অন্ধকার; মৃত নাসপাতিটির মতন নীরব' ১)
আসক্তি
রৌদ্রচিঠি নিয়ে প্রজাপতিটা উড়ে যেত জঠর থেকে, কখনো কখনো নাচতো আনমনে । তুমি ছিড়ে ফেলেছিলে রুপকথার সেই প্রজাপতির ডানা । হারিয়ে উড়ালপথের অধিকার, ছেঁড়া ডানার নিশ্চল প্রজাপতি মোচড় দিয়ে উঠে জঠরে ।
আমার চোখের পাতা আঁকড়ে ধরে মরফিয়াস । মৌতাতী সময়ে মাথার ভিতর করোটির দেয়াল বেয়ে আঁধার পথ পাড়ি দেয় ঘুম ।
কালশিরা পড়া হাতের জমিন এবড়ো থেবড়ো করে নদী বয়ে যায় । এই নদীর গল্প সমান্তরাল, বাঁকহীন ।
কণ্ঠ ধোয়া এসিড বৃষ্টিতে ভিজে যায় আমার ইনস্যানিটি শহরের পাতালপুরী । গোধুলীর বাসনা গুলো হত্যা করেছে মাঝ রাতের চুমুগুলোকে । মনসরণী এখন বেনিয়াদের পদচারনায় মুখরিত ।
=====
২)
অরণ্যে
বজরায় চেপে পাড়ি দিচ্ছি অরণ্যের থৈ থৈ সবুজ আঁধার । হিমরোদ থেকে জলের গভীরে আরো জলে ঢুকে পড়েছে একটা জলপাই সবুজ কাছিম ।
প্রতিটা তরুলতাই এখানে জোয়ারভাটার গল্প বলে, গান বাঁধে নতুন ঋতুর, ফিসফিসিয়ে বলে যায় যায় ঝিনুকসুপ্ত নির্জ্ঞানবাণী । সবুজের এই দপ্তরে চুনট সময়ের সুতোর বুননে শাখাপ্রশাখা মেলেছে কত পুরাণ ও কত রুপকথার নকশিকথা ।
মনের জানালার ফুলকেয়ারীতে স্মৃতিরা বুনেছিল বীজ ।
ডুবন্ত অরুণের নরোম কিরণ মুছে যেতে থাকলে মিটিমিটি উকি দেয় বয়াম বন্দী জোনাকী । ডুমুর ও ছাতিমের অরণ্যে নেমে আসা আবলুস আঁধার তখন জ্বলতে শুরু করে জলন্ত কয়লার মত ।
আমি নোঙর ফেলি পল্লববিতানের নিচে । দূর থেকে আমার বজরাই তখন যেন এক নিভুনিভু জোনাক । উপরে উড়ছে চাঁদের প্লেন ।
প্রত্যাশার বিবিধ রাশভারী তারাদের বুকপকেটে পুরে নিয়ে আমি ফিরে আসি ।
======
৩)
অজশ্র আলোকবর্শায় বিদ্ধ আমাদের সৌরগ্রাম,
সূর্যসরণীতে সোল্লাসে ছুটে আলোর ক্যারাভান,
ধুমকেতুর তীক্ষ্ণতায় ছুটে নৈশব্দ্যের কার্নিভালে ।
হিমরোদের ভিতর বৈঠা চালিয়ে জলজ অন্ধকারে
ঢুকে পড়ে একটা উজ্জ্বল মাছ, নির্মেঘ দুরবীণে
তার আলোক নৃত্যের সাড়া মেলে ।
হর্ষ এক অরুপ কসমিক পাখি, সে আমার কাছে
ফিরে ফিরে আসে অপরুপ গোধুলীর মায়ায় ।
====
৪)
কখনো বেলুন ফিয়েস্তা দেখি নাই,
প্যারাসুটে চেপে উড়ে যাই নাই সূর্যগন্ধি মেঘের দেশে ।
আমার বন্দর কখনই হয় নাই জাহাজ শুন্য,
সাগরচিলের ডানার ছায়ায় ভেষে পাড়ি দেই নাই সমুদ্রনীল ।
আমার কোন পাসপোর্ট নেই,
কাউন্টারে লাইনে দাড়িয়ে কাটি নাই কোন টিকিট ।
আমার আছে শুধুই মনের ডানা ।
=====
৫)
বাংকারগুলো গ্রেনেড চার্যে ধ্বংসস্তূপে পরিনত হলেও
শুনেছি সেখানে ঈশ্বরের উপনিবেশন চিরস্থায়ী
অথচ
মৃত শিশুটির চোখে দেখেছি বিদ্রুপের দগ্ধাবশেষ
কিংবা
বিপ্লবী বনমোরগের বাজপাখীর শ্যেন দৃষ্টিতে কেঁপে উঠা ।
=====
৬)
ঘুনপোকাদের বসতবাড়ি হয়ে উঠেছে
ধুলোমাখা সময়ের হোঁচটপ্রবণ চৌকাঠের ফ্রেম ।
অবিশ্বাসী ঘুনপোকাদের আনাগোনার পদধ্বনি
সময়ের দেয়ালে স্পন্দিত হয়,
চৌকাঠের জ্যামিতিতে সৃষ্টি হয় বিধ্বংসী অনুনাদ ।
ঘুনপোকাদের উৎসবঘরে চৌকাঠের অস্থীমজ্জ্বা
ক্রমশ হয়ে উঠছে সেলুলোজবিহীন ।
=====
৭)
কি সচ্ছন্দ রেশমী কাপড়ের সেই তারল্য
পোষাকের প্রবাহমানতা
আর তোমর হেঁটে যাওয়া
====== ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।