাষ্ট্রবিরোধী বলা যায়। এর শাস্তি অবশ্যই চরম।

খুব স্বাভাবিক কারণেই সরকার এ সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ করেছে। এক্ষেত্রে সরকারের নীতির বিরোধীতা করার কোন সুযোগ আপনার নেই। কারণ সরকার একটি সংবিধান বিরোধী তথা রাষ্ট্রবিরোধী চক্রকে নিষিদ্ধ করেছে। এ পর্যায়ে সরকারের বিরোধীতা করা মানে প্রকারান্তরে রাষ্ট্রের বিরোধীতা। এখন একটি প্রতিষ্ঠানকে শুধু আক্ষরিক অর্থে নিষিদ্ধ করলেই হবেনা।

তাদের সকল সাংগঠনীক কার্যক্রম ও নেতৃত্ব এবং কর্মীবাহিনীকে সমূলে উৎখাত করতে হবে। যাবতীয় মুলধন ও বৈদেশিক সাহায্যের সকল পথ বন্ধ করতে হবে। গণমাধ্যম তথা পাব্লিক প্লাটফর্মে এদের প্রচার, প্রসার ও মতবাদ রুখতে হবে। অর্থাৎ এটি একটি সমন্বিত প্রচেষ্টা। সরকারের একার পক্ষে এটা সম্ভব নয়।

দেশের জনগণ, বুদ্ধিজীবী, প্রশাসন ও গণমাধ্যম-কে এ কাজে অবশ্যই আন্তরিক হবে। আমি সামহোয়ারকে অবশ্যই জনমত গড়ার, জনমত প্রচার ও প্রসারের একটি শক্তিশালী মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করি। বাংলা ভাষাভাষী ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে এর জনপ্রিয়তা বা ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখানে সবাই মোটামোটি উম্মুক্তভাবে তাঁদের মতবাদ প্রকাশের সুযোগ পাচ্ছেন। ঠিক এ সুযোগে সংঘবদ্ধ কিছু হিজবুত মতালম্বী তাদের মতাদর্শের বক্তব্য সম্বলিত লেখা প্রতিদিন এখানে পোস্ট করে যাচ্ছেন।

পোস্টগুলো দেদারসে টিকে থাকে। এগুলোর বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ উল্লেখ করার মতো বা চোখে পড়ার মতো কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে তা বলা যাবেনা। আমি ক্ষমা চেয়েই বলি, সামহোয়ার কর্তৃপক্ষের এই উদারতা বা উদাসীনতার কারণে রাষ্ট্রবিরোধী এই প্রতিক্রিয়াশীল চক্রটি জনপ্রিয় এই ব্লগটিকে তাঁদের মতবাদ প্রচারের একটি প্লাটফর্ম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। দয়া করে আমাকে ভুল বুঝবেন না। আমি সামহোয়ারের প্রতি অবশ্যই কৃতজ্ঞ।

সামহোয়ারের কারণেই আমি আমার চিন্তা বা ইচ্ছাগুলোকে অন্যদের সাথে শেয়ার করতে পারছি। বলতে পারেন আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা বা ভালবাসাবোধ থেকেই এ লেখাটির উৎপত্তি। সে ভালবাসার দাবিতেই বলি, দয়া করে রাষ্ট্রবিরোধী এই প্রতিক্রিয়াশীল চক্রটি-কে এ ব্লগ থেকে বিতারিত করে এদেরকে নির্মুলের রাষ্ট্রীয় অভিযানে ভূমিকা রাখুন। আর যদি তা না করে কেবলই উদারতা দেখিয়ে যান এবং এ কারণে অন্য কোন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠান বা মাধ্যম যদি আপনাদের-কে এই উদারতার জন্য প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীর পৃষ্ঠপোষক হিসেবে চিহ্নিত করেন তখন কিন্তু মানুষের নিকট নিজেদের বিশ্বাসযোগ্যতা ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.