ফটোগ্রাফি, ভ্রমন, সিনেমা, ওয়ার্ডপ্রেস, এবং সব এলোমেলো ভাবনা
এই মাত্র দেখে শেষ করলাম শরদিন্দু বন্দোপাধ্যায়ের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত তপন সিনহার 'ঝিন্দের বন্দি'। বিখ্যাত একটি সিনেমা হলেও আগে এটি কখনো দেখা হয়নি। বেশ জমজমাট সিনেমাটির কাহিনী।
মধ্যপ্রদেশের 'ঝিন্দ' নামক এক রাজ্যের রাজার মৃত্যুর পর তার সিংহাসনের উত্তরাধিকারী হয় বড় ছেলে শংকর সিং। কিন্তু ছোট ছেলে উদিত সিং চক্রান্ত করে তৃতীয় বারের মতো অভিষেকের আগে বড় ভাইকে নিরুদ্দেশ করে দেয় নিজে রাজত্ব দখলের লোভে।
অত্যাচারি উদিত সিং-এর হাত থেকে প্রজাদের বাঁচাতে রাজ্যের এক জেনারেল শংকর সিংকে খুঁজতে বের হয়। কলকাতায় এসে ভাগ্যক্রমে দেখা পায় একই চেহারার গৌরী শংকর রায় নামে এক জমিদারের। তাকেই নিয়ে বসিয়ে দেয় সিংহাসনে। উদ্দেশ্য আপাতত অভিষেক অনুষ্ঠান সম্পন্ন করে শংকর সিং-এর সিংহাসন পাকা করা এবং সেই সময়ে আসল রাজাকে খুঁজে বের করা।
নকল রাজার অভিষেকের সাথে সম্পন্ন হয়ে যায় পাশের রাজ্যের রাজকন্যার সাথে পূর্ব নির্ধারিত বাকদান অনুষ্ঠানও।
শেষ পর্যন্ত সেই খুঁজে বের করে উদ্ধার করে আসল রাজাকে। দমন করে শত্রুদের। ফিরিয়ে দেয় রাজ্য ও রাজকন্যা। যদিও ততদিনে রাজকন্যার মনটি হরণ করা হয়ে গেছে।
সিনেমাটিতে অসম্ভব সুন্দর অভিনয় করেছেন উত্তম কুমার।
মনে হচ্ছিল সত্যিকারের রাজা হলে তার চেহারা এই রকমই হওয়া উচিত। এই সিনেমাতেই বোধ হয় সৌমিত্র প্রথম কোন খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। যদিও খলনায়ক হিসেবে তাকে ভাবতে কষ্ট হচ্ছিল।
ভালোবাসলে মেয়েরা যে কি করতে পারে এই সিনেমায় তার কিছুটা উদাহরন তপন সিংহ দিয়েছেন। রাজ্যের রানী হয়েও কোন ধরনের নিরাপত্তা ছাড়া আমন্ত্রণ জানিয়ে নকল রাজাকে নিয়ে আসে তার খাস কামড়ায়।
তার বোকামীর মাসুল তাকে দিতে হয় যখন সেই গোপন রাস্তা দিয়েই এসে উদিত সিং-এর লোক তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
সিনেমার যে দৃশ্যটি মনে দাগ কেটেছে সেটি হলো রাজা (নকল)-রানীর প্রথম দেখা হওয়ার সময় রানীর দ্বারা রাজাকে বরণ করে নেয়ার দৃশ্যটি। তখনকার মেয়েরা স্বামীকে যে সত্যিকারের দেবতার আসনেই বসিয়ে পূঁজা করতো তা সে স্বামী মাতাল-লম্পট যাই হোক না কেনো, এই দৃশ্যটি তা সত্যিকারভাবে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছে।
সিনেমাটি সরাসরি দেখা যাবে বাংলা সিনেমা আর্কাইভে ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।