কি করব বলেন? নিজের উপর এতটাই ওভার কন্ফিডেন্ট ছিলাম যে ঢাকা ভার্সিটি ছাড়া অন্য কোন ফর্ম তুলি নাই। ভর্তী পরীক্ষা দিয়ে বুঝলাম, মাঝে মাঝে নিজের মেধাও বেইমানী করতে পারে। আমাদের কলেজের ফাস্ট বয় ছাড়া আর কেউ ঢাকা ভার্সিটিতে চান্স পায়নি। আমি ২য় ছিলাম। উপায় কি? এক বছর লস দাও।
ঘরে বসে সময় কাটাই। কারো সাথে মিশি না। লজ্জা লাগে। সবার একই কথা, তুমি চান্স পাও নাই? পুরোপুরি গৃহ বন্দী হয়ে পড়লাম। যে ক্রিকেট ছাড়া আমার ঘুম হত না, সেই ক্রিকেট মাঠটা অসহ্য মনে হত।
বাসার পাশেই মাঠ। বন্ধুরা সব খেলত। আমি জানালা দিয়ে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখতাম। আমার এই অবস্থা দেখে সবাই চিন্তিত। কি করা যায়? মামারা খোজ নিয়ে একটা প্রাইভেট ভার্সিটিতে ভর্তী করার কথা বলল।
আব্বার একটাই কথা, "আমার ১ মাসের বেতন দেবার সামর্থ নেই। ৪ বছরের বেতন দিব কিভাবে?" আমার মামারা শুনে ক্ষেপে গেলেন। বললেন, "আমরা কি মরে গেছি?"
আল্লাহর রহমতে আমার মামাদের কারো সাহাহ্য প্রয়োজন হয় নি। ১ম সেমিস্টারের রেজাল্টের পর ইউনিভার্সিটি আমাকে টিউশন ফি এর ৭৫% মাফ করে দেয়।
পরের বছর আবার বন্ধুরা ভর্তী পরীক্ষা দিল।
অনেকেই চান্স পেয়ে ঢাকা ভার্সিটির ছাত্র। তবে বেশির ভাগই চট্টগ্রাম ভার্সিটিতে চান্স পেল। আমি আর ভর্তী পরীক্ষা দেই নি। কারন ১ বছরে নতুন যে বন্ধুদের পেয়েছিলাম তাদের ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করেনি। তাছাড়া যে বন্দী জীবন আমি বেছে নিয়েছিলাম সেখান থেকে অখ্যাত ঐ প্রাইভেট ভার্সিটি আমাকে বের করে এনে যে নতুন জীবন দিয়েছিল, তাকে ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করে নি।
তাই আজ আমি প্রাইভেট ভার্সিটির ফার্মের মুরগী। কক কক ছাড়া আর কিছুই শিখিনি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।