আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যৌনতা (প্রথম পর্ব)

একখান চাবি মাইরা দিচে ছাইরা জনম ভইরা চলতে আছে.।

এই লেখা মানবিক যৌনতাকে ঘিরে আজকাল যে যে বিতর্কগুলি গড়ে উঠেছে, গজিয়ে উঠেছে তার একটি বিশেষ পরিসরকে নিয়ে। মানুষের বিভিন্নরকম যৌন আচরণ কতটা প্রাকৃতিক (পড়ুন স্বাভাবিক) আর কতটা অ-প্রাকৃতিক, তা নিয়ে। এই লেখায় আমরা মানবিক যৌনতাকে বহুবচন হিসেবে ধরে নিয়েছি, মানুষের যৌন আচরণের বহুত্বকে (সমকামী, বিসমকামী, রূপান্তরকামী ইত্যাদি) সামাজিক বাস্তবতা হিসেবে স্বীকার করে নিয়েছি। এই স্বত:সিদ্ধ থেকে আমরা দেখতে চাইব প্রকৃতি কী ভাবে যৌনতায়, যৌনতার আলোচনায় ঢুকে পড়ে।

তর্কটা মূলত ঘুরপাক খায় সমকামিতাকে ঘিরে - একদল বলেন যে বিসমকামিতা প্রাকৃতিক, তাই স্বাভাবিক; অপরপক্ষ বলেন যে প্রকৃতিতে সমকামিতার উদাহরণও অনেক, তাই সমকামিতাও প্রাকৃতিক। প্রথম পক্ষে যেমন "গোঁড়া' কোরান-বাইবেল-মনুবাদীরা আছেন, তেমনি আছে "উদার' বিজ্ঞান, যেমন "ফরেন্সিক মেডিসিন' বা "আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েসন'। রাজনৈতিক পরিসরে "ফায়ার' সিনেমা বন্ধ করা নিয়ে অবশ্য "গোঁড়া'-দের বিরূদ্ধতা করেছেন অনেকেই (আমরাও করেছি) কিন্তু শতাব্দী জুড়ে ডাক্তারি বিজ্ঞানে সমকামিতার "অপ্রাকৃতিক যৌন-অপরাধ'-এর তত্তÄআয়ন হয়ে চলা নিয়ে বিশেষ আলোচনা আমরা শুনি নি। অপরপক্ষেও আছেন অনেকেই - বৈজ্ঞানিক, সমাজতাত্তিÄক থেকে রাজনৈতিক কর্মীরা। দুই পক্ষের যুক্তি থেকে অবশ্য একটা সাধারণ বিষয় উঠে আসে, একটা স্বত:সিদ্ধ উঠে আসে - যা কিছু প্রাকৃতিক, তা-ই স্বাভাবিক এবং তাই যেন বৈধ।

অথবা একটু অন্যভাবে বললে, যা কিছু প্রাকৃতিক "নিয়ম' মাফিক চলে, তাই বৈধ। ফলে এই তর্কে আরো একটি স্বত:সিদ্ধ এসে গেল - প্রকৃতিতে "নিয়ম' আছে আর মানুষের সমাজ যেন সেই নিয়ম মেনে চললে বৈধতা পাবে। এই যুক্তিতে মানুষের সামাজিক গঠনে আর ব্যবহারে যদি প্রাকৃতিক "নিয়ম'গুলি ঠিকঠাক প্রয়োগ করা যায়, তা হলে তৈরি হবে এক সুস্থ, স্বাভাবিক, আদর্শ সমাজ। এই লেখায় আমরা নির্দিষ্টভাবে দুটি প্রসঙ্গকে আলোচনায় আনছি, প্রশ্ন করছি। প্রথম, প্রকৃতির কোন ধারণায় মানুষের যৌনতার বৈধতার গল্প বলা হয়; দ্বিতীয়, মানুষ আর পশুর যৌন আচরণকে একরকম, এক করে দেখার প্রবণতা থেকে কিভাবে মানুষের যৌনতার বৈধতার গল্প তৈরি হয়।

চলবে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।