মিরপুরের গোদারাঘাট ঢাকার এতিহ্যবাহী ও প্রাচীনতম নৌঘাট হলেও কালের বিবর্তনে হারিয়েছে এর ঐতিহ্য। মিরপুর এক এর সি ব্লকের কোল ঘেষে কাজীফুরী ও নওয়াবেরবাগ নিয়েই তুরাগ নদীতে গোদারাঘাট। বর্তমান সময়ে সে ঘাট না থাকলেও নামটি একেবারে মুছে যায়নি। গোদারাঘাটের নামকরণ কবে কিভাবে হয়েছে তা জানা যায়নি। তবে প্রায় ৯০ বছর বয়সী মোঃহারুন নামে স্থানীর এক ব্যাক্তি জানান বৃট্রিশ আমলে যে সমস্ত নদীর ক’লে হাটবাজার বসত সে সব স্থান গোদারা ঘাট নামে পরিচিত হত।
তিনিও ব্রিটিশ আমল থেকেই গোদারাঘাাটের সাথে পরিচিত। তিনি আরও জানান, গোদারা ঘাট এলাকা নওয়াব সলিমুল্লাহ এর সম্পত্তি ছিল। খাজনা আদায়ের জন্য এখানে নবাবের এক বিরাট কাছারীও ছিল বলে জানা যায়। যেখানে নবাব খাজনা আদায় বা প্রমোদ ভ্রমনে আসত। পরবতীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থসংস্থান করতে গিয়ে তিনি অন্যান্য সম্পতির মত গোদারাঘাট এলাকাও বন্ধক রাখেন।
এর পরই হাতছাড়া হয়ে যায় গোদারাঘাট । গোদারা ঘাট কিভাবে বন্ধ হল এ প্রশ্নের উত্তরে গোদারা ঘাট সংলগ্ন ৭০ বছর বয়সী বাখরখানির দোকানী নবাব মিয়া জানান,১৯৬১ সালে চিড়িয়াখানা প্রতিষ্টিত হওয়ার পর তা ১৯৭৪ সালে সাধারণ দর্শনাথীদের জন্য খুলে দেওয়া হলে মৃতপ্রায় গোদারাঘাট আবার জমজমাট হয়ে ওঠে কিন্তু ১৯৮৮ সালের বন্যার পর তুরাগ নদী তীর সংলগ্ন সোয়ারী ঘাট থেকে টঙ্গী পর্যন্ত বেড়ীবাধ দিলে চূড়ান্ত ভাবেই বন্ধ হয়ে যায় গোদারাঘাট।
তৎকালীন সময়ে নদীপথের বাণিজ্যে সদর ঘাােটর পরেই অবস্থান ছিল গোদারাঘাটের। গোদারাঘাট দিয়ে তখন বড় বড় বজড়া, পানসী নৌকা,এমনকি বিদেশী জাহাজও ফলমূল, শাকÑসব্জি,কাঠ,টিন,তুল্ াইত্যাদি নিয়ে আসত দূরদূড়ান্ত থেকে। গোদারাঘাট আরো আলো্িচত হয় যেকারণে তা হল জনশ্র“তি আছে যে, হযরত শাহ্আলী বোগদাদী (রঃ) নাকি ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে সর্বপ্রথম এ ঘাটেই এসে নামেন।
কিন্তু এক সময়ে কালের আর্বতে এ ঘাটটি তার মর্যাদা হারিয়েছে।
তুরাগ নদীর তীর বেদখল,বাঁধ নির্মান, ইট-বালু ব্যাবসা, হাউজিং কোম্পনীর বড় বড় বিল্ডিং তৈরী ইত্যাদি নানা কারণে গোদারাঘাট হারিয়েছে তার ঐ্িতহ্য। এছাড়া বর্তমানে বিভিন্ন রকম সন্ত্রাসী কার্যক্রম, মাদক ব্যাবসা,দর্শনাথীদের হয়রানি ,আইন শৃংঙ্খলার মারাক্তক অবনতি ইত্যাদি কারণে এ এলাকাকে আরও সমস্যাবহুল করে তুলেছে। শুধুমাত্র দর্শনাথী হয়রারানী ও তাদের কে ছিনতাই সহ বিভিন্ন ফাঁদে টাকা আদায় করার জন্যও একটি আলাদা চক্র গড়ে উঠেছে বলে জানা যায়। যে কারণে গোাদারাঘাট কে মানুষ আরও এড়িয়ে চলছে।
এ প্রসক্সেগ শাহ্ আলী থানায় একাধিক বার ফোনে যোগাযোগ করেও কতৃপক্ষের ভাষ্য নেওয়া যায়নি। গোদারাঘাট প্রায় মরে গেলেও বর্তমান সময়েও গোদারাঘ্টা বাজার টু কাউন্দি,আমিন বাজার পারাপারসহ বালু ব্যাবসা, কয়লা ব্যাবসা, সাভার থেকে সব্জি ,মাছ, আমদানী, ইত্যাদি সামান্য কার্যক্রম রয়েছে। বিভিন্ন সমস্যা থাকার পরও একেবারে বিলুপ্ত হয়ে যাবার আগেই, শহরের একঘেয়ে জীবন থেকে কিছু সময়ের জন্য মুক্তি পেতে একবারের জন্য হলেও ঘুরে আসতে পারেন এতিহ্যবাহী এ স্থানটিতে।
#......................
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।