আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কামাল গাবালা আর প্রথম আলোর নির্লজ্জ্ব বর্ণবাদী আচরণ।

যদি কোনদিন দিগন্তের ওপরে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারি, তোমাদের সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যাব

আজকের প্রথম আলো মহান কামাল গাবালার একটি লেখা ছাপিয়েছে। মুক্তচিন্তা অথবা মানবাধিকারের ইজারা গ্রাহক কেউ যখন চিন্তা চেতনায় বিবস্ত্র হয়ে জন্মপ্রাপ্ত মানবিক কাঠামোর ভেতর থেকে তার অযৌক্তিক পশুটাকে উন্মুক্ত করে তখন কিছু বলার থাকেনা। ................ ব্রাদারহুড মিশরের দীর্ঘদিনের একনায়কের বিরুদ্ধে একটি সর্বব্যাপী গণআন্দোলনের জন্ম দিয়েছিল। সেটিকে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বলার মত নির্লজ্জ ওরা হতে পারেনি। তাই ব্রাদারহুড পাছে ‍কৃতিত্ব পেয়ে যায় এ জন্য ওরা স্বচ্ছন্দে সেটিকে জনগনের আন্দোলনই বলল।

তারপর এলো নির্বাচন। একটি স্বতস্ফুর্ত নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় এলো ব্রাদারহুড। বোদ্ধারা সবাই অবাক। পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলো ব্রাদারহুডকে সন্ত্রাসী বলতে বলতেও বলেনা। কী করে বলবে? এতগুলো ভোট যে পেয়েছে তাকে সন্ত্রাসী বললে যে নিজেরই ইজ্জ্বত যায়।

কেন মানুষ ভোট দিল তার জবাব বের করতে গিয়ে নিউইয়র্ক টাইমসের মত সংবাদ বনিকেরা দেখতে পেলেন বছরের পর বছর ধরে সমগ্র মিশর জুড়ে চালিয়ে যাওয়া ব্রাদারহুডের সামাজিক কর্মকান্ড। কিন্তু একটি সংগঠনের সাথে ’ইসলামী’ শব্দটা জুড়ে থাকলে যে বড় গা জ্বালা করে। তাকে ভাল বলতে খুব অস্বস্তি লাগে। ব্রাদারহুডকে সন্ত্রাসী বলতে না পারার সে অন্তর্জালা ওই সময়ের পশ্চিমা এবং প্যান ইসলামিক গণমাধ্যমের শব্দে শব্দে অনুরণিত হয়েছে। আরেকদিকে ছিল যে কোন পরিবর্তনের যুক্তরাষ্ট্র সম্বন্ধীয় ব্যাখ্যাদাতারা।

তারা ভাবছিলেনে আরব বসন্ত একান্তই মহান যুক্তরাষ্ট্রের ইচ্ছার ফসল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র কিভাবে ব্রাদারহুডের কাছে ক্ষমতা অর্পনে ইচ্ছুক হতে পারে এর ব্যাখ্যাগুলো বড়ই অস্পষ্ট ছিল। মুলত যুক্তরাষ্ট্রও তখন ছিল অনিচ্ছুক দর্শক। জনগণের ভোটে তার পা চাটা এলবারাদিগুলোর পরাজয় সে দাঁতে দাঁত চেপে হজম করেছে। কিছু করার ছিলনা।

নেতা হতে গেলে অনেক বিব্রতকর ব্যাপারও হাসিমুখে মেনে নিতে হয়। কিন্তু খুব তাড়াতাড়িই সময় তাদের দিকে ঝুঁকে গেল। সেনাবাহীনি ক্ষমতা দখল করল তারা গণতন্ত্রের জন্য কষ্ট পেলেননা। মুরসীকে বন্দী করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হল তারা আইনের শাসনের জন্য উহ আহ করলেননা। বুলেটের আঘাতে হাজার মানুষের প্রাণ নিয়ে নেয়া হল কিন্তু মানবাধিকারের গায়ে কোন আঁচড় কাটলনা।

কামাল গাবালা নাসর সিটিতে ব্রাদারহুডের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে বড়ই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়লেন। সে উদ্বেগের কথা লিখলেন। ব্রাদারহুডকে সন্ত্রাস, সন্ত্রাস, সন্ত্রাস বলে একটি মহাকাব্য রচনা করলেন। বাংলাদেশের মানুষের জ্ঞানার্জনের জন্য প্রথম আলো সেটি ছাপল। বড়ই সৌভাগ্যের কথা।

.................. মিশরের সেনাবাহীনি যতদূর চলে এসেছে তার জন্য পেছনে ফেরার কোন সুযোগ নেই। ব্রাদারহুড যতদূর চলে এসেছে তার জন্যও পেছনে ফেরার কোন সুযোগ নেই। মিশরের ইতিহাসে আরেকবার এস্পার ওস্পারের সময়। ব্রাদারহুড হয়তো আবার হেরে যাবে। হয়তো আবার বহুদিন পর ফিরে আসবে।

কিন্তু প্রথম আলো আর কামাল গাবালাদের বিবেকের কাছে আর নৈতিকতার কাছে যে পরাজয় তার কোন ফিরে আসা নেই। তা একান্তই মানব ইতিহাসের অস্পষ্ট একটি ধুসর জগত হিসেবে চলে যাবে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে। ..............আমরা খুব ভাল সময়ে নেই। মানবিক উত্তরণের সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য বাহন এখন মানবাধিকার। ’রেসিজম’ এর মহামারি এ সুশ্রী বাহনটিকে প্রতি মুহুর্তে অন্ত:সারশুণ্য করে দিচ্ছে।

এ রেসিজমের ক্রুর দৃষ্টি রঙের পরিচয় থেকে ধীরে ধীরে ধর্মীয়/ আদর্শিক/ রাজনৈতিক পরিচয়ের দিকে ঝুঁকে যাচ্ছে। সময়ের ভুল নায়কেরা এ বিবর্তনে নিয়ামক কর্তা হিসেবে কাজ করছেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.