মুক্তিযুদ্ধ আমাদের অহংকার, ধর্মান্ধতা ও দলান্ধতা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী।
জহির রায়হান ১৯৩৫ সালের ১৯ আগস্ট বর্তমান ফেনী জেলার অন্তর্গত মজুপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। আজ জহির রায়হানের জন্মদিনে বুকের গভীর থেকে বিনম্র শ্রদ্ধা। 'স্টপ জেনোসাইড' 'বরফ গলা নদী' 'শেষ বিকেলের মেয়ে' 'হাজার বছর ধরে' সহ তার অসংখ্য সৃষ্টির মাঝে তিনি বেঁচে থাকবেন অনন্তকাল ধরে।
স্টপ জেনোসাইড চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তিনি বিশ্বের বুকে তুলে ধরেন বর্বর পাকিস্তানী হানাদারের মূখোশ।
রূপালী জগতের মানুষ হয়েও তিনি ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে যুক্ত এবং ২১শে ফেব্রুয়ারির ঐতিহাসিক আমতলা সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন। ভাষা আন্দোলন তার ওপর গভীর প্রভাব ফেলেছিল, যার ছাপ দেখতে পাওয়া যায় তার বিখ্যাত চলচ্চিত্র জীবন থেকে নেওয়াতে। তিনি ১৯৬৯ সালের গণ অভ্যুত্থানে অংশ নেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি কলকাতায় চলে যান এবং সেখানে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে প্রচারাভিযান ও তথ্যচিত্র নির্মাণ শুরু করেন। কলকাতায় তার নির্মিত চলচ্চিত্র জীবন থেকে নেওয়ার বেশ কয়েকটি প্রদর্শনী হয় এবং চলচ্চিত্রটি দেখে সত্যজিত রায়, মৃণাল সেন, তপন সিনহা এবং ঋত্বিক ঘটক প্রমুখ ভূয়সী প্রশংসা করেন।
সে সময়ে তিনি চরম অর্থনৈতিক দৈন্যের মধ্যে থাকা সত্ত্বেও তার চলচ্চিত্র প্রদর্শনী হতে প্রাপ্ত সমুদয় অর্থ তিনি মুক্তিযোদ্ধা তহবিলে দান করে দেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রথম কাতারের জীবিত সেনানীদের সাথেও কথা বলে জানা যায়, তৎকালীন মুক্তি পাগল তরুন ছাত্র নেতাদের সাথে তার নিবিড় সম্পর্ক ছিল।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের প্রবাদ পুরুষ জহির রায়হানের অমর সৃষ্টির মাঝে কিছু উল্লেখ করার মত চলচ্চিত্র ও উপন্যাস যা আজও বোদ্ধাদের ভাবনার খোরাক।
উপন্যাস
জহির রায়হানের উপন্যাসঃ
শেষ বিকেলের মেয়ে (১৯৬০)। প্রথম উপন্যাস।
প্রকাশকঃ সন্ধানী প্রকাশনী। রোমান্টিক প্রেমের উপাখ্যান।
হাজার বছর ধরে (১৯৬৪)। আবহমান বাংলার গ্রামীণ জীবনের পটভূমিতে রচিত আখ্যান। (চলচ্চিত্ররূপ, ২০০৫)
আরেক ফাল্গুন (১৯৬৯)।
বায়ান্নর রক্তস্নাত ভাষা-আন্দোলনের পটভূমিতে রচিত কথামালা।
বরফ গলা নদী (১৯৬৯)। প্রথম প্রকাশঃ 'উত্তরণ' সাময়িকী। অর্থনৈতিক কারণে বিপর্যস্ত ক্ষয়িষ্ণু মধ্যবিত্ত পরিবারের অসহায়ত্ব গাঁথা।
আর কত দিন (১৯৭০)।
অবরুদ্ধ ও পদদলিত মানবাত্নার আন্তর্জাতিক রূপ এবং সংগ্রাম ও স্বপ্নের আত্নকথা।
চলচ্চিত্র
জহির রায়হান পরিচালিত চলচ্চিত্রসমূহ হচ্ছেঃ
কখনো আসেনি (১৯৬১)।
সোনার কাজল (১৯৬২)। (কলিম শরাফীর সঙ্গে যৌথভাবে)
কাঁচের দেয়াল (১৯৬৩)।
সঙ্গম (১৯৬৪)।
বাহানা (১৯৬৫)।
আনোয়ারা (১৯৬৭)।
বেহুলা (১৯৬৬)।
জ্বলতে সূরযকে নীচে।
জীবন থেকে নেয়া (১৯৭০)।
স্টপ জেনোসাইড (চলচ্চিত্র) (১৯৭১)।
এ স্টেট ইজ বর্ন (১৯৭১)।
লেট দেয়ার বি লাইট (অসমাপ্ত) (১৯৭০)।
তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া ও তৎকালীন মুক্তি পাগল ছাত্র নেতাগন, যারা এখনো জীবিত।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।