I Love Honesty
রাজশাহী, ৪ আগস্ট (শীর্ষ নিউজ ডটকম): একাত্তরে হত্যা, লুটপাট ও নির্যাতনের অভিযোগে রাজশাহীর বিভিন্ন থানায় দায়ের করা ১২টি মামলার তদন্ত মাঝপথে থেমে গেছে। এ সব মামলা এখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের নির্দেশনার অপেক্ষায় রয়েছে পুলিশ। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাজশাহীর বিভিন্ন থানায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে এ ১২টি মামলা দায়ের করা হয়।
এ সব মামলায় পুলিশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করলেও পরবর্তীতে গ্রেফতার অভিযান ও তদন্ত কাজ থেমে যায়। এ প্রসঙ্গে রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপার এসএম রোকন উদ্দিন শীর্ষ নিউজ ডটকমকে জানান, যেহেতু যুদ্ধাপরাধের বিচারে ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে, তাই এ মামলাগুলো যুদ্ধাপরাধ তদন্তে গঠিত কমিটির সদস্যরা তদন্ত করবেন।
ট্রাইব্যুনাল চাইলে পুলিশ তদন্ত করতে পারে। এক্ষেত্রে কোন নির্দেশনা এখনো না পাওয়ায় তারা মামলাগুলোর তদন্ত স্থগিত রেখেছেন। নির্দেশনা পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর জেলার মোহনপুর উপজেলার মেরাজুল শেখ একাত্তরে হত্যা ও লুটপাটের অভিযোগে প্রথম মামলাটি দায়ের করেন। এ মামলার আসামি হিসেবে পুলিশ দাউদ আলী ও নূরে আনোয়ার নামের দুজন সর্বপ্রথম গ্রেফতার হয়।
এরপর বিভিন্ন থানায় মামলা দায়ের হতে থাকে।
বাগমারা উপজেলার চকমহব্বতপুর গ্রামের মোজাম্মেল হক বাদী হয়ে ২০০৯ সালের ১৬ এপ্রিল রাজশাহীর বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এ দুই মুক্তিযোদ্ধাকে অপহরণের পর হত্যার অভিযোগে ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
একই বছরের ৩০ মার্চ রাজশাহীর আদালতে ১৫ রাজাকারের বিরুদ্ধে আরো একটি মামলা দায়ের হয়। বাগমারার ইসলাবাড়ি গ্রামের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহের মণ্ডলের ছেলে আবেদ আলী বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
২০০৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি দুই ভাই মফিজ উদ্দিন ও কফিল উদ্দিন হত্যার বিচার চেয়ে থানায় অভিযোগ করেন বোন সুফিয়া কামাল।
থানা পুলিশ মামলা না নেয়ায় তিনি ২২ ফেব্রুয়ারি আদালতে মামলা করেন। পরে পুলিশ আদালতের পাঠানো এজাহারটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করে। ওই মামলায় ৭ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর এলাকার মুক্তিযোদ্ধা ময়েজ উদ্দিনকে হত্যার অভিযোগে ২০০৯ সালের ৫ এপ্রিল আদালতে মামলা করেন তার ছেলে মাজেদুর রহমান। মামলায় ৩০ জনকে আসামি করা হয়।
৮ এপ্রিল একাত্তরে হত্যা ও লুটপাটের অভিযোগে দুটি পৃথক মামলা হয়। পিতাকে হত্যার অভিযোগে ছেলে ও বড় ভাইকে হত্যার অভিযোগে ছোট ভাই বাদী হয়ে আদালতে মামলা দুটি করেন।
১০ এপ্রিল মোহনপুরে ১০ রাজাকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে মামলা করেন উপজেলার বেড়াবাড়ি ডাইংপাড়া গ্রামের সিরাজউদ্দিন। মামলায় অভিযোগ করা হয়, আনিসুর রহমান ও মোসলেম উদ্দিনকে ১৯৭১ সালে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়।
চারঘাট উপজেলার কালুহাটি এলাকার গোলাম হোসেন বাদী হয়ে একাত্তরে তার পিতা রওশন আলী সরকারকে হত্যা ও বাড়িতে হামলা চালিয়ে লুটপাটের অভিযোগে ৬ জনকে অভিযুক্ত করে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন।
মহানগরীর মতিহার থানা এলাকার আবদুল মান্নান খলিফা বাদী হয়ে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একাত্তরে বড় ভাই শামসুল আলমকে হত্যার অভিযোগে আরেকটি মামলা করেন। ওই মামলায় ২ জনকে আসামি করা হয়।
একাত্তরে দুর্গাপুর এলাকায় হত্যা ও লুটপাটের অভিযোগে ১২ এপ্রিল আদালতে মামলা করেন তার ছেলে বাহার উদ্দিন মৃধা। এ মামলায় চিহ্নিত রাজাকার ওয়াহেদ মোল্লাসহ ১৩ জন আসামির নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়।
৪ জুন ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা করেন বাগমারা উপজেলার বালানগর এলাকার মোমেনা বিবি।
সর্বশেষ এ বছরের ১ মে বাঘা উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন বাদী হয়ে একাত্তরে হত্যা, লুটপাটের অভিযোগ এনে ২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
একাত্তরে হত্যা, লুটপাট ও নির্যাতনের অভিযোগে আদালতে মামলা হওয়ার পর পুলিশ অভিযোগগুলোর তদন্ত শুরু করে। তবে সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে ট্রাইব্যুনাল গঠনের পর ওই মামলাগুলোর তদন্ত কাজ স্থগিত হয়ে যায়।
(শীর্ষ নিউজ ডটকম/ এমআর/ এমএনএম/ ০০:১৯ঘ)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।