ঈদের আগে আগে ঈদ সংখ্যা লেখার একটা হিড়িক পড়ে যায় আমাদের বুদ্ধিজীবী মহলে, কানাঘুষোয় শোনা যায় অনেক সম্মানিত জ্ঞানজীবী নাকি রমজান মাস পুরোটাই মুখরোচক লেখলেখি করেই (ঈদ সংখ্যার জন্য) তাদের সংযম পালন করেছেন। তবে যে কোন দৃষ্টিকোন থেকে ব্যাপারটার খূব একটা খারাপ ব্যাখ্যা করা যায় না, আর যাই হোক লেখালেখিতো জ্ঞানী হওয়ারই অন্যতম ধাপ//
লেখালেখিতে জ্ঞানীদের দাপট সবসময় ছিল এবং থাকবে কিন্তু আমাদের মত অজ্ঞানীরা যখন ওনাদের ভাত মারার অনৈতিক (তথা কথিত!!) চেষ্টা করে তখন সেটা তথ্যপ্রযুক্তি আইনে অপরাধ হলেও হতে পারে!! অপরাধের গুষ্টকিলায় জাতের দুঃসাহস দেখিয়ে বিবেক এবং বিশ্বাসের থলে থেকে দুইএকটা সত্যকথন এখনো আমাদের মত আবাল ছেলেরা প্রতিনিয়ত বলেই যাচ্ছে কারন আইনটাতো মানুষেরই বানানো; ফাক ফোকর সদা উপস্থিত, হা হা হা!!
বিক্ষিপ্তভাবে কয়েকটা বিষয় নিয়ে আলোচনা করে তার একটা সংক্ষিপ্ত এবং আবোল তাবোল উপসংহার টানা আবালদের লেখালেখির একটা কমন চরিত্র। এই উপাদানেও এর ব্যাথ্যয় হবেনা এই ওয়াদা আমি আপনাদের করতে পারি তাই জ্ঞানজীবী পাঠকমহল এখান থেকে দ্রুত প্রস্থান করলে লেখক একটু বুকে পানি পাবে।
“এলো রমজানের ওই রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ”- নজরুলের এই সুর লহরিতে রমজান ও ঈদের ম্যকমোহন লাইনটা পরিষ্কার না হলেও আকাশের বাকা চাঁদ দেখলেই আমরা ঈদ পালন করি এই ব্যাপারে কোন দ্বিমত নেই। এখন কথাটা হোল পৃথিবীতে চাঁদ কি দুইবার উঠে? যে সৌদি আরবে ঈদ হয়ে যাওয়ার পর তিন ঘন্টা পিছিয়ে আছি দোহায় দিয়ে ২৪ ঘন্টা পরে আমরা ঈদ পালন করব।
এখানে খোড়া যুক্তিটা থাকে আমারা তো নিজ চোখে চাঁদ দেখি নি। তাইলে সারা দেশের কোথাও চাঁদ দেখা গেলে আমাদের সম্মানিত ইসলামী ফাউন্ডেশন ও ধর্ম মন্ত্রনালয়ের কর্তারা তার পরদিন ঈদ এই ঘোষনাটা দেয় কিভাবে, কই তখনতো আমরা নিজ চোখে চাঁদ না দেখেয় ঈদ পালন করি। এই ক্ষেত্রে আরো উদ্ভট যুক্তি এসে হাজির হয় যে আমরা বাংলাদেশি আর ওটাতো আরব দেশ। পবিত্র কোরান বা হাদিসে কোথাও বাংলাদেশি মুসলিম বা আরবীয় মুসলিম আলাদা করা আছে বলে আমার জানা নেই। বিভিন্ন হাদিসের রেওয়াতে আছে আল্লাহর রাসুল(সাঃ) নিজেই কোথাও চাঁদ দেখা গেছে কিনা সেটা আগে নিশ্চিত হতেন তারপর রোজা রাখতেন এবং ঈদ পালন করতেন।
এখানে বিখ্যাত হাদিসের কিয়দাংশ দেয়া হল_
“……তোমরা চাঁদ দেখে রোজা রাখ এবং চাঁদ দেখে রোজা ভাংগ…”
এই হাদিসের ব্যাপারে আমরা সামান্যতম দ্বিমত ও পোষন করি না যেখানে আল্লাহর রাসুল(সাঃ)এর জীবনী থেকেই এই ব্যাপারটা পরিস্কার যে সমগ্র মুসলিম উম্মাহ একসাথে ঈদ পালন এবং রোজা রাখবে সেখানে আমরা ভ্রান্ত জাতীয়তাবাদের দোহায় দিয়ে এতবড় একটা হারাম কাজকে প্রতিনিয়ত পালন করে যাচ্ছি।
এক্ষেত্রে আর একটা বিষয় হল ঈদের দিন কিন্তু রোযা রাখা হারাম, তো সেক্ষেত্রে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ঈদ হয়ে যাচ্ছে আর আমরা ঈদের দিন রোজা রাখছি!!! ব্যাপারটা নিয়ে আমি সম্মানিত পাঠক মহলের কাছে আরো একটু গভীরভাবে চিন্তা করার অনুরোধ রাখলাম আর আমাকে দয়া করে “খারেজী” বলে গালি দিবেন না কারন লেখক মাত্রই চিন্তার খোরাক জোগায়।
এবার একটু মধ্যপ্রাচ্যের দিকে আসি, মিসরে কিছুদিন আগের ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে অনেকের আক্ষেপ রয়েছে, বিশেষত বাংলাদেশের ইসলাম পন্থি রাজনীতির সমর্থকরা একটু বেশিই হতাশ হয়েছেন। হওয়াটাই স্বভাবিক কারন যে বিপুল ম্যান্ডেট (সো কল্ড!!) নিয়ে মুরসি ও তার দল ইখ ওয়ান (মুসলিম ব্রাদারহুড) ক্ষমতায় এলো এক বছরের মাথায় সেনবাহিনীর এমন বেঈমানী চোখে পড়ার মতই ঘটনা।
বিষয়টা খুবই সিম্পল, মুরসির সিরিয়ার বিদ্রোহিদের প্রতি সমর্থনের ইঙ্গিত আর মধ্যপ্রাচ্যের আমেরিকান সম্রাজ্যের এমন ক্রান্তিকালে মুসলিম ব্রাদারহুদের তথাকথিত নিরপেক্ষ নীতির কারনে আমারিকার কাছে নতুন এক বন্ধুর বড়ই প্রয়োজন।
আর বন্ধু হিসেবে আমেরিকা মুসলিম বিশ্বের সেনাবাহিনীর উপর অনেক বেশি নির্ভরশীল সেটা আমদের মইন ইউ হোক বা পাকিস্থানের পারভেজ মোশাররফ হোক। এখনো যাদের কাছে ব্যাপারটা অস্পষ্ট তারা সিনাই উপত্যকায় তথাকথিত জংগি দমনে মিশর সেনা বাহিনীর বর্তমান অভিযানের দিকে থাকালেই আমেরিকার প্রচ্ছন্ন বন্ধুতা আরো পরিস্কার হবে।
প্রকৃত বন্ধু পাওয়া বড়ই মুশকিল সেজন্যই মনে হয় আমরা জাতীয়ভাবে এমন সব বন্ধু খুজি যাদের উপস্থিতি শত্রুর অভাবটাই অনেকাংশে কমিয়ে দেয়। হ্যা পাঠক, পাশের বন্ধুদেশের কথা বলছি, ঈদের একদিন আগে কাশ্মীর সীমান্তে বেশ কয়েকজন ভারতীয় জোয়ান পাকিস্থানী কনভয়ের হাতে নিহত হয়েছে, তাদের মতে হিসাবটা প্রায় ৫ জনের আর পাকিস্থানী কতৃপক্ষ যথারীতি সেটাকে অস্বীকার করেছে। এটার ভালমন্দ কোনটার হিসাব আমাদের করার দরকার আছে কিনা জানি না তবে এই ঘটনার পর ভারতীয় নিউজ চ্যানেল গুলো বিশেষত NDTV‘র হুঙ্কার দেখে দেখে ভাবছি বিএসএফ তো অনেক বাংলাদেশিকে প্রতিনিয়ত হত্যা করছে কিন্তু আমাদের দেশপ্রেমিক নিউজ চ্যানেল গুলোর এমন থলের বিড়াল হওয়ার নীতি সত্যিই সেলুকাস!!এই বিতর্কটা আরো বেশি যোক্তিক লাগে যখন ভারতীয় রাজ্যসভায় বিরোধীদলের পাকিস্থানের বিরুদ্ধে তুমুল হুঙ্কার আর বিতর্ক দেখি।
এসব দেখে আজও একটা প্রশ্ন জাগে আমাদের রাজনৈতিক দল, মিডিয়া বা বুদ্ধিজীবি আসলে কতটাই আমাদের ???
তবে জানে সে পেহলে (যাওয়ার আগে) সবার জন্য একটা পাইকারি আক্ষেপ____
এই বার ঈদে, এই বার ঈদে হু হু, এই বার ঈদে
কারা কারা মোরগ পোলাও খান নি? না শুধু মোরগ পোলাও নয়, “শাহী হাসিনা মোরগ পোলাও“
যদি না খেয়ে থাকেন তাইলে মনে করেন আপনার দেশপ্রেমিক হতে এখনো অনেক দেরি!!!
কি! মীর স্টাইলের আক্ষেপটা কেমন লাগল, জানি তো আমারাও নকল করতে জানি হুঁ হুঁ হুঁ হুঁ হুঁ হুঁ
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।