আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

~অন্যরকম ভালবাসা~ কিংবা থাপ্পর কাহিনী~

ihzaka@yahoo.com হুপফূল মানসিক স্বচ্ছতায় বিশ্বাসী.. কিছুটা বাদর কিছুটা নিরিহ কিসিমের! তবে, অনেক বড় স্বপ্ন দেখে এদেশটাকে নিয়ে, যেখানে একদল শিক্ষিত তরুন ঘূণে ধরা রাজনীতিকে সত্যিকারের পরিবর্তণের পথে চালিত করতে নোংরা, হিংস্র সামপ্রদায়িকতামুক্ত, প্রকৃত দেশপ্

:--->পড়ন্ত বিকেলের বৃস্টিস্নাত সন্ধায় বৃদ্ধাশ্রমের মেইন গেট-টা পেরুতেই বারান্দার সামনের লনে ওইতো দেখা যাচ্ছে----->~ উনি বসে আছেন আনমনে~পেছন থেকে ঝাপটে ধরে কেমন আছ? কি ব্যাপার কথা নাই কেন? কথা বলবেনা? আরে বাবা~ আমি না হয় এতদিন দেখতে না এসে মস্ত বড় একটা ভূলই করে ফেল্লাম~এর জন্য যে শাস্তিই দেবে, নির্বাক্যে মাথা পেতে নেব ~ কি? স্যরি বলতে হবে? আচ্ছা স্যরি বলছি~ এই দেখ আবার বলছি~ স্যরি~ স্যরি~স্যরি~ তোমার কথা মনে পড়ল; তাই এত্তদুরেই চলে এলাম~ আরে বাবা~ মুখ গোমরা করে এখনও যে বসে আছ? অন্তত একটা কৈফিয়ত তো দেবার সুযোগ দেবে? :---->আচমকাই দেড় টনি ওজনের চপেটাঘাত~ [মাথাটা ৩৬০ডিগ্রি ঘুরে গেল.... বিড়বিড় করে মনে করতে চেস্টা করলাম মস্ত ভূলটা কোথায় ছিল] ও মনে পড়েছে~ সালটা ঠিক মনে নেই। সম্ভবত রোববার ২০০০ কি ২০০১ এর জুন মাসের মাঝামাঝি~ সকাল ৯টার ক্লাস ধরতে হবে ইউনিতে~ ইউনি--->মিরপুর কচুক্ষেতগামী চৈতালী বাসের জন্য অপেক্ষারত! শুরু হল ঝুম ঝুম অঝোর ধারায় বৃস্টি! হঠাত করেই নজর পড়ল ঠিক কাজীপাড়া বাসস্টেন্ড সংলগ্ন মাদরাসা মার্কেটের নীচতলায় ষাটোধ্ব জবুথবু একটা লোক (শরীরের বিভিন্ন জায়গায় থেতলে রক্ত-পুজ বের হচ্ছে) ভিজছে~ হামাগুড়ী দিয়ে সরার চেস্টা করছে কিন্তু অত্যধিক দুর্বলতার জন্য পারছেনা~ গায়ে গতরে মনে হচ্ছে বয়েস কালে নিঃসন্দেহে খু্ব শক্ত সামর্থ ছিল~ উনাকে টেনে নিয়ে মার্কেটের ভিতরে বসালাম~ ভাল মন্দ কিছু জিগ্যেস করে বুঝলাম প্রচন্ড ক্ষুধার্ত, কিছু নাস্তা এনে খেতে দিলাম~ নাস্তা শেষে উঠতে যাব এমন সময় ভদ্রলোক হাত টেনে পাশে বসাল~ আচমকা এমন জোড়ে এক থাপ্পর ~ চাচা! আমি কি কোন অন্যায় করেছি? যা ভাগ! এইখান থেইকা! তোরে আমি যেন আর এক মুহুর্তও সামনে না দেখি~ ঘটনার আকষ্মিকতায় আশেপাশের কয়েকজন দোকানদার ও পথচারী সবাই হতচকিত~ স্বল্প পরিচিত আরেক ভদ্রলোক (চাচার বয়েসি, অসুস্থ লোকটাকে আগে থেকেই চেনে) আমাকে টেনে নিয়ে সান্তনা দিচ্ছেন! থাক বাবা বেচারা এমনিতে প্রচন্ড রাগী, উনাকে আর সময় দেয়ার দরকার নেই~ তুমি যেথায় যেতে চেয়েছিলে চলে যাও~ চলে আসলাম ঠিকই~ কিন্তু মনের ধুকপুকানী কিছুতেই যাচ্ছেনা~ কেন যেন মনে হচ্ছিল এই লোকের জীবনভূমে প্রচন্ড কালবৈশাখী হয়ত সবকিছু উলটপালট করে দিয়ে গেছে~ যার আকস্মিকতায় দয়া অনুকম্পা হাতে কেউ কাছে ভিড়তে চাইলেই এক ঝটকায় সরিয়ে দিচ্ছে~ বহুদুরে~ দিনময় কর্মব্যস্ততা, ৩টে টিউশন শেষে রাতে বাসায় ফিরে কেন যেন ঘুম হচ্ছিলনা একবিন্দুও~ রাত ১১.৩০ টায় আবার ফিরে গেলাম লোকটার কাছে~ [------------------------------------------] . কাছাকাছি এক ফ্রেন্ডকে অনেক রিকোয়েস্ট করে পরদিন সকালে একটা সিএনজিতে করে লোকটাকে নিয়ে গেলাম ঢাকা মেডিকেলে! প্রথমে কিছুতেই ভর্তি করবে না! নিজের পরিচয় আর অকার্যকর প্রভাব দিয়ে ভর্তি করিয়ে এলাম~ ডিউটি নার্স + ডাক্তারকে মানবিকতার দিক থেকে উনাকে দেখতে রিকোয়েস্ট করে এলাম~ ওনাদের সেই চরম বিরক্তি মাখা মুখ আজো ভেসে উঠে মনের পর্দায়~ . টানা তিন সপ্তাহের নিবির শুশ্রুষায় হাটতে সক্ষম হলেও কোথায় হবে তার পরবর্তী ঠিকানা সেই ভেবেই অস্থির~ এদিকে আমি থাকি মেসে~ এখানে কিছুতেই উঠাতে দেবেনা~ প্রয়োজনে মেস ছেড়ে দিতে হবে এমন সিদ্ধান্ত~ চাচার সাথে দুরত্ব আস্তে আস্তে কমে এসেছে এতদিনে~ বিষয়টা নিয়ে উনার সাথে আলাপ করেও কোন উপায় দেখিনা~ কারন উনি কিছুতেই নিজের পরিজনদের ঠিকানা বলবেন না~ বহু কস্টে স্ত্রী-ছেলে-নাতনীদের ঠিকানা খুজে বের করলাম~ . চলে গেলাম উনাদের কাছে~ একটা ছেলে আমারই বয়েসি~ খাতির জমিয়ে মুল ব্যাপারটা বলেই ফেললাম~ শুনেই মা-ছেলে তেলেবেগুনে জ্বলে উঠল~ সোজা বের করে দিল বাসা থেকে~. . ব্যার্থ, মনোকস্টে ফিরে এলাম~ আগারগাও, গাজীপুর কালিয়াকৈর সহ মোট ৪টে বৃদ্ধনিবাসের সন্ধান পেলাম~ খুজ নিয়ে পৌছে দেবার আগেই শেষমুহুর্তে ওনার একছেলের (এমবিবিএস ডাক্তার)~ সাথে কিছু ওয়াজসছিহতমূলক কথা বলার ইচ্ছা থেকেই গেলাম সাভার~ উনার কর্মক্ষেত্রে~ পুরোব্যাপারটা শুনে নিজেই থ~ যত অভিসম্পাত আর ঘৃণা বিদ্বেষ জমা ছিল এই পরিবারটার প্রতি- উবে গেল ঘন্টা তিনেকের আড্ডায়~ অভিব্যাক্তির পরিবর্তন:- "কিছু সাপ উন্মুক্ত অবস্থায় নিজ ঘরে ছেড়ে না রেখে পাপ মোচনের জন্য খাচা বন্ধি করে রাখা বাহ্যিক দৃস্টিতে অপরাধ মনে হলেও কখনও কখনও সেটা কিতাবের ভাষায় পৃন্য না হলেও প্রায়োগিক জীবনবোধের দৃস্টিতে পৃন্যের কাজ হবে নিশ্চয়ই~ মাথায় হাত বুলানোর পরশ পেয়ে সম্ভিত ফিরে পেলাম~ ভালবাসায় জড়িয়ে ধরলেন বুকের মাঝে~ টানা আট বছর পর তিনি খুজে পেলেন তার হারানো ছেলে কে~ বাবা তুই এমন নিষ্ঠুরের মত কোথায় হারিয়ে গিয়েছিলি~ এই দেখ তোর খোজে আমি কতজনে কতউপায়ে হন্যে হয়ে ঘুরেছি এদিক ওদিক~ এমনকি পত্রিকায় বিজ্ঞাপনও দিয়েছি তোর জন্য ~এমনকি আজো আমি বেচে আছি শুধুই তোর সাথে দেখা হবে এই আশায়~ . তুই কেন আমাকে এমন কস্ট দিলি ? এই নে এর শাস্তির দ্বিতীয় পর্ব~ ঠাস~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~() সত্যিই কি বিচিত্র মানুষের মন অথচ একটা সময় এই লোকটার মিরপুরে সাড়ে ৫ কাঠা জমির উপর ছিল নিজের বাড়ী, স্ত্রী, সন্তান সেনাবাহনীতে চাকরি~ আজ সে নিঃস্ব, বলতে গেলে আশ্রয়হীন হয়ে পরপারের পথ চেয়ে দিন করে গুজরান~ তাই বলছি সময় থাকতে বুঝরে মন সময় থাকতে শিখ [আবোল তাবোল কি লিখলাম, না লিখলাম নিজেই জানিনা~শুধু এটুকুই বুঝি~বিচিত্র এমনতরো যেসব ভালবাসা পেয়েছি এই ক্ষুদ্র জীবনে~ তার কি যোগ্য আমি? এই ভালবাসার মানুষটি হচ্ছেন আমার সুরুজ আঙ্কেল~ পথে হল যার সাথে পরিচয়] বিঃদ্রঃ ছবিটা প্রতীকি, গুগল আংকল থেকে মেরে দিলাম~

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।