জাতিসংঘের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ, খাদ্য ও কৃষি সংস্থা বা এফ এ ও আয়োজিত বিশ্ব খাদ্য দিবস গত ১৬ অক্টোবর ২০০৭ সারা বিশ্বজুড়ে পালিত হলো। আয়োজনের মূল প্রতিপাদ্য ছিলো, “খাদ্যের অধিকার” অর্থাৎ রাইট টু ফুড। পৃথিবীর যেকোন স্থানেই বসবাসরত নারী, পুরুষ, ছেলে এবং মেয়ের জন্য অপরিহার্য একটি মানবাধিকার খাদ্যের অধিকার। যে পরিবারটি প্রতিটি রাতেই না খেয়ে ঘুমাতে যায় তাদের মূলতঃ দেখা হয় সমবেদনার জায়গা থেকে। কিন্তু খাদ্য অধিকার’এর বিষয়টি সারা বিশ্বজুড়ে সবার নজরে পড়বার কারণে এখন না খেয়ে থাকা পরিবারগুলোর ভাবনাও পাল্টাচ্ছে।
এই পরিবারগুলোকে আর দেখা হচ্ছেনা করুণার কোন জায়গা থেকে বরং মৌলিক মানবাধিকার পাওয়ার ক্ষেত্রে বাধাগ্রস্থ একটি গোষ্ঠী হিসেবে দেখা হচ্ছে তাদের। খাদ্য-অধিকারের বিষয়টি প্রতিটি মহাদেশেই ক্রমান্বয়ে চিহ্নিত হচ্ছে এবং প্রতিটি মহাদেশেই নেয়া হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ । একুশ শতকের লক্ষ্য হচ্ছে বাইশ শতকের অর্জনের জন্য আগেভাগেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখা। আর সেটা হওয়াটাই তো যৌক্তিক।
বিশ্বায়ন, শিল্পায়ন এবং বৈশ্বিক উষ্ণায়ণ’এর কারণে খাদ্য উৎপাদনে পড়ছে ব্যাপক প্রভাব।
সবচাইতে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে অনুন্নত দেশগুলো যেমন বাংলাদেশে এর প্রভাবের অনেকটাই পরিলক্ষিত হচ্ছে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার সাথে সাথে খাদ্যের চাহিদার তাল মেলাতে গিয়ে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের মত আরও অনেক অনুন্নত দেশকেই। তাই, খাদ্যের অধিকার কিংবা অন্যভাবে বলতে গেলে খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টি অন্তত আমাদের কাছে শোনায় রুপকথার মত!
খাদ্য-অধিকার’এর বিষয়টি আরও ভালোভাবে বুঝতে গেলে দুটো জরুরী বিষয় বোঝা দরকার : প্রথমত: ১৯৯৬ সালে বিশ্ব খাদ্য সামিট’এ নেয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০১৫ সালের ভেতর অপুষ্টিজনিত মানুষের সংখ্যা অন্তত অর্ধেক কমিয়ে আনা এবং দ্বিতীয়ত: মিলেনিয়াম উন্নয়ন লক্ষের প্রথম লক্ষ্য, দারিদ্র্য এবং ক্ষুধার কারণে মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত মানুষের সংখ্যার হার ২০১৫ সালের ভেতরে অর্ধেক কমিয়ে আনা।
সাধারণভাবে, জন্মসূত্রেই একজন মানুষের থাকে খাদ্য অধিকার। আমাদের যা মূল চাওয়া তা হলো এই যে সি-ফোর, এস এল-এইট এর মত নতুন সব উচ্চ-ফলনশীল ধান-জাত আবিস্কার হচ্ছে এবং এগুলোর উৎপাদনের কারণে যেখানে কোটি কোটি মানুষ খেয়ে বাঁচছে, সেখানে এইসব ধান-জাত এর মাধ্যমে আমরা কেন পারছিনা জনবহুল বাংলাদেশের খাদ্যের অভাব মেটাতে, নিশ্চিত করতে কোটি কোটি মানুষের খাদ্য অধিকার? তাই আমরা মনে করি, বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান এই হাইব্রিড ইস্যুগুলোতে আরও স্পষ্ট, আরও খোলাসা হওয়া দরকার।
আমাদের বিজ্ঞানীরা সরকারী সহযোগিতায় এইসব নব-আবিস্কারগুলোকে কাজে লাগিয়ে কোটি কোটি মানুষের মুখে হাসি ফোটাবে, এবং তাদের খাদ্যের অধিকার নিশ্চিত করবে, ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার মত কঠিন এক চ্যালেঞ্জ আমরা শক্ত হাতে মোকবেলা করবো - এইতো আমাদের চাওয়া।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।