ছিড়ে ফেলি ভিন্নতার ভেড়াজাল,মুক্ত করি মনুষত্ব্যকে।
কিছু দিন হল আমরা তিন বন্ধু কুমিল্লায় গিয়েছিলাম বেড়াতে। চট্টগ্রাম থেকে গিয়ে সরারসরি উঠলাম বার্ডে আমার এক বন্ধুর বাসায়। আমাদের মূল উদ্দেয়শ্য ছিল শালবন বিহার ও ময়নামতি যাদুঘর। প্রথম দিন কোথাও যাওয়া হয়নি।
শুধু সম্পূর্ণ বার্ড ঘুরেছি। এই জায়গাটাও অনেক সুন্দর। সব কিছু একদম গুছানো। বিকেলে ওদের মাঠে খেলা-ধুলা করলাম কিছুক্ষন। অনেক ভাল লাগল।
পরের দিন আমার বন্ধুরা সহ বের হলাম শালবন বিহার ও ময়নামতির উদ্দ্যেশ্যে।
শালবন বিহারঃ
বার্ড থেকে শালবন বিহার খুব কাছে। রিক্সশায় গেলে ১০ টাকা ভাড়া। ১০-১৫ মিনিট পর পৌছে গেলাম শালবন বিহার। রিক্সশা থেকে নেমে গেলাম বিহারের টিকিট কাউন্টারে।
২০ টাকা দিয়ে ৪ টা টিকিট নিলাম এবং ঢুকে পড়লাম বেতরে। মূল গেইট থেকে একটা ছোট রাস্তা দিতে যেতে যেতে দেখলাম রাস্তার দূপাশে অসংখ্য বাহারি ফুলের সমাহার। একটু একটু করে সামনে এগুতেই চোখে পড়ে বিহারের পুরাকীর্তি গুলো। এসব দেখে আর অপেক্ষা করতে পারলাম না রাস্তার মাঝখান ভেঙ্গে উঠেপড়লাম বিহারের একটা অংশে। কিছুক্ষন দেখার পর বিহারের মূল কেন্দ্র যেটা সেটারে পিছন দিকে ঘুরে উঠলাম আর একটু উপরে।
বিহারের অন্যান্য অংশ থেকে মূল কেন্দ্রটা একটু উচু তাই সেটার পুর্ব ধার দিয়ে গেলাম উত্তরে সেখান থেকে সিড়ি বেয়ে উঠলাম উপরে। মনে করছিলাম সেখানে অনেক কিছু থাকতে পারে কিন্তু গিয়ে দেখলাম অন্যান্য অংশের মত অনেক গুলো রুমের আকৃতি। যে গুলো দেখতে এক একটা গর্তের মতই লাগে। মূল যে ঘরের আকৃতি রয়েছে তার চারপাশে অনেকগুলো ছোট ছোট ঘরের আকৃতি। ।
সেগুলোর মধ্যে একটা মিল রয়েছে সেটা হল সবটাতেই দরজার দু’পাশে মশালের খাপ কাটা। এখানকার বিশাল আকৃতির যে সব তম রয়েছে সবগুলোই ভাঙ্গা ভাঙ্গা। বিহারে উত্তরে একটা গেইট রয়েছে সেখানে অনেক কারু কাজ করে হাতি,সিঙ্ঘ,নর্তকী ইত্যাদির মুর্তি অংকিত। এখানকার ইটগুলোর আকৃতি সাধারন ইটের থেকে ভিন্ন ধরনের। আর অবাক হওয়ার মত একটা বিষয় হল বিহারের তমগুলো সম্পর্নরুপে ইট দ্বারা তৈরি।
ময়নামতি যাদুঘরঃ
বিহার থেকে বের হয়ে গেলাম ময়নামতি যাদুঘরে। সেখানেও টিকিট করে ভেতরে ঢুকতে হয়। মেইন দরজা অতিক্রম করতেই চোখে পড়ে নির্দেশাবলি। সেখানে বারবার করে লেখা আছে যাদুঘরে "সর্বত্র বামে চলিবেন। "কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও কথাটার মানে উদ্ধার করতে পারলাম না।
আমরা ঢুকার সাথে সাথে একটা মুর্তি দেখতে পেলাম যেটা ব্রোঞ্জ দিয়ে তৈরি। বিহারের মাঠি খননের সময় প্রাপ্ত। যার আকার ১৪০ মি*১২০ মি। আমরা আস্তে আস্তে বাম দিক থেকে পরিদর্শন করা শুরু করলাম। সর্ব বামে গিয়ে কোনায় চোখে পড়ে আর একটা বিরাট আকারের মুর্তি।
যাদুঘরের বিতর চারদিকে সাজানো আছে বিহার খননের সময় প্রাপ্ত ভিবিন্ন জিনিসগুলো। বিতরে দেখলাম বৌদ্দদের পুজার সরঞ্জাম,পুরনো খাবার বাসন,চামচ,মস্লা বাটার পাটা,সর্ণ ও রুপার মুদ্রা। আরো দেখতে পেলাম ছোট ছোট অনেকগুলো মুর্তি,গরুর পায়ের চাপা আছে এমন পাতর,চার আংগুল বিশিষ্ট শিশুর পায়ের চাপ। আরো দেখতে পেলাম বর্মীয় ভাষায় লেখা তালপাতা ও পিতলের বাসন। ব্ররমীয় ভাষায় লেখা অনেকগুলো বই।
অনেকগুলো লোহার সরঞ্জাম,গাছের টুকরো,মানুষের হাড়,মনষা দেবির মুর্তি। যাদূঘরে রাখা সব কিছুই বিহার খননের সময় প্রাপ্ত।
সেখান থেকে বের হয়ে গেলাম আশে-পাশের এলাকায়। সব মিলিয়ে অনেক ভাল লাগল। পরের দিন আবার বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।