সুচন্দা
কোহিনূর আখতার সুচন্দার জন্ম সাতক্ষীরায়। বাড়ি যশোরের বিজয়নগরে। ১৯৬৪ সালে কাজী খালেক পরিচালিত একটি প্রামাণ্যচিত্রে প্রথম অভিনয় করেন। ১৯৬৬ সালে প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সুভাষ দত্ত তাকে নায়িকা করে নির্মাণ করেন 'কাগজের নৌকা'। চলচ্চিত্রটি সফল হলে রুপালি তারার জগতে সুচন্দার পথচলা মসৃণ হয়।
একই বছর খ্যাতনামা চলচ্চিত্রকার জহির রায়হান সুচন্দাকে নিয়ে নির্মাণ করেন 'বেহুলা'। চলচ্চিত্রটি বড়মাপের দর্শক গ্রহণযোগ্যতা পায়। ফলে 'বেহুলা' রূপী সুচন্দা হয়ে যান বেহুলা-কন্যা। দর্শকরা এখনো তাকে এ নামেই চেনেন। এরপর আশির দশক পর্যন্ত অভিনয় করেন শতাধিক চলচ্চিত্রে।
এ দশকেই তিনি অভিনয়ের পাশাপাশি প্রযোজনায় আসেন। তারই প্রযোজনায় শিবলী সাদিক পরিচালনা করেন চলচ্চিত্র 'তিন কন্যা'। নির্মাণেও সফল হন তিনি। এরপর নিজে পরিচালনা করেন বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্র। ২০০৪ সালে জহির রায়হানের উপন্যাস অবলম্বনে তার পরিচালিত সর্বশেষ চলচ্চিত্র 'হাজার বছর ধরে' বেশ কয়েকটি শাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করে।
বর্তমানে ঘর-সংসার নিয়েই ব্যস্ত বেহুলা-কন্যা সুচন্দা। তিনি বলেন, নব্বই দশকে চলচ্চিত্রের মন্দাবস্থার কারণে অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলি। তবে এখন আবার চলচ্চিত্রের সুদিন ফিরছে। তাই ইচ্ছা করছে আরও ভালো কিছু করে যেতে। কারণ সময় বয়ে যাচ্ছে।
জীবনের গোধূলীলগ্নে এসে পেঁৗছেছি। জহির রায়হানের 'বরফ গলা নদী' উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্র এবং তারই অন্য এক উপন্যাস নিয়ে নাটক, আমাদের তিন বোনের জীবনী নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ এবং স্বামী জহির রায়হানের জীবনী ও নিজের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণসহ জীবনের নানা চড়াই-উৎরাইয়ের ঘটনা নিয়ে একটি বই লেখার কাজ শীঘ্রই শুরু করব। এখন নাতি-নাতনিদের নিয়ে সবুজ গাছপালা আর প্রকৃতির কাছে যাই এবং রাতে জানালার ফাঁক দিয়ে ওদের রুপালি চাঁদের জোৎস্নায় অবগাহন করাই। এইতো বেশ আছি।
সুজাতা
অভিনেত্রী, প্রযোজক, পরিচালক সুজাতার জন্ম কুষ্টিয়ায়।
তার প্রকৃত নাম তন্দ্রা মজুমদার। ১৯৬৪ সালে ওবায়দুল হক পরিচালিত 'দুই দিগন্ত'র মাধ্যমে চলচ্চিত্রে আগমন তার। এরপর বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করলেও ১৯৬৫ সালে সালাউদ্দিন পরিচালিত 'রূপবান' চলচ্চিত্রটি তার ব্যাপক পরিচিতি এনে দেয়। সুজাতার অসাধারণ অভিনয়গুণে বড়মাপের সাফল্য পায় এটি। এতে রূপবানের ভূমিকায় অভিনয় করে রূপবান-কন্যা খ্যাতি পান তিনি।
সুজাতা বলেন, চলচ্চিত্রটি দেখে দর্শক এতই আবেগ-আপ্লুত হয়ে পড়ে যে আমার বাসার সামনে তাদের দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়। আমার জন্য তারা নানা উপহার নিয়ে হাজির হয়। এর মধ্যে মাছ, মাংস, তরিতরকারিও বাদ যায়নি। সুজাতার সঙ্গে বেশির ভাগ চলচ্চিত্রে জুটিবদ্ধ হয়ে অভিনয় করেন আজিম। একসঙ্গে কাজ করতে গিয়ে তাদের মধ্যে প্রেম ও পরিণয় হয়।
আগুন নিয়ে খেলা, ছোটে সাহাব, এতটুকু আশা, অবাঞ্ছিত, অবুঝ মন, অশ্রু দিয়ে লিখা, প্রতিনিধিসহ শতাধিক ব্যবসা সফল চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন তিনি। অভিনয়ের পাশাপাশি আশির দশকে প্রযোজনা ও পরিচালনায় আসেন সুজাতা। এ সময় তার পরিচালিত 'অর্পণ' চলচ্চিত্রটি বিভিন্ন শাখায় একাধিক জাতীয় পুরস্কার লাভ করে। বর্তমানে চলচ্চিত্রে অভিনয় কমিয়ে দিলেও ছোট পর্দার নাটকে প্রায় নিয়মিত অভিনয় করছেন রূপবান-কন্যা সুজাতা। পাশাপাশি সংসার-সন্তান নিয়ে কাটছে তার জীবনের নানা রঙের দিনগুলো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।