জ্বলে-পুড়ে মরে ছারখার, তবু মাথা নোয়াবার নয়
বাংলাদেশের শেয়ার বাজার ক্র্যাশ করেছে। মুল্য হ্রাসের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করে ১৯৯৬ এর পর এই প্রথম এত ব্যাপক দরপতন ঘটলো শেয়ার বাজারে। গত সপ্তাহের শেষদিনে এই হ্রাসের শুরু হয়ে আজও সেটা অব্যাহত ছিল। অব্যাহত ছিল সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আতংক আরও প্রলম্বিত হওয়া।
১৯৯৬ এর ঘটনা যাদের জানা নেই কিংবা ভুলে গেছেন তাদের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি, কতিপয় অসাধু ব্যক্তির কারসাজিতে বিভিন্ন কোম্পানীর শেয়ারের দাম মাটি থেকে আকাশে উঠানো হয়েছিল এবং তারপর একদিন হঠাৎ করেই সেই মুল্য মাটিতে নেমে এসেছিল।
ফলশ্রুতিতে সর্বশান্ত হয়েছিল অসংখ্য বিনিয়োগকারী। বাজার সেই অবস্থান থেকে অনেকটা ঘুরে দাঁড়িয়েছিল। ফিরে এসেছিল স্বাভাবিক অবস্থায়। সাধারণ মানুষের আস্থা ফিরে পাচ্ছিল এটি এবং তারা আগের যে কোন সময়ের তুলনায় উৎসাহী হচ্ছিল এখানে বিনিয়োগ করতে।
কিন্তু এই মাসের শুরু থেকেই বাজার অস্থির হয়ে উঠতে থাকে এবং সবশেষে গত বৃহস্পতিবারে এটি জাস্ট ক্র্যাক করে।
এবং এর পেছনে যে প্রতিষ্ঠানটি এবং একমাত্র যে প্রতিষ্ঠানটি দায়ী সেটি হচ্ছে শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রণকারী কর্ত্তৃপক্ষ খোদ এসইসি।
গত ১ মাস ধরেই তারা নতুন নতুন নিয়ম জারি করতে থাকে বাজারকে নিয়ন্ত্রণের জন্য। আমি নিজেও স্বীকার করছি এসইসি যা করেছে এবং যা করছে সেটা সাধারণ বিনিয়োগকারীকে নিরাপত্তা দেবার জন্যই। যেভাবে বাজারে ফাটকাবাজি ঢুকে পড়ছিল তা থেকে বাজারকে বের করে নিয়ে আসাটা অত্যন্ত জরুরী ছিল। তাদের এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবীদার, যা আরও আগেই নেয়া উচিত ছিল।
কিন্তু কথা হলো, তারা অনেক গুলো সিদ্ধান্ত খুব অল্প সময়ের ভিতরে নিয়ে ফেলেছে যার ফল হয়েছে নেতিবাচক। তাদের দ্রুত সিদ্ধান্তের সাথে বাজারকে খাপ খাইয়ে নেবার সুযোগ দেয়া হয়নি। এই সমস্ত সিদ্ধান্তগুলোর জন্য গত কয়েকদিনে বাজার বেশ কয়েকবার পতনের মুখোমুখি হয়েছে। সর্বশেষ এই ধরাশায়ী অবস্থাটা হলো বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সিদ্ধান্তের কারণে।
সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে এসইসির আরও সাবধান হওয়া উচিত ছিল, আরও দায়িত্ববান হওয়া দরকার ছিল।
এক লাফে গাছে উঠতে গিয়ে তারা যে সর্বনাশটা ঘটালো তার দায়ভার তাদের উপরেই বর্তায়। শুধু তাই নয়, তাদের এসব সিদ্ধান্তের মধ্যে কয়েকটি আছে হাস্যকর, যা অচিরেই অকার্যকর হিসেবে দেখা দিতে পারে।
তাদের এইসব নীতিমালা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতংকের সৃষ্টি করেছে। যার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ফল হতে পারে সুদূরপ্রসারী। বাজার কখন কিভাবে আবার মেরুদন্ড সোজা করতে পারে সেটাই এখন দেখার বিষয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।