আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বরগুনা ও ভোলায় ঘূর্ণিঝড়ে নিহত ৮ (ভিডিও)

ঘূর্ণিঝড় ‘মহাসেন’-এর আঘাতে বরগুনা ও ভোলায় এ পর্যন্ত আটজনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার ও আজ বৃহস্পতিবার দুই জেলার কয়েকটি এলাকায় এসব প্রাণহানি ঘটে।

বরগুনা:
ঘূর্ণিঝড়ে আজ ও গতকাল বিভিন্ন এলাকায় বজ্রপাতে, গাছের নিচে চাপা পড়ে ও হুড়োহুড়ি করে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার সময় ছয়জন নিহত হয়েছেন। বরগুনা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা প্রকাশ চন্দ্র বিশ্বাস এ তথ্য জানান।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন: বেতাগী উপজেলার পূর্ব রানীপুর গ্রামের সৈয়দ আলী (৭৫), বকুলতলী গ্রামের শিশু আমির হোসেন (৬), তালতলী উপজেলার ছোট আমখোলা গ্রামের চান মিয়া (৬০), বামনা উপজেলার বুকাবুনিয়া ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুরা গ্রামের আনোয়ার হোসেন (৬০), একই ইউনিয়নের নাদিরা আক্তার (২৬) ও বামনা সদর ইউনিয়নের সফিপুর গ্রামের মোশাররফ হোসেন (৬৫)।


গতকাল দিবাগত রাত তিনটার দিকে ঝড়ে উপড়ানো গাছের নিচে চাপা পড়ে সৈয়দ আলী নামের এক ব্যক্তি মারা যান। আজ গাছের নিচে চাপা পড়ে মোশাররফ ও আনোয়ার নামের দুই ব্যক্তি মারা যান। দুপুরের দিকে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার সময় বজ্রপাতে মারা যায় শিশু আমির। আর হুড়োহুড়ি করে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার সময় পড়ে গিয়ে মারা যান চান মিয়া ও নাদিরা। এর মধ্যে নাদিরা অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।

ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির উপপরিচালক হাফিজ উদ্দিন এসব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ঘূর্ণিঝড় মহাসেনের প্রভাবে আজ ভোর সাড়ে পাঁচটা থেকে বরগুনায় দমকা ও ঝোড়ো হাওয়া বইতে শুরু করে। একই সঙ্গে প্রবল বৃষ্টিপাত হয়। গতকাল দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে বরগুনায় বিদ্যুত্সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এরই মধ্যে নদ-নদীর পানি ছয় থেকে সাত ফুট ফুঁসে উঠে জলোচ্ছ্বাস হয়েছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে।

এতে বরগুনা শহর তিন ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
বরগুনার ৩২৪টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৬৫ হাজার লোক আশ্রয় নিয়েছিল। বরগুনায় পায়রা নদীতে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সারা দেশের সঙ্গে বরগুনার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। নদীতে নোঙর করা অবস্থায় একটি ফেরি ডুবে গেছে বলে জানা গেছে।
অসমর্থিত সূত্রে জানা গেছে, পাথরঘাটা উপজেলার লালদিয়া, পদ্মা, হরিণঘাটা ও খলিফারহাট এলাকায় প্রায় ৪০০ বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে।

আশারচর, নিদ্রারচর, নলবুনিয়া, কাজিরখাল এলাকায় প্রায় ৩০০ কাঁচা ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। বরগুনা সদর, তালতলী, আমতলী ও পাথরঘাটার প্রায় এক হাজার মাছের ঘের পানিতে তলিয়ে গেছে। তালতলীর দক্ষিণ ঝাড়াখালী গ্রামে ঝড়ে উপড়ানো বেশ কিছু গাছের নিচে চাপা পড়ে ৫০টি গরু মারা গেছে।

ভোলা:
ভোলায় আজ ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে শিশুসহ দুজনের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলো লালমোহন উপজেলার ধলীগৌরনগরের মঙ্গল শিকদার এলাকার মো. আবুল কাশেম (৪৫) ও পারভেজ (৭)।


ভোলার জেলা প্রশাসক খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, আজ ভোরে গাছের ডাল ভেঙে লালমোহন উপজেলার ধলীগৌরনগরের মঙ্গল শিকদার এলাকার মো. আবুল কাশেম (৪৫) মারা যান।
উপজেলার চর মাদ্রাজ ইউনিয়নের আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথে পারভেজ (৭) নামের এক শিশু গাছের নিচে চাপা পড়ে গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কর্তব্যরত চিকিত্সক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ভোলার জেলা প্রশাসক আরও জানান, মহাসেনে ভোলার বেশ কয়েকটি উপজেলার ঘরবাড়ি, গাছপালা ও বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

মনপুরা ও চরফ্যাশন উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লালমোহন উপজেলার ধলীগৌরনগর বাত্তির খাল এলাকার রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবী মো. ফারুকুর রহমান জানান, এ এলাকায় শতাধিক ঘর ভেঙে গেছে। আহত হয়েছে ১০ জনের মতো। বাত্তির খাল ঘাটের পাঁচটি নৌকাসহ ১২ জেলে নিখোঁজ রয়েছেন।
লালমোহন উপজেলার লর্ড হার্ডিঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম জানান, এ এলাকায় দুই শতাধিক ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে।

দুটি নৌকাসহ ১৪ জন জেলে নিখোঁজ।

[প্রতিবেদনটি তৈরিতে সহায়তা করেছেন এম জসিম উদ্দিন (নিজস্ব প্রতিবেদক, বরগুনা), নেয়ামতউল্যাহ (ভোলা অফিস)]

সোর্স: http://www.prothom-alo.com     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.