শরৎ এলে কাশবন চোখে ভাসে।
ময়মনসিংহর ব্রক্ষ্মপুত্রকে দেখেছিলাম যেদিন
কি যে সেই মুগ্ধতা!
আমাদের বয়সের উত্তাপে তখন সবুজ পাতার দিন।
তোমার শাড়ীর নীল রং আর কাশের সাদা মিলে
একাকার হয়ে গিয়েছিলো।
যেনো আকাশ থেকে তুমি মাটিতে নেমে মেঘ হয়ে ঘুরছিলে।
জলপ্রপাতের মত তোমার হাসির শব্দ চারিদিকের মৌণতাকে
ভেঙে চুড়ে দিচ্ছিল।
আমি তোমাকে আর ব্রক্ষ্মপুত্রকে দেখছিলাম সুমনা।
নদীর ওপাড় থেকে নাও বেয়ে এলো এক মাঝি।
তুমি বললে নদীতে যাবে।
নৌকায় বসে নদীর পানিতে পা ডুবিয়ে বসে থাকলে সারাক্ষন।
আর কথাও বলছিলে অবিরল।
কখনো মেঘ,
কখনো কাশবন,
কখনো নদীর কথা।
আমি শুধু তোমাকেই দেখছিলাম নদী।
হ্যা, তোমার নাম নদী দিয়েছিলাম সেদিন।
তখন আমার কোন ক্যামেরা ছিলো না।
আমার দু'চোখে ধরে রেখেছিলাম সেই সব ছবি।
শরৎ এর একটা দিনের কয়েকটা প্রহর।
তোমার কপালের লাল তিলটাকে ছুঁয়েছিলাম সেদিন।
বলেছিলাম ,নদী শোন,
একদিন যখন আমাদের মিলিত জীবন হবে।
রঙ্গন ফুলে সাজবে তুমি।
আর কাশ ফুলে সাজাবো আমাদের ঘর।
ঘরের নীল রং পেইন্টের উপর সাদা সাদা মেঘ।
তুমি মাথা নেড়ে বলেছিলে তাই হবে।
ফেরার পথে তুমি কোন কথা বলো নাই।
শুধু আমার হাত দুটো ধরে বসেছিলে ।
জয়দেবপুর ,গাজীপুর পেড়িয়ে আমাদের বাস ছুটছিলো।
আমি কথা বলছিলাম,
কত শত কথা!
এক সময় তুমি ঘুমিয়ে পড়ছিলে।
কেনো ঘুমালে সুমনা?
জেগে থাকলে হয়তো সব এমন হতোনা।
আমি ফিসফিস করে কথা বলছিলাম।
হঠাৎ ঘটে গেলো সেই দূর্ঘটনা।
চিৎকার ।
কোলাহল।
তোমার হাত দুটো আমাকে আঁকড়ে ধরা।
তোমার দুচোখে কি তখনো কাশবন খেলা করছিলো?
কত প্রগলভ ছিলে তুমি।
অথচ কথাহীন চলে গেলে!
এত কাছে থেকেও সেই চলে যাওয়া দেখা হলোনা।
আমাদের স্বপ্নরা হারিয়ে গেলো সুমনা!
হারিয়ে যাওয়া মানুষের কোন ঠিকানা থাকেনা।
তবু তোমাকে খুঁজে ফিরি আজো।
একদিন তোমাকে নদী ডেকেছিলাম বলে
এখনো ঘুরে ফিরে ব্রক্ষ্মপুত্রের কাছে আসি।
শরৎ এর কাশবন,
নদী,
সব আছে সুমনা।
শুধু তুমি নাই, কোথাও কোনখানে!
ছবি:নেট থেকে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।