অসাধারণ নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। এ ক্যাম্পাসটিকে আল্লাহর এক অশেষ নিয়ামতই বলতে হবে। অসংখ্য গাছপালা, লেক, ফুলের বাগান এই বিশাল ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যের ক্ষেত্রে যোগ করেছে নতুন মাত্রা। এ সৌন্দর্য যেন প্রত্যাশাকেও ছাপিয়ে গিয়েছে। যাকিনা শুধু সৌন্দর্য প্রিয় মানুষ নয়, পাখিদেরও আকৃষ্ট করে।
জাবি ক্যাম্পাসে একবার কেউ ঘুরতে আসলে দ্বিতীয়বার দাওয়াত করার প্রয়োজন পরে না। ক্যাম্পাসই যেন টেনে নিয়ে আসে। বিশাল আয়তনের এই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ছাত্রসংখ্যা অনুপাতে ছাত্রাবাস, একাডেমিক ভবন, দক্ষ শিক্ষক ও অন্যান্য সুবিধা থাকার কারনে পড়াশুনার মান উন্নত। ফলে বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক ক্ষেত্রে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান তুলনামূলক বেশ ভালো। আমার আগের লেখা পর্বগুলোতে বেশ কিছু ভয়াবহ নেতিবাচক বিষয় উঠে আসলেও , বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সংখ্যাগরিষ্ট অংশের সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই।
খারাপের সাথে জড়িতদের সংখ্যা কোনভাবেই ১৫% এর বেশি হবে না। যদিও ভালোদেরও এসব বিষয়ে একটা নেতিবাচক আঘাত মোকাবেলা করতে হয়, তবু জীবন সংসারে সত্যের প্রভাব বেশি।
অহেতুক আন্দোলন ও সেশনজটের অনুঘটক গুটিকয়েক বামপন্থী, কিছু নেশাগ্রস্ত, দুএকটি বিশেষ বিভাগের শিক্ষার্থী (যেমন- ধর্ষনের সেন্চুরিয়ান প্রসবকারী নাটক ও নাট্টতত্ব), অশালীনভাবে গাছতলা/জঙ্গল বা চিপায় সবসময় বসে থাকা যুগল ও রাজনৈতিক দলের মাস্তান বাদে বাকি প্রায় সবাই প্রচুর পড়াশুনা ও একাডেমিক গবেষনা নিয়ে ব্যস্ত।
মেয়েদের হলের সময় সূচি ও বামপন্থীদের কপটতা
অফিসিয়ালি মেয়েদের হলে ফেরার নিয়ম রাত ১০ টায় মধ্যে। কিন্তু রাত ১২ টা পর্যন্ত তো একেবারেই ডালভাত।
আর বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি কোন অনুষ্ঠান থাকে তাহলে সারা রাতই বাইরে থাকা যায়। এক্ষেত্রে জাবিতে বলতে গেলে বছরের ৩৬৫ দিনই কোনো না কোনো অনুষ্ঠান থাকেই । কারণ শতাধিক সাংস্কৃতিক সংগঠন, বিভিন্ন বিভাগ, ব্যাচ/ বর্ষের - দিনপূর্তি, সপ্তাহপূর্তি, মাসপূর্তি, বর্ষপূর্তি হাজারো অনুষ্ঠান যেন লেগেই থাকে। কোনো কোনো সংগঠন আবার সপ্তাহব্যাপী তাদের অনুষ্ঠান পালন করে । ফলে মেয়েদের হলে বলতে গেলে প্রায় সারা রাত্রের যেকোনো সময়ে প্রবেশ করা যায়।
এতে যা হবার তাই হয়। সেন্চুরিয়ান মানিকদের হয় পোয়াবারো। রাতের অন্ধকারে লোভী প্রেমিকের সামনেই স্টুপিড প্রেমিকাকে হতে হয় কুলাঙ্গার সোনার ছেলে মানিকদের হাতে ধর্ষিত। আর বামপন্থীরা এসব ধর্ষনের ঘটনায় মনে মনে খুশি হলেও , করে লোকদেখানো ও সেশনজট বাড়ানো কপট আন্দোলন। কারন চরম প্রতিক্রিয়াশীল (বর্তমানে) বইখাতার সাথে সম্পর্কহীন বামপন্থীরা একদিকে মেয়েদের সারারাত বাইরে থাকার চরম সর্বনাশী হাস্যকর অধিকারের (বাস্তবে নির্জন জঙ্গলাকীর্ন ক্যাম্পাসে সারারাত বাইরে থাকা মেয়েদের জন্য ভয়াবহ অপমানকর, আত্মঘাতী ও জুলুম) কথা বলবে।
আর একারনে মানিকদের সুবিধা করে দিয়ে প্রতিবাদে মিছিল করবে। এটা বামদের আগুনে ফেলে দিয়ে পুড়ল কেন প্রতিবাদ করার মতই ভন্ডামী।
ক্যাম্পাসে সেশনজটের অনুঘটক মূলত চরম প্রতিক্রিয়াশীল (বর্তমানে) বইখাতার সাথে সম্পর্কহীন বামপন্থীরা। বায়েস স্যারের (স্যালুট) ভিসি থাকাকালে মানবতা ও শিক্ষাবিরোধী বামদের ব্যাপারে কিছু কার্যকর পদক্ষেপের পরে বামপন্থীরা একটু সাইজ হলে জাবির সেশনজট অনেক কমতে থাকে। অনেকে জাবিকে বামদের স্বর্গরাজ্য বা আধিপত্য রয়েছে বলে ভুল করে থাকে।
কারন এখানে বামদের ৩/৪ টি ছাত্রসংগঠন মিলে বড়জোর ৩৫ থেকে ৪০ জন হবে। তার মধ্যে আবার মেয়েই বেশি। অবশ্য বামপন্থীদের ছেলে না মেয়ে চেনা কঠিন । কারন মেয়েরা ঠোটে লিপস্টিক ব্যবহার না করা, পান্জাবী বা ফতুয়া পড়া এবং প্রায় ছেলে -মেয়ে সবার শুকনা(গাঁজা) খাওয়ার অভ্যাস থাকা। বামপন্থী মেয়েরাও ওড়না ছাড়াই পান্জাবী বা ফতুয়া পরে, কারন শুকনা খাওয়ার কারনে ওড়না না পড়লেও চলে।
এই ৩৫-৪০ জনও আবার কয়েক ভাগে বিভক্ত। তাই বামদের কোনো একটি সংগঠনের এককভাবে মিছিল করার মত ১৫ জনও জুটতো না। ফলে প্রচন্ড মতবিরোধ সত্তেও ওরা জোট হয়ে মিছিল করতে বাধ্য হতো। জাবি ক্যাম্পাসে এখন বাম মানে একটা গালি।
বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজে অনেক কাহিনী দেখেছি ও শুনেছি, সেগুলো ধারাবাহিকভাবে লেখার চেষ্টা করব।
(চলবে)
পর্ব ১
Click This Link
পর্ব ২
Click This Link
পর্ব ৩
Click This Link
পর্ব ৪
http://sonarbangladesh.com/blog/sultan/6902
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।