বাঙালির চিরচেনা দৃশ্য। পরনে সাদা পাঞ্জাবি, কালো কোট। মঞ্চে দাঁড়ানো। ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম/ এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’—সেই অমর ঘোষণায় গমগম করে ওঠে মঞ্চ। প্রতীকী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মঞ্চে তর্জনী উঁচিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন।
নেপথ্যে তাঁর সেই বজ্রকণ্ঠ। মঞ্চের আশপাশ যেন তখন রেসকোর্স ময়দান। দর্শকেরা হারিয়ে গেছেন একাত্তরের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের আবহে। গতকাল বৃহস্পতিবার শিল্পকলা একাডেমীর জাতীয় নাট্যশালায় মঞ্চস্থ লোক নাট্যদলের মুজিব মানে মুক্তি নাটকের দৃশ্য ছিল এটি।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মম হত্যাকাণ্ড পৃথিবীর সব বিবেকবান মানুষকে বেদনাহত করেছে।
তাঁকে স্মরণ করে গতকাল শিল্পকলা একাডেমী ও বাংলা একাডেমীতে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এর মধ্যে ছিল আলোচনা, সংগীত, আবৃত্তি, চিত্রকলা প্রদর্শনী ও নাটক।
মুজিব মানে মুক্তি নাটকের শুরুতে নেপথ্যে বাজতে থাকা একটি দেশাত্মবোধক গানের সঙ্গে মঞ্চে তুলে ধরা হয় শেখ মুজিবুর রহমানের শৈশবের নানা ঘটনা। গল্প এগিয়ে যায়। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ছয় দফা, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা হয়ে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ এবং এর ধারাবাহিকতায় মুক্তিযুদ্ধ।
নাটকে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ধারাবাহিক ইতিহাসের সঙ্গে স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবনের বিভিন্ন পর্ব ও জীবনাবসান পর্যন্ত ঘটনাপ্রবাহ কালানুক্রমিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এর সঙ্গে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী এবং তাদের এদেশীয় দোসরদের হিংস্রতার ঘটনা। এতে অভিনয় করেছেন প্রায় ৫০ জন নাট্যকর্মী। নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন লিয়াকত আলী।
সন্ধ্যায় নাটক শুরুর আগে জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে শোক দিবসের অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন সংস্কৃতিসচিব রণজিৎ কুমার বিশ্বাস।
সভাপতিত্ব করেন একাডেমীর মহাপরিচালক লিয়াকত আলী, শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন একাডেমীর সংগীত ও নৃত্য বিভাগের পরিচালক সোহরাব উদ্দীন।
অনুষ্ঠানে একক সংগীত পরিবেশন করেন তিমির নন্দী, সাদি মহম্মদ, আবু বকর সিদ্দিকী, শিবু রায়, হাসিনা মমতাজ, সালমা চৌধুরী প্রমুখ। এ ছাড়া ছিল দলীয় সংগীত ও একক আবৃত্তি।
এ ছাড়া বিকেলে এখানে প্রদর্শিত হয় চিরঞ্জীব বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধুর জাপান সফর, অসামান্য মহাকাব্য ও এ স্টাট ইজ বর্ন এই চারটি প্রামাণ্যচিত্র। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।