কক্সবাজারের রামুর বৌদ্ধপল্লিসহ উখিয়া ও টেকনাফের বৌদ্ধমন্দিরগুলোতে হামলার কথা দৃশ্যত সবাই ভুলে গেছে। কারণ, সংবাদমাধ্যমে এখন আর এ বিষয়ে কোনো কথাবার্তা নেই।
কিন্তু এত শিগগির এটি ভোলার নয়। আর এক মাস পর যখন এর প্রথম বর্ষপূর্তি হবে, তখন সংবাদমাধ্যম জাতিকে স্মরণ করিয়ে দেবে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ঘরবাড়ি ও উপাসনালয়গুলোর ওপর ঘৃণ্য হামলার ঘটনা। এই সুবাদে সংবাদকর্মীরা খোঁজ নিতে শুরু করেছেন ওই জঘন্য অপরাধের বিচার-প্রক্রিয়া কতটা এগোল।
হামলার ঘটনাগুলোর পর মামলা দায়ের করা হয়েছিল মোট ১৯টি। দীর্ঘ ১১ মাসে তদন্ত শেষ হয়েছে মাত্র সাতটি মামলার। কিন্তু একটি মামলারও অভিযোগপত্র বা চার্জশিট দাখিল করা হয়নি। মোট ১৫ হাজারেরও বেশি ব্যক্তিকে আসামি করে মামলাগুলো দায়ের করা হয়েছে। ৫২৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে ১২১ জন জামিনে মুক্তি পেয়ে বেরিয়ে গেছেন।
বিস্ময়ের কথা, বৌদ্ধপল্লিতে হামলার ওই ঘটনার নেপথ্যের মূল শক্তি কারা ছিল, পুলিশ এখনো তা জানতে পারেনি। ঘটনার পরপরই রাজনৈতিক অভিসন্ধিমূলক নানা অভিযোগ উচ্চারিত হয়েছে, কিন্তু তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে মূল অপরাধীদের শনাক্ত করার কাজটি এগোয়নি। এই ব্যর্থতার গুরুতর দিকটি হচ্ছে এই যে, আক্রমণের শিকার বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষের মনে হতে পারে, তাদের ওপর এই বর্বর হামলার বিষয়টিকে সরকার যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়নি। যে অন্যায় তাদের ওপর করা হয়েছে, তার বিচারকাজে এমন মন্থর গতি তাদের কাছে সরকারের সংবেদনশীলতার অভাব বলে মনে হতে পারে। মনে হতে পারে, এই ঘটনাকে পুঁজি করে সরকার ও সরকারি দল নিজের রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করেছে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ওই হামলার ফলে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষের মনে যে নিরাপত্তাহীনতার বোধ জন্ম নিয়েছে, যে ভীতি ও আস্থাহীনতা দেখা দিয়েছে, তা দূর করা বাংলাদেশ নামের রাষ্ট্রটির সংহতির জন্য অত্যন্ত জরুরি। তা করতে হলে হামলাকারী ও তাদের নেপথ্যের শক্তিকে শনাক্ত করা এবং দ্রুতগতিতে তাদের বিচার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষের মনে যে বিরাট ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে, তা ভুলে থাকার বা এড়িয়ে যাওয়ার কোনোই সুযোগ নেই। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।