অচেনা পথে হাটতে চাই অনেক দুর
নিজের নামটা সবার কাছে চোদ্দবার বলতে আর ভালো লাগে না। বললেই বলে এ নামটা কোনদিন শুনিনি,তোমার নামটা অনেক কঠিন,তোমাকে এত কঠিন নামে আমরা ডাকতে পারবো না,ইত্যাদি। কথা গুলো বলার মানে হলো ইংলিশ লোকেরা আমার নামটা মোটেই বলতে পারে না। অনেক জায়গায় চাকরির ইন্টারভিউতে পড়তে হয়েছে বিপাকে। তাদের কে আমার নাম বললে তারা বলে তোমার আর কোন নাম নেই?মনে মনে কই তোগে দেশে আইছি বইলা এখন আমার নামটা ও পরিবর্তন করতে হইবো।
ধুর তোর লগে চাকরি করুম না। এই ভাবে চললো কিছু দিন,পরে কেউ নাম জিজ্ঞাস করলে বলি আমার নাম নাই। সবাই শুনে অবাক হয়। মোবাইল ফোন অর্ডার করার জন্য ফোন করলাম,নাম জিজ্ঞাস করতেই বললাম'মুশফিক'বেটি কয় কি 'মুশরিক'আমি কইলাম না 'মুশফিক'বেটি আবার কয় 'সফিক'এভাবে চললো কয়েক মিনিট,বেটিরে কোন মতেই বুঝাইতে পারলাম না আমার নাম। ট্যাক্রি ডাকতে গিয়া ফোন করলাম এক কোম্পানীতে, কই যামু জিগাইলো,কইলাম,নাম জিগাইতে কইলাম 'মুশফিক' কয় 'মুফিক' কন কি জ্বালা।
পরে বানান কইরা কইলাম,হালায় কয় কি'ওকে মুফিক আই এম সেনডিং ডা কার' একি মোর জ্বালা। জীবন প্রায় অতিষ্ট আমার। এদিকে আমার চাকরি নাই সব দিকে জ্বালায় আছি তার উপর নাম লইয়া কেরফা। চাকরির ইন্টারভিউ ডাক পড়লো,যথারীতি গেলাম(একটা একাউন্টিং র্ফাম) বস দুই জন,একটা পাকিস্তানী আর একটা ইংলিশ। শুরু হইলো 1 ঘন্টার প্যাচাল।
যাই হোক শেষে আমারে কয় বাইরে ওয়েট কর,জানানো হবে। আরো দুই ঘন্টা ওয়েট করলাম, পরে আল্লাহর অশেষ রহমতে চাকরি পেলাম। এইবার আবার শুরু হইলো নামের কেরফা,কয় একটা র্ফম ফিল আপ করতে হইবো তোর নাম বল । বললাম মুশফিকুর রহমান(পুরা নাম) ইংলিশ বেটায় কয় "এই নাম ও ওর জনমে শুনে নাই,এটা নাকি কইতে খুব ক্রিটিকাল"আমি কইলাম তুই আমারে মুশফিক কইয়া ডাকিস,ও কয় 'মুশইক' মোর জ্বালা। পাকিস্তানীটা কয় 'মুশসাফিক'।
নিজেরে নিজে কতক্ষন গাইল দিলাম কেন যে আমার এই নামটা রাখছিলো। ওদের কে বুঝালাম আর বললাম আমার এই নামেই আমাকে ডাকার জন্য,কিন্তুওরা বলে তোকে ডাকার জন্য আমাদের একটা সহজ নাম দরকার, কারন এতে তুই ক্লায়েন্ট কেয়ার করতে পারবি সহজে,আর ক্লায়েন্ট তোকে সহজে মনে রাখতে পারবে। যাই হোক কি আর করা নিজের এত সুন্দর নামের কোরবানী দিয়া কইলাম তোরা একটা নাম ঠিক কইরা দেয়,যেটা তোগো ডাকতে সুবিধা হয়। তখন ইংলিশ টা কইলো তোর নাম হইলো 'মিথ ' আজ থেকে আমরা তোরে এই নামে ডাকমু। আমি ও আমার নিজের কাছে হার মেনে,এ নামটা মেনে নিলাম।
তবে অনেক খারাপ লেগেছিলো,নিজেকে অনেক ছোট মনে হয়েছিলো। বাসা থেকে ফোন করে আমাকে চাইলে সবাই কে 'মিথ ' নামেই চাইতে হয়। আমার নামের নেম প্লেট টিতে ও উঠে এসেছে এই নামটি। মাঝে মাঝে নিজে নিজে ভাবি আর বলি'কিরে বেটা মুশফিক,পারলি না তো কিছু করতে,শেষ পর্যন্ত তোর নাম টা মিথ হইয়া গেল'।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।