আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রামুর ঘটনায় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন

কক্সবাজারের রামু উপজেলায় বৌদ্ধমন্দির ও বসতিতে হামলার ঘটনা তদন্তে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন হাইকোর্টে দাখিল করা হয়েছে। এতে ২০টি সুপারিশসহ ঘটনার সঙ্গে ২৯৮ জনকে জড়িত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বেঞ্চে প্রতিবেদনটি দাখিল করা হয়। আদালত ২৮ মে শুনানির তারিখ ধার্য করেছেন।
আদালত সূত্র জানায়, সুপারিশে ফেসবুক, টুইটারসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করা, প্রশাসনকে শক্তিশালী করাসহ ২০টি সুপারিশ রয়েছে।

রামু ট্র্যাজেডির মতো আর কোনো মর্মান্তিক ঘটনা যেন না ঘটে, সে জন্য সরকারসহ সব বিবেকবান মানুষকে সতর্ক থাকার অনুরোধ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। সূত্রমতে, দুই খণ্ডের প্রতিবেদনে ১৪৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য, ৫৬টি স্থিরচিত্র ও তথ্য-উপাত্ত রয়েছে।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া ও রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল কে এম মাসুদ রুমি উপস্থিত ছিলেন।
পরে আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া প্রথম আলো ডটকমকে জানান, তথ্য-উপাত্ত, সুপারিশসহ দুই খণ্ডের প্রতিবেদনটি দাখিল করা হয়েছে। সুপারিশ অংশে দুই শতাধিক পৃষ্ঠা রয়েছে।

আর তথ্য-উপাত্তের ক্ষেত্রে দুই-তিন হাজার পৃষ্ঠা হতে পারে। আদালত ফটোকপির মাধ্যমে প্রতিবেদনের অনুলিপি সংগ্রহের অনুমতি দিয়েছেন। এটা হাতে পেলে বিস্তারিত জানা যাবে বলে জানান তিনি।
সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল কে এম মাসুদ রুমি বলেন, বিবাদীপক্ষের প্রতি নির্দেশনা ছিল বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দাখিলের জন্য। আদালতের আদেশ অনুসারে বিবাদীরা রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে প্রতিবেদন জমা দেয়।

আজ তা আদালতে উপস্থাপন করা হয়।
রামুর ঘটনা তদন্তে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে জ্যোতির্ময় বড়ুয়া গত বছরের ১০ ডিসেম্বর হাইকোর্টে আবেদনটি করেন। ১৩ ডিসেম্বর আদালত ওই ঘটনা তদন্তে সাত দিনের মধ্যে বিচার বিভাগীয় কমিটি গঠন করতে স্বরাষ্ট্রসচিব ও আইনসচিবকে নির্দেশ দেন। কমিটিতে কর্মরত বা অবসরপ্রাপ্ত দুই জেলা জজ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধি রাখতে বলা হয়। তদন্ত শেষে কমিটিকে চলতি বছরের মার্চ মাসে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়।


আদালত সূত্র জানায়, এ নির্দেশের পর মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে চট্টগ্রামের দায়রা জজ মো. আবদুল কুদ্দুস মিয়া, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩-এর বিচারক শরীফ মোস্তফা করিম ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. জহুরুল ইসলাম রোহেলের সমন্বয়ে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। পরে প্র্রতিবেদন দাখিলের সময় বাড়ানোর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৫ মার্চ এক মাসের সময় মঞ্জুর করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় বিষয়টি আজ কার্যতালিকায় আসে।
গত বছরের ২৯ ও ৩০ সেপ্টেম্বর রামু উপজেলা সদরে দুষ্কৃতকারীদের একাধিক দল বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের শত বছরের পুরোনো ১২টি বৌদ্ধবিহার ও মন্দিরে আগুন দেয়। পুড়িয়ে দেয় বৌদ্ধপল্লির ৪০টির মতো বসতবাড়ি।

ভাঙচুর চালায় শতাধিক বাড়িঘরে।
ওই ঘটনা নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে রামু উপজেলার বাসিন্দা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া হাইকোর্টে রিট করেন। শুনানি নিয়ে গত বছরের ৩ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারির পাশাপাশি অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ দেন। নির্দেশনায় সরকারি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে বলা হয়। এই নির্দেশ অনুসারে প্রতিবেদন জমা দেয় রাষ্ট্রপক্ষ।

প্রতিবেদনে বৌদ্ধপল্লি ও মন্দিরে হামলা, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় জড়িত হিসেবে ২০৫ জনকে শনাক্ত করা হয়। সর্বসাকল্যে আনুমানিক মোট আট কোটি ২৯ লাখ ৬২ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানানো হয়। পরিস্থিতি উত্তরণে ২২ দফা সুপারিশ তুলে ধরে ওই কমিটি। ।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.