saving the world by sleeping
ছুডো বেলায় রচনা লিখতাম মাই হবি - আমার শখ । লিখতাম বাগান করা, ডাকটিকিট সংগ্রহ । এইসব কোনোটাই আদতে আমার শখ ছিল না । এখনও নাই । তয় ক্লাস ৬ -এ ডাকটিকিট সংগ্রহ করেছিলাম বটে ।
সেইরকম স্ট্যাম্প । ১৮৫৭ এর একটা ডাকটিকিট ছিল সব চাইতে এনটিক পিস । তাও আবার ইউএস এর । ঐটা আবার আমি লুকায় রাখতাম ।
আমার সবচাইতে বড় আর প্রিয় শখ হইল মুভি দেখা ।
ঐটা এখনও আছে । তয় আগে হিন্দি দেখতাম । ভারছিটিতে উঠার পর থিকে ইংলিশ দেখি । দশ বছর পর হয়তো অন্য কোনো ভাষার মুভি দেখব ।
তয় আমার শখের লিস্টি অনেক লম্বা ।
টিভিতে স্কী করা দেইখে আমার শখ হইছিল আমিও করমু ।
তখন আমার বয়স ৪/৫ হইব । মরুভুমির দেশে বরফ পামু কই । তাই ভাবলাম জনসন বেবী পাউডার দিয়া মেঝে ইসমুথ করুম । যেই ভাবা সেই কাজ ।
কিন্তু মেঝে পামু কই । সব ঘরতো কার্পেট দিয়া ঢাকা । কোনাকানচিও বাদ নাইক্যা । একমাত্র রান্না ঘরটাই বাদ পড়ছে । কিন্তু মা দেখলে তো আর পাউডার নষ্ট করতে দিবে না ।
আমার সেঝ চাচার রুমটাতে তখনও কার্পেট বিছানো হয়নাই । কি কারণে জানি না । উনার রুমকে টার্গেট করলাম । উনি তখন আপিসে । আমারই দিন তখন
যাই হউক সারা রুমটাতে পাউডার ঢাললাম ।
কিছুক্ষণ স্কী করার বৃথা চেষ্টা করলাম । দেখলাম পাউডার গুলা পায়ের সাথে লেগে যায় আর বার বার ঢালতেও হয় । কি আর করা । বিকল্প উপায় খুঁজতে লাগলাম । রান্না ঘরে উঁকি দিলাম ।
দেখি মা মনযোগ দিয়ে রান্না করতেছে । ফ্রীজটা খুললাম । দেখি ইয়া বড় একটা বাটার । আর যাবে কই । ঐটা দিয়া পুরা মেঝে লেপছি ।
তারপরের কাহিনী মনে নাই । তয় আমার মা বাপের কাছে নালিশ দিছিল । মামলা আদালতে টিকে নাইক্যা ।
যখন আমি দিত্বীয় কি তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ি, তখন একদিন আম্মুর লগে পাশের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে দেখি পুলাটা একটা ভিডিও গেম খেলবার লাগচে । মনটা উসখুস করতে লাগল বাসায় এসে ।
রাতে বাপের কাছে আবদার করেই ফেললাম আমার একটা ভিডিও গেম কিনন্যা দিতে হইব । টানা একমাস ঘ্যানঘ্যান করার পর একটা ভিডিও গেম পাইলাম । তারপর আমারে পায় কে । ইস্কুল থিকা আইসেই ড্রেস না খুইলাই বইসে পড়তাম ।
আমার বাপ আপিস থিকা না আসা পর্যন্ত ঐটা নিয়া পইড়া থাকতাম ।
তয় বিকাল ৪টা-৫টা বন্ধ থাকত । কারণ ঐ সময় কার্টুন দেখতাম । ঐটা মিস করন যাইব না । তিন তিনটা জয়স্টিকের বারোটা বাজাইয়া যখন বাপের কাছে আরেকটার আবেদন জানাইলাম সাফ মানা কইরা দিল । কিন্তু খেলা তো থামান যাইব না ।
কি আর করমু ভাঙ্গা জয়স্টিকের হ্যান্ডেল গুলা খুইলা তার-তুর প্যাচায়া বানাইলাম আমার সাধের জয়স্টিক । এরকম কিছুদিন ভালই চলল ।
যখন পঞ্চম শ্রেণীতে তখন আমার এক বান্ধবীর বাড়িত গিয়া আবিষ্কার করলাম কম্পুটার । আর যাবে কই । প্রিন্স অফ পারসিয়া - ১ দেইখা আমার কাছে মনে হইতাছিল এই গেমটা শুধু আমার জইন্যে ।
আবারও শুরু হইল ঘ্যানঘ্যান । এইবার বাপের মন গললো না । কিন্তু সে আরেকখান ভিডিও গেম কিইন্যা দিল । এইবারেরটা উন্নত মানের ছিল । চার লাখ গেম ।
পরে অবশ্য দেখি প্রথম ১০টা গেমেরই বিভিন্ন ভার্সন আরকি । তখন মনে হইত পুরানটাই ভালা । তয় গেম গুলান মজার ছিল । কনট্রা গেমটা ফেবারিট ছিল ।
সপ্তম শ্রেণীতে উঠে আরও দুইটা জিনিসের শখ হইল ।
একটা ব্রিক গেম আরেকটা ওয়াকম্যান । এইবার আর আবদার করি নাইক্যা । টেকা পয়সা জমায় কিনছিলাম । এর সাথে আবার যুক্ত হইছিল ফুন আলাপ । মানুষ মুবাইলে যত কথা কয় আমি মনে হয় টি.এন.টি তে এর চাইতে বেশী কথা কইছি ।
ইস্কুল থিকে আইসেই স্কুল ড্রেস কোনোরকমে খুইলেই কোনো না কোনো বান্ধবীরে ফুন করতাম । মাঝে মাঝে দেখতাম উপরতলার আন্টি ফোন করতে আসত । তখন আবার ভিওআইপি সিস্টেম না থাকায়, বেশীরভাগ মানুষ আমাগো বাড়িতে আইএসডি কল করতে আসত । ইস্কুল থেকে ফিরে যদি দেখতাম উপরতলার আন্টি আইছে, তইলে তখনি আইএসডি লক কইরে রাখতাম । আর যদি দেখতাম যে উনি অলরেডি কথোপকথন শুরু করছে বেহায়ার মত কইতাম যে জরুরি কল আইবো ফুন বিজি রাইখেন না ।
গল্পের বই পড়া শুরু করছি নাইনে উইঠে । এই শখ বরাবরই ছোটোবেলায় ছিল । কিন্তু বইয়ের অভাবে পারি নাই । ইস্কুলের বইগুলান যেদিন হাতে পাইতাম ঐদিনই শেষ কইরা ফেলাইতাম । সারাবছর আর বইগুলা ছুইতাম না পরীক্ষার সময় ছাড়া।
কম্পুটারের হাতে খড়ি ইস্কুলে হইলেও ঐটা পাইছি আফনের এইচএসসির পর । তখন ঝাপায় পইরে চ্যাট করতাম । ঐ শখটাও বাদ হইয়া গেছে দুই বছর পর । তারপর এসিএম-এর শখ হইছে । রাতদিন ঐটা নিয়া পইরা থাকতাম ।
অনার্স পাশের পর চাকরিতে জয়েন করে ঐটাও বাদ হইয়া গেছে প্রায় । ২০০৭ এর শেষে খেমোবুক সিনড্রোমে পড়ছিলাম । সারাদিন ফেসবুকে বইছে পাযল সলভ করতাম । তাও বাদ পইড়ে গেছে । এখন কিছুদিন হইল ব্লগ নিয়া পড়ছি ।
এইটাও আর ভাল লাগতেছে না খুব বেশী ।
জানি না ভবিষ্যতে ভাল না লাগার লিস্টি আর কত লম্বা হইবে ....
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।