কুড়ি লাখ বছর বা তার চেয়েও বেশি আগে আদিম মানুষ গুহায় বাস করতো৷ শিকার করার পরে কী ভাবে মানুষ সেই খাবার খেতেন ? সেই সময় আমাদের পূর্বপুরুষরা সব্জি, ফলমুল, বাদাম, নানা রকম শেকড়বাকর এবং মাংস খেয়ে বেঁচে থাকতেন৷ আদি পৃথিবী ছিল ভীষন উত্তপ্ত। এটি ছিল এক প্রচন্ড উত্তপ্ত গোলক পিন্ড। প্রায় ১০ হাজার বছর আগে ছিল কৃষিকাজের একেবারে প্রাথমিক যুগ৷ ১ লক্ষ বছর আগে থেমে যাওয়া জনৈক আদিম মানবের প্রচেষ্টায় গড়ে উঠেছিল ভারতবর্ষের প্রথম জনপদ না হলেও শৈলাশ্রয় বা যাকে বলে রক-শেলটার । বর্তমান বাংলাদেশকে এখন আমরা যেমন দেখি- পাঁচ কি দশ হাজার বছর আগে সেই প্রাগৈতিহাসিক সময়ে বাংলার ভৌগোলিক অবস্থা ঠিক এ রকম ছিল না। থাকা সম্ভবও ছিল না।
তার কারণ, বাংলার অর্ধেক ভূখন্ডই তো হিমালয় থেকে উত্থিত হওয়া নদীগুলির পলি পড়ে পড়ে সৃষ্টি হয়েছে।
আদিম মানুষ আকাশের দিকে তাকিয়ে অসংখ্য আলোর বিন্দু দেখে বিস্মিত হয়ে রচনা করেছে তাদের মনগড়া কল্পকাহিনী। কিছু আলোর বিন্দুকে ঘুরতে দেখে তাদের নাম দিয়ছে প্লানেট বা ভ্রমনকারী। প্রথম রকেট ব্যবহার হয় চীন দেশে। ১২৩২ খৃস্টাব্দে মোঙ্গলদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে বন্দুকের বারুদ পুরে বানানো রকেট ব্যবহার করে চীনারা।
আদিম যুগের মানুষেরা এক গুহা থেকে আরেক গুহায় যাওয়ার সময় কখনোই যানবাহন ব্যবহার করত না। তারা হেঁটে হেঁটে, গায়ে হাওয়া লাগিয়ে যেত। আজ থেকে ৪০০০ বছর আগে বঙ্গোপসাগরের পাড় ছিল ঢাকার শ্যামলীর আদাবরের কাছে!বুনো যুগের বৈশিষ্ট্য হল আগুনের আবিস্কার, তীর ধনুক দিয়ে শিকার করা ও মৃৎশিল্পের ব্যবহার। বর্বর পর্যায়ে আদিম মানুষ পশুপালন করতে শেখে, কৃষিকাজও শুরু হয় এই পর্যায়েই। সেই সঙ্গে ধাতু শিল্পর ব্যবহারও জানে আদিম মানুষ ।
সভ্যতায় বর্ণমালা ও লেখনিই হয়ে ওঠে সমাজের মূল বৈশিষ্ট্য।
পৃথিবীর আদিমতম সম্পর্কটির নাম ভালোবাসা। মানুষের মন থেকেই ধর্মের জন্ম, ঈশ্বর নামক অদৃশ্য অলীক ব্যক্তিটির গর্ভপাত। তারপরও মানুষ তার অ-মানুষ স্তর থেকে মানুষের অবস্থায় বিবর্তিত হওয়ার কালে কেন বা কি করে ধার্মিক হয়ে উঠলো এবং আজ পর্যন্তই বা কেন ধর্মবিশ্বাসকে আগলে রেখেছে। তীর ধনুক আদিমযুগের মানুষের জীবন রক্ষার একমাত্র অবলম্বন বললে বোধ হয় ভুল হবে না।
ধারনা করা হয় যে, পাঁচ হাজার বছরেরও বেশি সময় পূর্বে তীরধনুকের প্রচলন ঘটেছিল। আদিমযুগের মানুষ বিভিন্ন গুহা, পাহাড়-পর্বত ও বনজঙ্গলে থাকতো। তাই বিভিন্ন হিংস্র প্রাণীদের হাত থেকে আত্মরক্ষার জন্য তাদেরকে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতে হতো। এই বাঁচার তাগিদেই মানুষ আবিস্কার করলো তীর ধনুক। মিশরের প্রাচীন অস্ত্রের তালিকায় ছিল এই তীর ধনুক।
গ্রীক পুরানে যে সব দেব-দেবীদে যেমন বন্যপ্রাণী ও মিকারের দেবী আর্টেমিসদের কথা আছে, তাদের অনেকেই তীরধনুক ব্যবহার করেন। ভারতবর্ষে দুই মহাকাব্য রামায়ন ও মহাভারতে তীর ধনুকের ব্যবহার লক্ষ্য করার মতো।
আদিম যুগে মানুষ শীত থেকে আত্মরক্ষার কোনো উপায় জানত না। কারণ উদোম শরীরে সারাদিন বনে বনে সংগ্রহে ঘুরে বেড়াত। প্রচণ্ড শীতে ঠাণ্ডা পাথরের গুহাভ্যন্তরে জড়ো হয়ে কোনোরকমে কষ্টের রাতগুলো কাটাত! বস্ত্র তৈরি তো দূরের কথা কোনো কিছু চাপা দিয়ে দীর্ঘ শীতের রাত কাটানোর মতো উপকরণও তাদের হাতের কাছে ছিল না।
এমনই অসহায়ভাবে বছরের পর বছর কাটানোর পর তারা পা দিল নতুন প্রস্তর যুগে। এবার তারা পাথর কেটে কেটে সুতীক্ষ্ন অস্ত্র তৈরি করতে শিখল। সদ্য তৈরি পাথরের অস্ত্র নিয়ে এবার বন্য পশুর পেছনে ছুটে বেড়াতে লাগল। আয়ত্ত করল পশুশিকার পদ্ধতি। মৃত পশুকে তারা এবার দুভাবে ব্যবহার করতে শিখল।
তাদের কাঁচা মাংসে উদরপূর্তি আর লোমশ চামড়ায় নিবারণ করত ঠাণ্ডা। প্রথমদিকে চামড়াকে কোনো রকমে গায়ে জড়িয়ে শীত মোকাবিলার চেষ্টা করত। তারপর পশুর চামড়াকে পোশাকের মতো করে নিল। এটি গায়ে জড়িয়ে শিকারের পেছনে অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া করতে তখন আর তেমন অসুবিধা হতো না। আরও সহজ উপায়ে তারা নলখাগড়া, শন এবং গাছের তন্তু দিয়ে পোশাক তৈরির পদ্ধতি আবিষ্কার করল।
পৃথিবীতে কত ভাষা আছে? তিন হাজার না তার চেয়ে বেশি? পৃথিবীর এই হাজার হাজার ভাষা আর তাদের অসংখ্য উপভাষাগুলোর উদ্ভব কি একটি আদিম ভাষা থেকে? ওইসব প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই। পৃথিবীর প্রাচীনতম ভাষা কোনগুলো, তাদের বয়স কত, কোন আদিম ভাষা কখন কোন অঞ্চলে কোন মানুষের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছিল? এসব প্রশ্নেরও সঠিক উত্তর আমরা দিতে পারব না, কারণ অনেক অনুসন্ধান করেও সব কথা জানা যায়নি। কত ভাষা বিলুপ্ত হয়ে গেছে, কে জানে? আর তার সঙ্গে সঙ্গে কত মানুষের কত চিন্তা, কত ভাবনা, কত অভিজ্ঞতা? সভ্যতার যেমন উত্থান আছে পতন আছে, ভাষারও হয়তো তেমনি। কিন্তু অনেক সভ্যতা, অনেক জাতি বিলুপ্ত হয়ে গেছে অথচ তাদের ভাষা ধ্বংস হয়ে যায়নি, আশ্চর্যজনকভাবে অনেক ধ্বংসপ্রাপ্ত সভ্যতার স্মৃতিকে বহন করে টিকে আছে কোনো কোনো ভাষা, তবে একটি ভাষাকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারলে একটি জাতিও ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।
ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম সম্রাজ্য হল মৌর্ষ সম্রজ্য।
চন্দ্রগুপ্ত মৌর্ষ এ সম্রাজ্যে প্রতিষ্ঠাতা এবং ভারতের প্রথম সম্রাট। বাংলাদেশে কখন মানুষের বসবাস শুরু হয়েছে তার সঠিকভাবে জানা যায়নি। তবে আর্যদের বাংলাদেশে আসার আগে অজয় নদের সভ্যতার কিছু নিদর্শন পাওয়া যায়। বাংলার আদিম অধিবাসীরা ছিলেন প্রাক-দ্রাবিড় গোষ্ঠীর লোক। বাংলার আদিম অধিবাসী ছিল অস্ট্রিক ভাষাভাষী জনগোষ্ঠী।
প্রাচীনকাল থেকেই কিন্তু মহাভারত মানুষের মুখে মুখে আসেনি। মহাভারতের ঘটনাটা আনুমানিক সারে তিন হাজার বছরের আগেরকার__ কৃষ্ণের সময়কার। মহাভারত ও রামায়নে তার উল্লেখ আছে, তা বাল্মীকি রামায়নের নয়, তৎকালীন প্রচলিত রামায়নের গল্প সমন্ধে যা মানুষের মুখে মুখে চলতো। বাল্মীকির রামায়নে রাম দেবী দুর্গার পুজা করেছেন এক'শ আটটা নীলকমল দিয়ে।
৩০ হাজার বছরেরও আগে থেকে কুকুর মানুষের সবচেয়ে সহচর হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে।
ভেড়া গরু বা ছাগলের মতো প্রাণীদের চেয়ে অনেক অনেক আগে থেকে কুকুর ছিল গৃহপালিত প্রাণী। প্রাচীনকালেও আমাদের পূর্বপুরুষরা নিজেদের রক্ষা ও সঙ্গী হিসেবে কুকুরকেই পছন্দ করতেন। কুকুরই ছিল তাদের নিত্যসঙ্গী। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।