মাঝে মাঝে মনে হয় ওই দূর আকাশে ভেসে যেতে পারতাম, তাহলে আর ফিরতাম না।
ইংরজরা ভারতবর্ষ থেকে অনেক কিছুই নিয়ে গেছে, কিন্তু বিনিময়ে অনেক কিছু দিয়েও গেছে। উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা যার অন্যতম,যার জোড়ে আজ ভারতীয়রা বিশ্ব কাপাচ্ছে। ভারত ভাগ হবার পর তৎকালীন পাকিস্তানে ক্ষমতা এককভবে পশ্চিম পাকিস্তানের হাতে ছিল, কিন্তু ইংরেজদের গড়ে দেয়া মজবুত শিক্ষাব্যবস্থায় হাত দেয়নি তৎকালীন পাক কুচক্রী শাষকেরা। সে সময়ের একজন মেট্রিক পাশ শিক্ষার্থীরও যে নলেজ ছিল, তা আজকের বিএ/এম এ পাশদের নেই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে তখন বলা হত প্রাচ্যের অক্সফোর্ড,এতটাই প্রশিদ্ধ ও উন্নত ছিল এর শিক্ষাব্যবস্থা। বুদ্ধিজীবি, দক্ষ প্রশাশক,উদিয়মান বিজ্ঞানী তৈরীর কাড়িগর ছিল এই বিশ্ববিদ্যালয়। সেই সাথে সাধারন কলেজগুলোর শিক্ষাব্যবস্থাও ছিল অত্যন্ত উন্নত। জেলা শহড়ের সিলেটএম সি কলেজ, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ, চট্টগ্রাম কলেজ ,কারমাইকেল কলেজ, ইত্যাদি আরো অনেক নামকরা কলেজের পড়াশনার মান ছিল অতি উন্নত। সাধারন বিএ পাশ সার্টিফিকেটেরও ছিল অনেক মূল্য।
দুঃখজনকভাবে পড়াশনার পুরোপুরি অবনতি ঘটেছে বাংলাদেশ সৃষ্টির পর থেকে। অথচ এমনটি হবার কথা ছিল কি?পাকদের শোষন,অত্যাচার ,বঞ্চনা ও অবহেলা থেকে মুক্তি পেতে এদেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিল। সে সময় জন্ম না নিলেও বুঝতে পারি কি স্বপ্ন ছিল সেদিন অস্ত্র হাতে নেয়া মুক্তিযোদ্ধাদের চোখে। কিন্তু সে স্বপ্নের কনামাত্র পুরন হয়েছে কি? লোভী দুই পরিবারের হাতে বছরের পর বছর ডাকাতির ইজারা তুলে দিতে কি প্রান দিয়েছিল লাখো শহীদ? কি পেয়েছি আমরা এই ৪০ বছরে? আর সবকিছু বাদ দিয়ে যদি শুধু শিক্ষাব্যবস্থার দিকেই তাকাই, তাহলেই কি চোখ ফেটে জল আসে না? কি মুল্য আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার?এসসি বা এইচেসসির কি আদৌতেই কোন ভ্যলু আছে? কোনভাবেই কি তা ও লেভেল বা এ লেভেল বা আন্তর্জাতিক অন্যান্য হাই স্কুল সার্টিফিকেটের সমকক্ষ? বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আজ ছাত্ররাজনীতি নামক মাফিয়া শক্তির দখলে। বাংলাদেশের ডিগ্রী নিয়ে বিদেশে গিয়ে প্রতিষ্ঠা পেতে জিআরই,জিম্যাটে অত্যন্ত হাইস্কোর তুলে যারা হায়ার স্টাডিজ করতে পারছে,শুধু তারাই ভাল প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতে পারছে।
বাদবাকিরা ইউনিভার্সিটির ডিগ্রী নিয়ে ক্লিনার, হকার বা দোকানদারি করছে। একবার যারা বিদেশে স্থায়ী হতে পেরেছে, তারা কি ভুলেও তাদের সন্তানদের ফিরিয়ে নেবে বাংলাদেশে?সেশনঞ্জ্যম, অপরাজনীতি,মারামারি, কাটাকাটিতে ভরপুর শিক্ষাঙ্গনে সন্তান পাঠানোর চিন্তা কি ভুলেও করতে পারে কোন প্রবাসি?
অথচ এমনটি হবার কথা ছিল কি?যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে বুলি ক্পচাতে গিয়ে ফেনা তুলে আজকের বুদ্ধিজীবিরা,জানতে ইচ্ছে করে কি সেই চেতনা!ছাত্ররাজনীতির যাতাকলে পিষ্ঠ চার বছরের ডিগ্রী ১০ বছরে শেষ করে কোন্মতে প্রান নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হওয়া হাজারো বেকার,দারিদ্রের কষাঘাতে মানবতের জীবনযাপনকারী কোটি কোটি দরিদ্র আর আইন কানুন বীহিন এক রাস্ট্রে হাওয়া খেয়ে ঘুরে বেড়ানো খুনে ডাকাতদের আস্ফালন মুক্তিযুদ্ধের কোন চেতনা বহন করে জানা নেই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।