আমি লেখক নই পাঠক ----- আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেছেন, “ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমার দেশ পত্রিকার অবস্থান অটুট থাকবে, আমি জেলে থাকি কিংবা জেলের বাইরে থাকি। ”
গতকাল শনিবার আমার দেশ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। একই সঙ্গে অন্যান্য গণমাধ্যমেরও তীব্র সমালোচনা করে তাদের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন তিনি।
তার কাছে শুক্রবার জামায়াত ও তাদের সহযোগী দলের কর্মীদের সাংবাদিকদের ওপর হামলার বিষয়ে তার প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয় বাংলানিউজের পক্ষ থেকে। তিনি বলেন, “এই হামলার তীব্র নিন্দা করি।
”
পরক্ষণেই তিনি বলেন, “যখন আমার দেশ জ্বালিয়ে দেওয়া হয়, নয়াদিগন্ত পুড়িয়ে দেওয়া হয় তখন বাংলানিউজ তা কি লিখেছে? নিজের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করুন। ”
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে মাহমুদুর রহমান বলেন, “আপনারা (সাংবাদিকরা) আমার এসব কথা অবিকৃতভাবে প্রচার করবেন কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কারণ যারা এসব টেলিভিশনের মালিক তারা আপনাদের স্বাধীনতা রাখেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। আমি ওইসব টেলিভিশনের মালিকদেরও চিনি। লুটেরাদের টাকায় যেসব টেলিভিশন চ্যানেল চলে তারাও মাহমুদুর রহমান সম্পর্কে বড় বড় কথা বলে।
লজ্জা-শরম কি সব চলে গেল নাকি?"
শহাবাগ আন্দোলন নিয়ে তিনি বলেন, “আমার পত্রিকায় বলা হয়েছিল, ফ্যাসিবাদের পদধ্বনি। ফ্যাসিবাদ আর ফ্যাসিবাদের পদধ্বনি এক জিনিস নয়। এই জিনিসটি আপনারা ধরতে পারেননি। এটি যে ফ্যাসিবাদের পদধ্বনি ছিল গত ১৯ দিনে তা প্রমাণিত হয়েছে। এরপরে তা আরো বেড়েছে।
পুলিশের উপস্থিতিতে বিভিন্ন পত্রিকায় আগুন দেওয়া হয়েছে। ”
“এটি নাকি গণতান্ত্রিক আন্দোলন? এ ধরনের আন্দোলনে প্রকাশ্যে খুনের হুমকি দেওয়া হয়। বাপ্পাদিত্য বসু আমাকে প্রকাশ্যে খুনের হুমকি দিয়েছেন। পুলিশের নাকের ডগায় খুনের হুমকি দেওয়া হয়েছে। দেশে যদি আইনের শাসন থাকতো তাহলে মামলা হওয়ার কথা ছিল।
এভাবে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে উস্কানির জন্য সরকারই দায়ী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দায়ী। ”
তিনি বলেন, “দুটি নিবন্ধ লেখার জন্য সাত মাস জেল খেটেছি। অথচ ১৯ দিন ধরে একটি বিচারাধীন মামলা নিয়ে ‘ফাঁসি ফাঁসি’ স্লোগান দিয়েছে। তারা কি আদালতের উর্ধ্বে? তাদের ওপর কি রাষ্ট্রের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই? আপনারা (সাংবাদিকরা) কি শুধু গণজাগরণ দেখেছেন? আসলে মিডিয়া কী দেখাতে চেয়েছে? তবে আমার ওপর কেন আপনাদের এত আক্রোশ?” " গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার পক্ষে কথা বলছেন ? আপনারা কি ভাবছেন এমন ফ্যাসিবাদী দিন চলতেই থাকবে, এর পরিবর্তন কি হবে না?”
“আন্দোলনে সংহতি প্রকাশকারী ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল তো শাহবাগ আন্দোলনের একজন বড় নেতা। ”
জাফর ইকবালের বড় ভাই হুমায়ূন আহমেদের একটি বইয়ের ৩১১ ও ৩১২ পাতায় লেখা কয়েকটি লাইন হুবহু উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, “আমার নানাজান শান্তি কমিটির সভাপতি ছিলেন, তাকে মরতে হয় মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে।
তার মতো অসাধারণ মানুষ মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে মারা গেলেন। এই দুঃখ আমি ভুলতে পারিনি। তাই আমি বলবো, যারা কথা বলেন, তারা আয়নার সামনে দাঁড়ান। দেশের সবাইকে নির্বোধ ভাবা একটি বড় বোকামি। শাহবাগ আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদ উস্কে দেওয়া হচ্ছে।
”
জনাব মাহমুদুর রহমানের সততা ও সাহসিকতার জন্য ধন্যবাদ জানাই। বর্তমানে হলুদ সাংবাদিকতার যুগে সততা, সাহসিকতা ও নিষ্ঠার সহিত বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশের যে দায়িত্ব তিনি পালন করছেন তা সাংবাদিক সমাজের জন্য অনুকরনীয় হয়ে থাকবে। দেশের সাধারন মানুষ তার প্রতি আস্থা রাখছে, যার প্রমান চকচকে প্রিন্টের নামিদামি সুশীল সম্পাদকদের পত্রিকা যেখানে সর্বোচ্চ ৮ টাকা, সেখানে মেড় মেড়ে সাধারন প্রিন্টের "আমার দেশ"- এর দাম ১২ টাকা। দাম বেশী হওয়ার পরও বর্তমানে "আমার দেশে" -এর কাটতি অনেক বেড়ে গেছে, যা পত্রিকা বিক্রেতাদের কাছ থেকে জানা যায়। এদেশের মানুষ সততার মূল্য দিতে ভুল করেনা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।