দুই
- কি খবর,গুসি? আমি বললাম।
আমার গলা শুনে হয়তো বুঝতে পারবেনা কেউ, কিন্তু আমার নিজেরই মনে হচ্ছিল আমি যেন ঠিক প্রানবন্ত নই। অবশ্য আমার সামনে যে আছে সে যে কাউকে অসার করে দেয়ার জন্য যথেষ্ট। আমি বলতে চাচ্ছি, এই ফিঙ্ক-নটলটা, যতোটা আমার মনে পড়ে, যাকে কোন শনিবারের সান্ধ্য সভায় যোগ দিতে বললে সে গাছের পাতার মতো কাপতো। আর এখন এই মুহুর্তে সে তৈরি হয়ে আছে এমন এক উৎসবে যোগ দেয়ার জন্য যেখানে শুধু সাহসী লোকেরাই সাধারনত যায়।
-ওহ, হুল্লো, বারটি
- তোমার সাথে অনেক দিন দেখা নেই, কিছু খাবে?
- থাঙ্কস, কিন্তু এখন কিছু খাবো না, আমি এখনি বেরুচ্ছিলাম্,জ়ীভসকে জিজ্ঞেস করতে এসেছিলাম আমাকে কেমন দেখাচ্ছে। আমাকে কেমন দেখাচ্ছে, বারটি?
ঊত্তরটা হবে একেবারে “আস্ত বেকুব” এর মতো, কিন্তু আমাদের ঊষ্টারদের নিজস্ব ধরন আছে আর গৃহকর্তা হিসেবে করনীয় সম্পর্কে ভালো জ্ঞনও আছে। আমরা আমাদের নিজের ছাদের নিচে বসে মেহমানকে বলতে পারিনা তুমি আমার দৃষ্টিশক্তির প্রতি হুমকিস্বরুপ। আমি তাই প্রস্নটা এড়িয়ে গেলাম।
-আমি শুনলাম তুমি লন্ডনে আছো? আমি বললাম উদ্দেশ্যহীনভাবে।
- এই তো, আছি।
-অনেক বছর পর এলে।
- হ্যা
- আর এখন তুমি নৈশকালীন ফুর্তির জন্য বের হচ্ছো
সে শরীর দোলালো মনে হলো,
-ফুর্তি।
- ওহ, তুমি নিশ্চয়ই এই মজার জন্য অপেক্ষা করে আছো?
- ঠিক তা না, সে বললো ভোতা স্বরে।
- যা হোক, অনেক কথা বললাম , নৈশকালীন মজা শুরু হবে এগারোটার দিকে, আমি ক্যাবটা নিচে দাঁড় করিয়ে রেখেছি...।
জীভস দেখেতো ওটা এখনো আছে কিনা?
- খুব ভালো, স্যার।
দরজাটা বন্ধ হওয়ার সাথে সাথে এক অদ্ভুত নীরবতা নেমে এলো। গুসি আয়নায় নিজেকে দেখছিল আর আমি আমার জন্য একটা ড্রিঙ্কস বানালাম। শেষতক চিন্তা করলাম গুসিকে বলেই ফেলি আমি ওর ব্যাপারে সবই জানি। হয়তো এতে সে তার মনের ব্যথা আমার মতো এক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সহৃদয় আত্মার সাথে খুলে বলতে পারবে।
আমি লক্ষ্য করেছি,এ রকম ক্ষেত্রে তারা যা চায় তা হচ্ছে তাদের কথা শোনার মতো কান।
-গুসি, বুড়ো খোকা, আমি বললাম, আমি তোমার ব্যাপারে সবই শুনেছি।
-এহ?
- তোমার ঐ ছোট সমস্যার কথা। জীভস আমাকে সবই বলেছে।
সে কেমন বাকরুদ্ধ হয়ে গেল।
-আশা করি জীভস সকলকেই এই কথা বলে বেড়াচ্ছে না। এটা গোপনীয় থাকার কথা।
আমি তার এই উদ্ধত স্বরকে প্রশ্রয় দিতে পারিনা।
-গৃহকর্তাকে কিছু জানানো মানে সকলকে বলে বেড়ানো নয়, আমি বললাম, একটু ভৎর্সনার সুরে, “ যাই হোক, এটাই সত্যি। আমি সব জানি।
আর আমিও কিছু বলতে চাই, আমি বললাম, অবশ্যই আলোচ্য নারী নিয়ে আমার নিজেরো যে একটু ভয় আর সঙ্কোচ ছিল সেটা বাদ দিয়ে “মেডেলিন বাসেট খুব চমৎকার একটা মেয়ে। তোমার জন্য একবারে সঠিক সিদ্ধান্ত । ”
-তুমি তাকে চেনোনা?
- অবশ্যই আমি তাকে চিনি। আমি চিন্তা করছি তুমি তার সংস্পর্শে কিভাবে এলে? কোথায় দেখা হয়েছিল তোমাদের?
- লিঙ্কনশায়ারে আমার বাড়ির সামনেই কোথাও বেড়াতে গিয়েছিল। এটা গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহের কথা।
-আচ্ছা, তারপরেও আমি যতদুর জানি তুমি প্রতিবেশীর বাড়িতে কখনই যাওনা।
- হ্যা, সে কুকুর নিয়ে হাঁটতে বের হয়েছিল তখন আমাদের দেখা হয়। কুকুরটার পায়ে কাঁটা বিঁধেছিল আর সে যখন কাঁটাটা তুলতে গিয়েছিল তখন সেটা তাকে আঁচড় দেয়। কাজেই আমাকে তখন যেতেই হয়েছিল।
- তুমি কাঁটাটা বের করেছিলে?
- হ্যা।
- আর প্রথম দেখাতেই প্রেমে পড়ে গিয়েছিলে?
-হ্যা।
-আচ্ছা, একটু থামো, এরকম একটা সুযোগ পাওয়ার পরও তুমি তখনই সেটা ব্যবহার করলেনা কেন?
- আমার সাহস হয়নি।
-তারপর কি হলো?
- আমরা কিছুক্ষন কথা বললাম।
- কি নিয়ে?
-পক্ষি সংক্রান্ত ব্যাপার ছিল।
-পাখী? কি পক্ষী?
-পাখী যেগুলো আশেপাশে উড়ছিল এবং প্রকৃতি নিয়ে।
মেয়েটা বলল সে লন্ডনে যাচ্ছে আমি যদি কখনও যাই তো তার সাথে যেন দেখা করি।
- তারপরও তুমি ওর হাত ধরে একটুও চাপ দাওনি?
- অবশ্যই না।
মনে হচ্ছে এই ব্যাপারে আর তেমন কিছু শোনার বা বলার নেই। প্লেটে করে একটা জিনিস পাওয়ার পরও যে তার সদ্বব্যবহার করতে পারেনা তাকে খোরগোস ছাড়া আর কিছু বলার ভাষা নেই আমার। ওর কেসটায় তেমন আশার কিছু নেই।
তবু, আমি নিজেকে মনে করিয়ে দিলাম এই গাধাটা আর আমি একই স্কুলে পড়েছিলাম। সবারই তার স্কুল বন্ধুর জন্য কিছু না কিছু করা উচিত।
- আচ্ছা, আমি বললাম, “ আমাদের করনীয় সম্পর্কে ভাবা দরকার। অবস্থা যেকোন ভাবে পরিবর্তন হতে পারে। তুমি জেনে খুশি হতে পারো তোমার এই উদ্যোগের সাথে আমি আছি।
বাট্রাম উষ্টারকে তুমি তোমার পাশে পেয়েছ, গুসি। ”
- ধন্যবাদ তোমাকে, তবে জীভসের থাকাটা অনেক গুরুতত্বপুর্ণ।
আমি স্বীকার করতে দ্বিধা করবো না যে আমি একটু অবাক হয়েছি। আমি ধারনা করছি সে খারাপ উদ্দেশ্যে কথাটা বলেনি, , কিন্তু আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি এই সরাসরি কথায়ও আমি মোটেও বিরক্ত হইনি। মানুষ প্রায়ই আমাকে এভাবে বিরক্ত করার চেষ্টা করে।
মানে বলতে চাচ্ছি, তাদের মতামত হচ্ছে বাট্রাম ঊষ্টার আসলে কিছুই না, এই বাড়িতে মাথাভর্তি বুদ্ধিসম্পন্ন লোক একজনই আছে, সে হচ্ছে জীভস।
ব্যাপারটা পীড়াদায়ক।
এখনও ব্যাপারটা আমাকে একটু কষ্ট দিল, এমনিতেই জীভসের উপর আমি একটু বিরক্ত। মেস জ্যাকেটের বিষয়টা নিয়ে সত্যি আমি ওকে বাধ্য করেছি আমার ব্যাক্তিত্বের কাছে মাথানত করতে, কিন্তু একই সাত্থে এই বিষয়টা নিয়ে সে কেন মাথা ঘামালো সেটাও ভাবছি।
-তো সে এই ব্যাপারে কি করছে? আমি জিজ্ঞেস করলাম কঠিনভাবে।
- সে অনেক মাথা ঘামাচ্ছে আমার এই সমস্যা নিয়ে।
-আচ্ছা, মাথা ঘামাচ্ছে?
- ওর পরামর্শেই আমি আজ রাতের নাচের অনুষ্ঠানে যাচ্ছি।
-কেন?
-মিস বাসেটের ওখানে থাকার কথা। আসলে বলা যায় মিস বাসেটই আমাকে নিমন্ত্রনপত্র পাঠিয়েছে আর জীভস বলল...
- তো পিয়েরো (মুখে সাদা রঙ মাখা আল-খাল্লা পড়া ভাঁড়বিশেষ) রুপে নয় কেন? আমি বললাম, প্রশ্নটা আমার মাথায় আগেও এসেছিল। ‘পুরানো রীতি ভাঙ্গার কি দরকার ছিল? ’
- জীভস আমাকে মেফিস্তফেলিস (ফাউষ্টের কাহিনীর শয়তান) সাজেই যেতে বলল।
আমি তাকালাম।
-আচ্ছা, তাই বলেছে? এই বিশেষ পোষাকের কথাই বলেছে?
-হ্যা।
- হা!!
-এহ?
- কিছু না। শুধু হা!!
আপনাদের বলছি কেন আমি বলেছি “হা!” এখানে জীভস আমার সাথে পরিবেশ ভারী করছে যখন আমি একবারে খাটি সাদা মেস জ্যাকেট পড়ছি, একই সাথে সে গুসি ফিঙ্ক-নটলকে প্ররোচনা দিচ্ছে নাচের অনুষ্ঠানে সং সেজে যাবার জন্য। দুঃখজনক, তাই না?
-পিয়েরো হলে কি সমস্যা?
- পিয়েরোর ক্ষেত্রে জীভসের কোন সমস্যা নেই, কিন্তু আমার বেলায় ওর মনে হয়েছে পিয়েরো হওয়াটা যথেষ্ট নয়।
- ঠিক বুঝলাম না।
- তার মতে পিয়েরো হয়তো চোখের শান্তি দেবে কিন্তু মনোযোগ আকর্ষনের জন্য মেফিস্টোফেলিস সাজা ভালো
- আমি এখনও বুঝলাম না।
- সে বলেছে এটা একটা মনস্তাত্বিক ব্যাপার।
একসময় ছিল যখন এরকম একটি কথা আমাকে পাগল করে দিত। কিন্তু জীভসের সাথে অনেক দিন থাকার ফলে উষ্টারের শব্দ ভান্ডারও অনেক সম্পদশালী হয়েছে।
ব্যাক্তিগত মনস্তত্বের ব্যাপারে জীভস এক তিমির মতো জ্ঞআন রাখে আর এইসব বিষয়ে আমি ওকে অন্ধের মতো অনুসরন করি।
-ওহ, মনস্তত্ব?
- হ্যা, জীভস পোষাকের মানসিক প্রভাবে দারুন বিস্বাস করে। তার ধারনা এই ধারালো সাজে আমাকে খুব আত্মবিস্বাসী লাগবে। ওর প্রথম পছন্দ ছিল জলদস্যু সুরদারের পোষাক। কিন্তু ও রকম জুতো আমি কোথাও পাইনি।
ওর কথায় যুক্তি আছে মনে হলো।
-এখন তুমি আত্মবিস্বাসী?
-বারটি, বুড়ো খোকা, একবারে সত্যি বলতে গেলে বলতে হবে, না।
ওর জন্য আমার বেশ মায়া হলো। যাই হোক, গত কিছু বছরে আমাদের যোগাযোগ কম ছিল, কিন্তু ওর সাথে ছোট বেলায় কত কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি করেছি।
-গুসি, আমি বললাম, ‘এই বুড়ো খোকার পরামর্শ শোন, ঐ অনুষ্ঠানের এক মাইলের মধেও যেওনা।
- কিন্তু তাকে দেখার এটাই আমার শেষ সুযোগ, আগামীকালই সে শহরের বাইরে চলে যাবে। এছাড়াও তুমি জানোনা।
- কি জানি না?
- তুমি কি নিশ্চিত জ়ীভসের এই ধারনা কাজ করবেনা। এখন আমার মধ্যে খুব ভয় কাজ করছে, কিন্তু আজব আজব পোষাক পড়া অনেক লোকের মাঝে আমার এই বেশ কাজ করতেও তো পারে। ছোটবেলায় ক্রিসমাসের অনুষ্ঠানে এরকম হয়েছিলে একবার, সবাই আমাকে খোরগোসের পোষাকে সাজিয়েছিল আর আমি খুব লজ্জা পাচ্ছিলাম।
কিন্তু যখন ঐ অনুষ্ঠানে গেলাম তখন দেখলাম বাইরের ছেলে মেয়েরা আরো আজে বাজে পোষাক পড়েছে। আমার তখন খুব ভালো লেগেছিল। তো বলতে চাচ্ছি, কেউ বলতে পারেনা কিসে কি হতে পারে।
আমি কথাটার ওজন করলাম, ফাঁপা কথা, স্বীকার করতেই হবে।
-জীভসের প্ল্যানটা পরিষ্কার।
মেফিস্টোফেলিসের মতো একটা ধারালো সাজে আমি দুর্দান্ত একটা কিছু করেও ফেলতে পারি। রঙ অনেক কিছুই বদলে দিতে পারে। মিলনকালীন সময়ে পুরুষ নিওটগুলো দারুন রঙ ধারন করে আর এটা ওর কাজেও আসে।
- কিন্তু তুমি তো পুরুষ নিওট নও।
- ওহ, যদি হতাম।
বারটি, তুমি কি জানো কিভাবে একটা পুরুষ নিওট প্রস্তাব করে? সে তার নারী সঙ্গীর সামনে দাঁড়ায় আর লেজ নাড়াতে থাকে শরীরটা বাঁকা করে। আমি পুরুষ নিওট হলে কখনই আমার সমস্যা হতোনা।
- কিন্তু তুমি যদি পুরুষ নিওট হও, তাহলে মিস মেডেলিন বাসেট তোমার দিকে লক্ষই করতোনা। মানে ভালোবাসার চোখে তো নয়ই।
- সে করতো, কেননা সে হতো নারী নিওট।
- কিন্তু সে তো নারী নিওট নয়।
- কিন্তু ধরো সে তাই।
- সে যদি তাই হতো, তাহলে তুমি তার প্রেমে পড়তে না।
- পড়তাম, কারন আমি হতাম পুরুষ নিওট।
-আচ্ছা, যাই হোক, আমি বললাম, লেজ নাড়া অবস্থা থেকে চলো এবার বাস্তবে ফিরে আসি, এই মুহুর্তে আসল ব্যাপার হলো তুমি নাচের অনুষ্ঠানে যাবার জন্য তৈরি ।
আমি আমার পাকা বুদ্ধি থেকে বলতে পারি এই সব অনুষ্ঠান তুমি মোটেই সহ্য করতে পারবে না।
- এটা আসলে সহ্য করার বিষয় নয়।
- আমি হলে যেতাম না।
- আমি অবশ্যই যাবো। তোমাকে তো বলছি সে আগামীকাল লন্ডনের বাইরে চলে যাবে।
আমি হাল ছেড়ে দিলাম
-তবে তাই হোক, আমি বললাম, তুমি নিজের বুদ্ধিতে কাজ করো...। জীভস, কিছু বলবে?
- ক্যাব চলে এসেছে, স্যার।
-ওহ?ক্যাব? তোমার ক্যাব, গুসি।
- আচ্ছা ক্যাব? ঠিক আছে, তাহলে। ।
ধন্যবাদ জীভস, আবার দেখা হবে বারটি’।
রোমার গ্লাডিয়েটররা যুদ্ধমঞ্চে ঢোকার সময় সম্রাটের দিকে তাকিয়ে যেমন দূর্বল হাসি দিত, গুসির মুখেও তেমন হাসি দেখলাম। গুসি বের হওয়া মাত্র আমি জীভসের দিকে ফিরলাম। ওকে ওর জায়গা বুঝিয়ে দেবার সময় হয়েছে।
এ রকম পরিস্থিতিতে শুরু করা খুব কঠিন, জ়ীভসকে নিশ্চিতভাবে থামিয়ে দিলেও আমি চাইনা তার মনে কোন আঘাত দিতে।
আমরা ঊষ্টাররা যখন খুব শক্ত হয়ে যাই তখনও সবকিছু স্বাভাবিক আর বন্ধুসুলভ ভাবে করার চেষ্টা করি।
“জীভস”,আমি বললাম, “খোলাখুলি একটা কথা বলি?”
“অবশ্যই, স্যার”
“শুনে তুমি কষ্ট পেতে পারো”
‘পাবো না স্যার। ’
-গুসি ফিঙ্ক-নটল মহাশয়ের সাথে আমার কথা হল, সে বললো তার এই মেফিস্টোফেলিস হওয়ার পরামরশ দাতা তুমি।
- জী, স্যার?
- এখন তোমাকে সোজাসুজি বলি তাহলে। তোমার এই পরামর্শের কারন হচ্ছে, তোমার ধারনা গুসি ঐ রংচঙ্গে পোষাক পড়ে গেলে আমাদের লক্ষ্যবস্তু সহজেই তার দিকে আকর্ষিত হবে,
- আমার মতে এইভাবে গেলে উনি উনার স্বাভাবিক লজজা কম পাবেন।
- আমি তোমার সাথে একমত নই, জীভস।
- একমত নন? স্যার?
- না। আমি যতো আজগুবি, উলটা পালটা আইডিয়া শুনেছি তারমধ্যে এটা হচ্ছে সবচেয়ে আজব আর অর্থহীন। এটা মোটেও কাজের না। কোন সুযোগ নেই।
মিঃ ফিঙ্ক-নটলের উপর তুমি যে পরীক্ষ চালাচ্ছো তা বৃথা যাবে। আর এরকম ব্যাপার এটাই প্রথম নয়। আরো পরিষ্কার করে বলতে গেলে,জীভস, আমি ইদানিং সবসময়ই খেয়াল করেছি যে তোমার কাজকর্ম বা আচরন প্রকাশ করছে যে তুমি খুবই... শব্দটা কি হবে?
- আমি বলতে পারছি না, স্যার।
- অতি আত্মবিসাসী? না, অতিআত্মবিসাসী না, দুর্বোধ্য? না দুর্বোধ্যও না। শব্দটা আমার জিভের গোড়ায় চলে এসেছে।
- অতি বিস্তারিত, স্যার?
-হ্যা, এটার পেছলেই আমি ছুটছিলাম। অনেকটা অতি বিস্তারিত, জীভস। তুমি ধীরে ধীরে তাই হয়ে যাচ্ছো। তোমার কর্মপন্থা সরল নয়, সোজাসুজি নয়। তুমি উদ্ভট সব প্রক্রিয়া বানাও যা সবকিছুর সঙ্গে যায়না।
গুসির যা দরকার তা হচ্ছে ঝড়ঝাপ্টা সামলানো এক বিচক্ষন বড় ভাইয়ের উপদেশ। কাজেই তোমাকে বলছি গুসির এই সমস্যাটা আমার উপর ছেড়ে দাও।
- খুব ভালো, স্যার।
- তুমি এখন থেকে বাসার কাজের প্রতি মনোযোগী হও।
- খুব ভালো, স্যার।
- আমি ওর জন্য সরল আর সোজাসুজি কোন রাস্তা বের করবো। গুসির সাথে আগামীকাল আমি দেখা করছি।
- খুব ভালো, স্যার।
- ঠিক আছে, জীভস।
কিন্তু পরদিনই ঐ সমস্ত টেলিগ্রাম আসা শুরু হলো আমি স্বীকার করতে বাধ্য হচ্ছি যে পরের চব্বিশ ঘন্টা আমি বেচারা গুসিকে নিয়ে চিন্তার সময়ই পেলামনা।
আমার নিজেরই নানা সমস্যা শুরু হলো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।