কার্গো উড়োজাহাজ ব্যবসা চলে গেছে সিন্ডিকেটের কব্জায়। একটিমাত্র সংস্থাকে আকাশপথে পণ্য পরিবহনের ব্যবসা করার অনুমতি দেওয়ায় সংকটে পড়েছেন হ্যাচারি শিল্পের অর্ধশতাধিক মালিক। এ শিল্পে মোট বিনিয়োগ দুই হাজার কোটি টাকা। এর ১০০ কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগ এখন ঝুঁকির মুখে। বন্ধ হওয়ার পথে দেশের অর্ধশতাধিক হ্যাচারি।
এ শিল্পের মালিকরা বলেছেন, অন্য কোনো কার্গো জাহাজ না থাকায় ইজি ফ্লাই নামের সংস্থাটি মনোপলি ব্যবসা করছে। প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় ভাড়াও নিচ্ছে বেশি। এ ছাড়া পর্যাপ্ত ফ্লাইট না থাকায় পরিবহন জটিলতায় প্রতিদিন গড়ে মারা যাচ্ছে প্রায় দুই কোটি চিংড়ি পোনা। আর রোগাক্রান্ত হচ্ছে আরও কমপক্ষে এক কোটি পোনা মাছ। অভিযোগ উঠেছে, সিভিল এভিয়েশন ও কতিপয় কার্গো ব্যবসায়ীর যোগসাজশে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট এ বিপর্যয়ের জন্য দায়ী। একটিমাত্র কার্গো উড়োজাহাজে দিনে দুটি ট্রিপ দিয়ে কোনোভাবে টিকিয়ে রাখা হয়েছে এ ব্যবসা। দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী লে. ক. (অব.) ফারুক খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, 'হ্যাচারি মালিকদের অভিযোগ পুরোপুরি সত্য নয়। তবে অভ্যন্তরীণ রুটে পণ্য পরিবহনে উড়োজাহাজের সংকট শীঘ্রই কেটে যাবে। নতুন দুটি সংস্থাকে এ ব্যবসা পরিচালনার অনুমতির প্রক্রিয়া চলছে।' অনুমতির অপেক্ষায় থাকা এয়ার কার্গো সংস্থা রূপসী বাংলা এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফজাল হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, 'আমরা সরকারের সব শর্ত পূরণ করে ৭ এপ্রিল অত্যাধুনিক দুটি এন-২৬বি মডেলের কার্গো উড়োজাহাজ চট্টগ্রামে আনি। কিন্তু নানা জটিলতা দেখিয়ে ফ্লাইট পরিচালনা করতে দেওয়া হয়নি আমাদের। এ অবস্থায় ফ্লাইট পরিচালনা করতে না পারায় প্রতিদিন ১৩ জন ক্রুর বেতনসহ আট লাখ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে।' সূত্র জানায়, বেশির ভাগ সময় একটি চক্র কার্গো উড়োজাহাজের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। চক্রটি সিভিল এভিয়েশনের কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে মাসোহারার বিনিময়ে ম্যানেজ করে একচেটিয়া ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে। নতুন কোনো কার্গো ব্যবসায়ী এলেও আটকে দিচ্ছে তাদের নানা মারপ্যাঁচে। পোনা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সব নিয়মনীতি মেনে কার্গো উড়োজাহাজ আনলেও সেগুলোকে এখনো ফ্লাইট পরিচালনা (অপারেশন) করতে দিচ্ছে না সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ। উড়োজাহাজ আনার আগে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সব ধরনের ক্লিয়ারেন্স দিলেও এখন বলছে নানা সমস্যার কথা। পোনা উৎপাদনকারী (হ্যাচারি মালিক) নজিবুল ইসলাম বলেন, উড়োজাহাজ না থাকায় সড়কপথে ট্রাকে আনা-নেওয়া করতে গিয়ে প্রতিদিন গড়ে আড়াই কোটি পোনা মারা যাচ্ছে। কার্গো উড়োজাহাজে কঙ্বাজার থেকে খুলনায় পোনা সরবরাহে সময় লাগে মাত্র ৭০ মিনিট। কিন্তু সড়কপথে ২৪ ঘণ্টার বেশি।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।