শেষ পর্যন্ত সত্যটা প্রকাশ্যেই স্বীকার করে নিলেন মোহাম্মদ আসিফ। স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটানো পাকিস্তানি পেসার কাল করাচি প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেই স্বীকার করেছেন ২০১০ সালে লর্ডস টেস্টে স্পট ফিক্সিংয়ে নিজের ভূমিকার কথা, চেয়েছেন ক্ষমাও। এর আগে গত মাসের শেষ দিকে লাহোরে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা সুবহান আহমেদের সঙ্গে দেখা করে দোষ স্বীকার করেছিলেন। ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআই সে সময় পিসিবির নির্ভরযোগ্য সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছিল প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার সাহস করে উঠতে পারছেন না এই পেসার।
আসিফের এই স্বীকারোক্তিতেই পূর্ণ হলো বৃত্ত।
কলঙ্কিত-ত্রয়ীর সবাই অপরাধ স্বীকার করে নিলেন। মোহাম্মদ আমির স্বীকার করেছেন অনেক আগেই। তবে অভিযোগ ওঠার পর থেকেই অস্বীকার করে আসছিলেন বাট ও আসিফ, বলছিলেন সব ‘ষড়যন্ত্র’। আইসিসির নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে সুইজারল্যান্ডের কোর্ট অব আরবিট্রেশন ফর স্পোর্টসে আপিলও করেছিলেন এই দুজন। আপিলে অবশ্য জিততে পারেননি।
পরে ২৮ জুন প্রকাশ্যে ক্ষমা চান সালমান বাট।
ক্ষমা চাওয়ার জন্য পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসকেই বেছে নিয়েছেন আসিফ। সেখানেই শপথ করেছেন যে ক্ষতি তিনি করেছেন সেটির ক্ষতিপূরণ করতে চান, ‘ভুল করে আমি কম ভুগিনি। এখন আমার দেশের স্বাধীনতা দিবসে আমি প্রতিজ্ঞা করছি যখন আমার নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবে আমি চেষ্টা করব যে ক্ষতি আমি করেছি সেটা পূরণ করার। আমার পরিবারও ভুগেছে তাই আমি চাচ্ছি নতুন জীবন শুরু করতে।
আশা করছি, খেলাটাকে যাঁরা ভালোবাসেন তাঁরা আমাকে গ্রহণ করবেন। ’
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই আইসিসির ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে ক্ষমা চান আসিফ, ‘আমি আমার কুকর্মের জন্য ক্ষমা চাচ্ছি। এটা আমার প্রিয় দেশের সম্মানহানি ঘটিয়েছে। আমি ক্ষমা চাইছি পাকিস্তান ও বিশ্বের কোটি কোটি ভক্তের কাছে। আমি যখনই আমার ক্যারিয়ারটাকে পেছন ফিরে দেখি খুব লজ্জিত হই।
’
অন্য খেলোয়াড়দের দুর্নীতি থেকে দূরে থাকার অনুরোধ করে আইসিসিকে সাহায্য করারও অঙ্গীকার করেছেন আসিফ, ‘যাঁরা এই ফাঁদে পা দিতে চান না সেই খেলোয়াড়দের আমি সাহায্য করতে প্রস্তুত। আমি আইসিসি, এর দুর্নীতিবিরোধী ও নিরাপত্তা ইউনিট (আকসু) ও পিসিবিকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়েও সাহায্য করব। ’
আইসিসির প্রধান নির্বাহী ডেভ রিচার্ডসন গত এপ্রিলেই আসিফ ও বাটকে অপরাধ স্বীকার করে আকসুকে সহযোগিতা করতে পরামর্শ দিয়েছিলেন।
পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা। সঙ্গে দুই বছরের স্থগিত নিষেধাজ্ঞা।
অপরাধ স্বীকার করে নেওয়ায় ও আইসিসির সব শর্ত মেনে চললে স্থগিত নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে না। তবে শুধু পাঁচ বছর ধরলেও নিষেধাজ্ঞা শেষ হবে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে। তখন আসিফের বয়স হবে ৩৩। পাঁচ বছর খেলার মধ্যে না থেকে মরচে ধরা শরীরে আসিফ কতটা কী করতে পারবেন সেটা ভাবনার বিষয়। আসিফও বোঝেন সেটা।
আর বুঝতে পারছেন বলেই আইসিসির কাছে একটা আবদার করেছেন, ‘নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর দেশের হয়ে খেলার মতো ফিট থাকার জন্য আমি আইসিসিকে অনুরোধ করছি তারা যেন আমাকে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট খেলার অনুমতি দেয়। ’ এএফপি, ক্রিকইনফো। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।