আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একদা চকবাজারে.....................

ভালো কাজের জন্য ভালো মানুষ হলে হয় না। ভালো মন থাকতে হয়।

প্রতি বছর রোযার সময় আমাদের মিডিয়া এবং পত্রিকাগুলো পুরান ঢাকার চকবাজার এর ইফতার এর খুব প্রচার করে........................ তাই কৌতুহল বসত এতোদিন মনের ভিতর একটা ইচ্ছা ছিলো যে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী চকবাজার এর ইফতার করব।গতকাল সেই মনের আশা বেশ ভালোভাবেই পুরন হল সয়ং আমার বড় ভাই এর জন্য। আমার বড় ভাই প্ল্যান করল যে পুরান ঢাকায় পুরো পরিবার নিয়ে ইফতার করবে। সেই সুবাদে আমার বড় খালা আর ছোট খালা কেউ রাজি করানো হল এবং ঠিক করল যে চকবাজার থেকে ইফতার কিনে পুরান ঢাকায় বড় খালার বাসায় ইফতার করব। সবার মাঝেই দেখলাম চকবাজার এর ইফতার এর প্রতি আমার মত কৌতুহল। তো আমি আর আমার খালাতো ভাই আমাদের সেই সপ্ন পুরনের উদ্দেশে ধানমন্ডি থেকে যাত্রা শুরু করলাম.......... প্রথমে বাস এ উঠে শাহাবাগ গেলাম........ ভাগ্য মনে হয় আমাদের পক্ষে ছিল না......... আগে থেকেই বৃষ্টি পড়ছিলো, শাহাবাগ এ যাওয়ার পর মনে হল আনুপাতিক বৃষ্টির হার দুর্ভাগ্যের সাথে সমানুপাতিক হয়ে মুষুলধারে পরা শুরু করল .............. বৃষ্টিতো না যেন বৃষ্টির মেশিনগান........... ছাতা নিয়ে বের হয়েছেলাম ঠিকই............ কিন্তু এমনিই দুর্ভাগ্য যে দুজনেরই ছাতায় ছিলো ফুটো............. সুতরাং যা হওয়ার তাই হল.......... শাহাবাগ এর সামনে পুরো কাক ভেজা হয়ে দাড়িয়ে আছি................. বহু কষ্টে এক রিকশাওয়ালা কে রাজি করালাম................... ভাড়া ৪৫ টাকা...... শুনে ৪৪০ ভোল্ট এর ইনস্ট্যান্ট একটা শক খেলাম........ বাধ্য হয়ে সুবধ বালকের মত উঠে পরলাম রিকশায়........... রিকশাওয়ালা নামিয়ে দিলো জেলখানার সামনে......... সেখান থেকে কিছুপথ হেটে গেলেই চকবাজার। যাইহোক চকবাজার আশার পর মনে হল মাছের বাজারে প্রবেশ করেছি............... আমি আর আমার খালাতো ভাই এতো সুন্দর মনোরম পরিবেশ দেখে দুজনেই হতবাক এবং নির্বাক................ বহু কষ্টে নিজেদেরকে সামলিয়ে প্রায় ২০ জনের ইফতার গুলো কিনে বড় খালার বাসায় আসলাম................... সবার মাঝেই দেখলাম ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচের মত টানটান উত্তেজনা কখন মাগরিবের আযান দিবে আর সেই ইফতার শুরু করবে??? মাগরিবের আযান এর পর যখন সবাই ইফতার শুরু করল.............. সবার সেই টানটান উত্তেজনা হিরোশিমা নাগাসাকির মত বিলীন হয়ে গেল.......................। রুমে তখন এতোটাই নিরব হয়ে গেছিলো যে মনে হচ্ছিল যে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে............... আমি শুরু করেছিলাম বড়বাপের পোলায় খায় দিয়ে............. একটু মুখে দেওয়ার পর মনে হল............ এর চাইতে হোটেল আল-ছালাদিয়া-ঢাকার খাবার অনেক মজা.................. অন্য আইটেম এর খাবার এর অবস্থা আরো করুন......... আমার অবস্থা তখন কাহিল........... ছাইরা দেরে মা কাইন্দা বাচি........................ ঢাকার ঐতিহ্যবাহী চকবাজার এর ইফতার যে এতো বাজে হবে তা জীবনে কল্পনাও করতে পারি নাই................. সংবিদ্ধিবদ্ধ সর্তকীকরন :- প্রিয় ব্লগার ভাই ও বোনেরা আপনারা যারা আমার মত ঢাকার ঐতিহ্যবাহী চকবাজার এর ইফতার খেতে চান তাহলে আপনাদের কে একটা অনুরধ করব যে আপনারা অবশ্যই আপনার নিকট ওষুধের দোকান থেকে smc চিহ্নিত ওরস্যালাইন সংগ্রহ করুন.......... নতুবা আপনার নিকট হাসপাতালে ইমারজেন্সি বুকিং দিয়ে রাখুন........................

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।