অন্তরালের মানুষ
সমকালের প্রথম পাতায় 'রিপার মহাবিপদ' সংবাদটি পড়ে ব্যাথিত হলাম। আইনের লোকদের বেআইনী কাজ আমাদের হতভাগা দেশে নতুন নয়। যুগে যুগে কালে কালে আমাদের দেশের পুলিশের দামাল ছেলেরা অনেক বিচার বর্হিভূত হত্যা, লুন্ঠন, ধর্ষন করে অনেক ক্ষেত্রে ৭১'র রাজাকার আলবদরদের ও হার মানিয়েছেন। কিন্তু আমরা এর আর পুনরাবৃত্তি দেখতে চাইনা।
ঘটনার নায়ক গুলশান থানার এসআই আসিস।
হ্যাঁ আপনাকেই বলছি, হয়তো আমার কন্ঠ এত বড় নয় যে আমার এ শব্দ আপনার কান পর্যন্ত পৌছাবে, অথবা অন্যায়ের পাথরে ঘষা খেতে খেতে আপনার কানের গহ্বরই ছোট হয়ে গেছে। একজন সাধারন মানুষ, একজনের বোনের ভাই, একজন মায়ের সন্তান, একজন পিতার পুত্র, কিছু মানুষের বন্ধু হতে আজ আপনি এসআই হয়েছেন। পুলিশের পোষাক পড়ে অতীত জীবনের কথা ভুলে যাবেন না। হয়তো আপনারও রিতার মত একটি বোন আছে, হয়তো নেই। আপনার অন্যায় চাওয়ার কাছে কারও বোনের হাতের মেহেদীর রং মুছে যাবে, কারও সন্তান অকারনে কষ্ট পাবে আর আপনি শান্তিতে ঘুমোবেন, এটা কিন্তু পারবেন না।
নিজেকে যতই সামলানোর চেষ্টা করুন রাতের আধারে আপনার অপকর্মগুলো আপনাকে তাড়া করে বেড়াবে। এটা রাতের তারার মত ধ্রুব সত্য। আপনার সন্তান আছে, স্ত্রী আছে। পেশাগত জীবনে অনেক পুলিশ অফিসারের সাথে আমার একটু আধটু কথা বলার বা তাদের ব্যাক্তিগত জীবনের গল্প শোনার সুযোগ হয়েছে। আপনাদের মত যারা অর্থের জন্য মনুষ্যত্ব হারিয়ে ফেলেছে তাদের কিন্তু শেষ জীবনে কিছুই নিয়ে যেতে পারেননি।
পারেননি সন্তানদের ভালো করে মানুষ করে যেতে, পারেননি ভালো ভাবে পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকতে। আপনার অন্যায় পথে অর্জিত অর্থ অন্যায় পথেই ব্যায় হবে এটাই প্রকৃতির নিয়ম। আপনি কি করে নিশ্চিন্ত হবেন আপনার অন্যায় পথে অর্জিত অর্থ দিয়ে আপনার বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া সন্তানটি নেশা গ্রহন করছেনা, আপনি কিভাবে নিশ্চিত হবেন আপনার অবৈধ অর্থ আপনার স্ত্রী খারাপ পথে ক্লাবে উরাচ্ছে না, আপনি কি করে নিশ্চিত হবেন অবৈধ অর্থের পাহাড় আপনার একটি মাত্র বড় রোগ হলে বালুঘরের মত উড়ে যাবেনা।
জীবনের ব্যাক্তিগত কিছু অভিজ্ঞতা হতে দেখেছি, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় বেলায় অবৈধ অর্থ অর্জনকারী আপনাদের সন্তানেরা ভালো মানুষ হতে পাড়েনি। অনেক ক্ষেত্রেই ভালো কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ঠাই হয়নি।
আর হলেও আপনাদের অর্জিত অবৈধ অর্থ তারা অবৈধ খাতেই খরচ করেছে সন্দেহাতীতভাবে। আবার আপনাদের এমনও অনেক অফিসারের সাথে সাক্ষাৎ হয়েছে যাদের দুই সন্তানই হয়তো ডাক্টার এবং ইঞ্জিনিয়ার। সুতরাং এই অর্থনেশার হোলিখেলা বন্ধ করুন। রিপার হাতের মেহেদীর রং মুছে ফেলবেন না। কারন আপনার কন্যাটির হাতের মেহেদীর রং ও যে মুছে যাবেনা তার কিন্তু কোন নিশ্চয়তা নেই।
আসলাম শেখকে মুক্তি দিন।
(লেখক-ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।