আল বিদা
নরওয়ের এক রিপোর্টে বলল ড. ইউনূস দাতাদের অর্থ সরিয়ে নিয়েছেন আর আমরা অনেকেই ছি ছি করতে শুরু করে দিলাম। ঐ রিপোর্ট সত্য কিনা আর সত্য হলে তার কতটুকু ব্যক্তিস্বার্থে তা একবারও ভেবে দেখলাম না। অপেক্ষাও করলাম না এ ব্যাপারে ড. ইউনূসের বক্তব্য শোনার জন্য। অথচ দেশের কয়েকটি পত্রিকায় হেডলাইনও করে ফেলা হল।
ড. ইউনূস কত বড় একজন ব্যক্তিত্ব তা তো নতুন করে বলার কিছু না।
তিনি আমাদের দেশের জন্য কত বড় এক গর্ব তাও তো বলার কিছু না। নোবেল প্রাইজ বাংলাদেশে শুধু না, অনেক দেশের জন্যই চরম আরাধ্য। ভারতের মত বড় দেশে গত ১০০ বছরে কতজন পেয়েছে? আমরা এই প্রাপ্তিতেও নিজেদের ছোট করে ড. ইউনূসকে অপমান করি। বলি যে তিনি গ্রামীন ফোনের শেয়ারের বিনিময়ে এই প্রাইজ পেয়েছেন। গ্রামীন ফোনের ব্যবসার সাথে নোবেল কমিটির সম্পর্ক কোথায়? আর একটি টেলিফোন কোম্পানীর মূল্য কি এত বেশী? তাহলে তো এয়ারটেল/টাটার মালিকরাও নোবেল পেয়ে যেত।
আর তা যদি হয়েও থাকে তা তো অন্য দেশের লোক বলবে। যেখানে সারা বিশ্বের মানুষ তাকে নিয়ে গর্ব করছে, ডেকে নিয়ে কথা শুনছে সেখানে আমরাই, এই আমাদের প্রধানমন্ত্রীই তাকে সুদখোর বলে গালি দিচ্ছি।
গ্রামীন ব্যাংকের সুদের হার খুব বেশী। এই নিয়ে ড. ইউনূসের কথা খুব স্পষ্ট। তিনি বলছেন কেউ যদি সুদ কম নিতে পারে তবে করে দেখাক।
কমপিটিশন মার্কেটে অন্যরাও সুদের হার কমাতে বাধ্য হবে। ঋনের টাকা উদ্ধারে গ্রামীন ব্যাংকের কড়াকড়ি নিয়ে কথা হয়। কোন ব্যাংক ঋন ফেরত না পেলে গ্রাহককে ছেড়ে দেয়? আর গ্রামীনের ঋনের পরিমান এত অল্প হয় যে মামলা করার কথা নয়। ঋন আদায়ে কড়াকড়ি না থাকলে তা ফেরত পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। আর গ্রামীন ব্যাংক নিশ্চয়ই কারুকে জোড় করে ঋন দেয় না।
(এই প্যারাটুকু সম্পূর্নই আমার নিজস্ব মত। গ্রামীন ব্যাংকের কার্যক্রম আমার দেখা হয় নাই। )
হানসি ক্রনিয়েকে নিয়ে যখন ভারতীয় পুলিশ বলল সে বাজীকরের সাথে কাজ করে তখন আমরা দেখেছি সে দেশের মানুষ এবং ক্রিকেট বোর্ড তাকে কতটা সাপোর্ট দিয়েছে। আমাদের গ্রামে এক মানুষ ছিলেন। তিনি একজন বড় ব্যবসায়ী হলেন কিন্তু গ্রামের মানুষ তাকে এই সম্মানটা দিলেন না।
তিনি চলে গেলেন সিলেটে। দেশের তাত সেক্টরে তার অবস্থা আজ এমন যে তিনি না গেলে অনেক বাজারই জমে না। তাতীরা ভাল দাম পায় না। আজ যদি তিনি আমাদের গ্রামে থাকতেন তার কারনে আরও ১০ জন মানুষের উপকার হত। গ্রামের মানুষজন নিজেদের ভাগ্য নষ্ট করল।
আমাদের দেশের সম্মান নিয়ে অন্য একটি দেশের একটি সংস্থা রিপোর্ট করল আর আমরা তাই বিশ্বাস করে যা তা বললাম তা অবশ্যই নিজেদের জন্য দু:খজনক। ড. ইউনূস এখন দেশের সম্মান। তিনি যদি কিছু ভুলও করে থাকেন তা শুধরে নিয়ে তাকে নিষকল্ক রাখতে হবে। কারন ড. ইউনূসের সম্মান মানেই দেশের সম্মান।
এই লেখায় আমি ড. ইউনূস এর সাফাই গাইতে চাই নি।
তার সে প্রয়োজনও নেই আর আমার সে যোগ্যতাও নেই। আমি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে বলতে চেয়েছি। তার জন্য আমার শ্রদ্ধা জানাতে চেয়েছি। আমাদের প্রিয় ড. ইউনূসের পাশে নিশ্চয়ই দেশের মানুষেরা আছেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।