সুখে থাকতে ভুতে কিলায়, কথাটা প্রাচীন প্রবাদ। কিন্তু কাউকে সুখে থাকতে দেখলেও ইদানীং অনেকে ভুতের কিল খায়, কেন খায় জানি না। হারামি ছেলেরা হারামি আর লম্পট ছেলেরা লম্পট, এর বেশী কিছু না। অনেক মেয়েদের বলতে শোনা যায়, সব ছেলে খারাপ, পুরুষ জাতটাই খারাপ ইত্যাদি ইত্যাদি। এর উত্তরও বের করেছে কেউ, বলি তোমাকে সব ছেলেদের ট্রাই করতে বলছে কে আসলে সমষ্টিগত ভাবে গালি দেয়া নতুন কিছু না, চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধার সবসময়ই ছিল, আজও আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে।
কিন্তু ব্যাপারটা হওয়া উচিৎ আমার দেশের অপরাধী, সব দেশেরই অপরাধী, খারাপ সব জায়গায়ই খারাপ, ভাল সব জায়গায়ই ভাল, “ঢেঁকী স্বর্গে গেলেও ধান ভানে” কথাটার উদ্ভব এভাবেই হয়েছে। মানুষ চেনা বড় দায়, আসলে সবই অভিজ্ঞতার আর বিপদ থেকে শিক্ষা লাভের ব্যাপার। যখন কোন মানুষ বিপদে পড়ে, তখন সেই বিপদ থেকে শিক্ষা নেয়ার পূর্বে যদি কেউ তাকে উদ্ধার করে ফেলে, তাহলে তার ঐ একই বিপদে আবার পড়ার সম্ভাবনা বেড়ে দাঁড়ায় দ্বিগুণ থেকে বহুগুণ। যাই হোক, লেখার নামকরণের সার্থকতায় ফিরে যাই।
বাসে নীলক্ষেত যাবো, সেখান থেকে ঢাকা ইউনিভার্সিটি, সাথে আমার বড় বোন।
বলে রাখি আমার বোন অন্য সময় রিকশা বা সিএনজিতে চলাফেরা করে, শুধু আমার সাথেই পাবলিক বাসে ওঠার সাহস করে আর তার সিট দখল সঙ্ক্রান্ত অভিজ্ঞতা নেই বললেই চলে। বাসে ওঠার পর দেখলাম সামনে মহিলা সিটে একটা সিট ফাঁকা, বোনকে বললাম ওইখানে গিয়ে বস, সে উত্তর দিলো, না দাঁড়িয়ে যাই, সমস্যা নাই। আমি এতো মানুষের ভিতরে ঝাড়িও দিতে পারছি না, বলতে পারছি না এটা পাবলিক বাস, এখানে কেউ সিট নিয়ে দাওয়াত করে বসাবে না, যুদ্ধ করেই সিট দখল করতে হবে। কলাবাগান আসার পর হুড়মুড়িয়ে আরও কিছু যাত্রী উঠে পড়ল, এখন দাঁড়ানোর অবস্থা আরও খারাপ। হঠাৎ চোখ গেল একটি সিটে, দেখি এক মহিলা আর সাথে ছোট একটা বাচ্চা নিয়ে বসে আছে, আমি উনাকে বললাম এক্সকিউজ মি আপু, আপনি যদি বাচ্চাটিকে কোলে নিতেন, তাহলে একজন বসতে পারত।
উনি ঘুরে অগ্নিমূর্তি ধারণ করে বললেন, আমি আমার বাচ্চাকে ভাড়া দিয়েই বসিয়েছি। আমি মেজাজ ধরে রাখতে না পেরে বললাম, দেখুন আমরা কিন্তু ভাড়া দিয়েও অনেক সময় সিট ছেড়ে দেই, আর সিট ছাড়ার পর কন্ডাক্টারের থেকে ভাড়া ফেরত চাই না। উনি বললেন, আপনি কি বলতে চান? আমি বললাম, আজকে দেখলাম আসলে মেয়েরাই মেয়েদের বড় শত্রু, আমরা ছেলেরা ১০০ জনের মধ্যে অন্তত ১০ জনও বয়স্ক কিংবা মেয়ে মানুষ দেখলে সিট ছেড়ে দেই, কিন্তু আজ পর্যন্ত এটা দেখলাম না কোন মেয়ে একটা ছেলের জন্য তো দূরের কথা, বয়স্ক কিংবা আরেকটা মেয়ের জন্যও সিট ছাড়ল না। এই বাক বিতণ্ডার মাঝে পেছন থেকে আরেকজন পুরুষ তার সিট ছেড়ে দিয়ে আমার বোনকে বসতে বলল। ঘটনার ইতি এখানেই।
গত কয়েক দিন ধরে কিছু ধর্ষণের খবর পেলাম, যেখানে বান্ধবীরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। এর আগেও শুনেছি এরকম, দেখেছিও কিছু। একটা মেয়ে হয়ে আরেকটা মেয়েকে যে কোন বিষয়ে ফুসলানো অনেক সহজ। প্রত্যেক গ্রুপে একটা দালাল বলুন আর ম্যাচমেকার বলুন, এই টাইপের একটা ছেলে বা মেয়ে থাকেই। এদেরকে আগে ভাল মত চিনে রাখুন।
এরা ভাল হলে ভাল, কিন্তু খারাপ হলে অস্বাভাবিক রকম খারাপ হতে পারে। কোন মেয়েকে পটাতে চাইলে আগে তার বান্ধবীকে পটানো হয়, আর এক্ষেত্রে ঐ ম্যাচমেকার টাইপদেরকেই প্রাধান্য দেয়া হয়। এই বিষয়গুলোতে সাবধান থাকার আসলে তেমন কোন টিপস নেই। সাধারণ ভাল মানুষের সংজ্ঞায় ফেলে এদের সাথে সম্পর্ক তৈরি করা আর বন্ধু যাচাইয়ে অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করা উচিৎ। সর্বশেষে ছোটবেলার সেই সাধারণ জ্ঞানগুলোরই জয় হয়, “দুষ্ট লোকের মিষ্টি কথায় ভুলো না” আর “অতি ভক্তি চোরের লক্ষন”।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।