বিকট
আমাদের কারো চোখ শঠতা করেনা। আমারটাও না। আমরা চোখ মেললেই ঝলমলে সৌন্দর্য দেখতে পাই। সুখ আর সৌন্দর্যের সংমিশ্রণে আমাদের জীবন হয়ে ওঠে অর্থপূর্ণ। প্রতিদিন সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই আমরা একে অপরের খোঁজ নিতে উদগ্রীব হয়ে উঠি।
আমাদের সৌন্দর্যপিপাসু চোখ একে অপরকে দেখে তৃপ্ত হয়। কারো চোখ শঠতা করেনা। কড়ায় গন্ডায় আদায় করে নেয় বেঁচে থাকার যাবতীয় রসদ। আমরা, একদল চোখসর্বস্ব সুন্দর মানুষ।
আমাদের ক্রমশঃ সুন্দর হয়ে ওঠা কোন প্রাকৃতিক দৈবঘটনা নয়।
যেমন হঠাৎ করেই বৃষ্টির ধূর্ত পরশে সবুজ হয়ে ওঠে, খুশী হয়ে ওঠে ফসলের ক্ষেত আবার কিছুদিন পরেই সূর্যের প্রবল উত্তাপে কাঠের মত শক্ত আর নির্জীব আর বিষণ্ণ হয়ে ওঠে, সেরকম কিছু নয়। প্রকৃতপক্ষে, সুন্দর হয়ে ওঠার জন্যে নিরলস সাধনাই আমাদেরকে একটি উন্নততর প্রজাতিতে রুপান্তরিত করেছে। আমরা চটকদার সাজে সজ্জিত হয়ে আমাদের কর্মস্থলে যাই। একে অন্যের সৌন্দর্য দেখে বিস্মিত হই এবং বাহবা দেই। আমাদের মধ্যে প্রতিনিয়ত প্রতিযোগীতা চলে সৌন্দর্যে একে অপরকে অতিক্রম করে যাওয়ার।
এ এক চমৎকার এবং সুস্থ প্রতিদ্বন্দীতা।
আমাদের সৌন্দর্য বা সৌন্দর্যের প্রতিযোগীতা শুধু দেহের গন্ডিতেই আবদ্ধ রাখিনি আমরা। পশ্চিম থেকে ঝাঁ চকচকে গাড়ি, বা মধ্যপ্রাচ্য থেকে কারুকারযময় কার্পেট আর বর্ণিল ঝাড়বাতি, আমাদের সাজঘর এবং গ্যারেজকে তাৎপরযপূর্ণ করে তোলে। আমরা প্রতীক্ষায় থাকি কারো এরকম আনন্দদায়ী ঘটনা ঘটলে তা জানার জন্যে। আমাদের চোখ তৃষিত থাকে সৌন্দর্য অবলোকনের অভিপ্রায়ে।
একে অপরের সাথে পাল্লা দিয়ে প্রতিটি ঘরই সৌন্দর্যের দীপ্তিতে উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। সেই সাথে শহরটাও। শহরটা অবশ্য এখনও পুর্ণাঙ্গ সুন্দর হতে পারেনি। তবে আমাদের চোখ শঠতা করেনা। সযতনে এড়িয়ে যায় যাবতীয় অসুন্দরকে।
আমরা, একদল সুন্দর, সুখী এবং গর্বিত মানুষ।
তবে সেদিন একটা অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটে গেল হঠাৎ করে। আমাদের এক প্রতিবেশিনী নিত্যদিনকার মত সাজতে গিয়ে, সুন্দর হতে গিয়ে ভুলবশত ভুরু কাটতে গিয়ে নিজের চোখটাই গেলে ফেলল। তার পরিত্রাহী এবং অসৌজন্যমূলক চিৎকারে আমরা খুব বিরক্ত হচ্ছিলাম। কারণ, আমরা সৌন্দর্যপিপাসু সম্প্রদায় এরকম কর্কশকন্ঠে মৃত্যুচিৎকার বরদাস্ত করতে পারিনা।
সে চিৎকার করে চলে,
"ওরে বাবারে! মারে! মইরা গেলামরে! আমারে বাঁচা তোরা"
"এসব কি ধরনের ভাষা!" উষ্মা প্রকাশ করে একজন।
চিৎকার করতে করতে মহিলার গলা ভেঙে যায়। আর আমাদের মধ্যে অস্বস্তি বাড়তে থাকে। আমরা মোটেও অভ্যস্থ না এমন আচরণে।
চিৎকার করতে করতে তার কন্ঠনালী বিদীর্ণ হয়ে যায় এবং সে নেতিয়ে পড়ে।
এবার আমরা স্বস্তির শ্বাস ফেলি। উৎকট চিৎকারটা সহ্য করা দুরূহ হয়ে যাচ্ছিলো। আমরা এবার তাকে শেষবারের মত সাজাতে প্রস্তুত হই। বালিকা এবং তরুণীরা শৈল্পিকতা বজায় রেখে পরিমিত পরিমাণ ক্রন্দনের মাধ্যমে সুন্দরভাবে শোক প্রকাশ করে। বয়স্করা গম্ভীরভাবে মৃত্যুসংক্রান্ত দার্শনিক বুলি আওড়ায় এবং মৃত্যুপরবর্তী আনুষ্ঠানিকতার পরিকল্পনা করতে থাকে।
সেদিন বিকেলে চমৎকার একটা শেষকৃত্য অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয় সাফল্যের সাথে। আমরা অনুষ্ঠানের সাথে মানানসই পোষাক পড়ে আসি এবং অনুষ্ঠান চলাকালীন সময়ে নীচুলয়ে কথা বলি। আমরা বাড়ি ফিরি উল্লসিত হয়ে, চমৎকারভাবে অনুষ্ঠানটি শেষ করতে পারার আনন্দে।
বাড়ি ফিরে আমরা অনুপস্থিতকালীন সময়ে জমা হওয়া ধূলোবালি ঝেড়ে ফেলি কার্পেট এবং অন্যান্য মূল্যবান আসবাব থেকে। কেউ কেউ ফিরতি পথে কেনা নতুন গৃহসজ্জার সামগ্রীগুলো বিন্যাস করে।
আমাদের শহর এবং ঘরগুলো আবারও সুন্দর এবং সুখী হয়ে ওঠে।
আমাদের শহরে বিনোদনের কেন্দ্র হিসেবে রয়েছে একটি প্রেক্ষাগৃহ। আমরা কর্মক্লান্ত সপ্তাহের শেষে সেখানে জমায়েৎ হই। প্রেমিক প্রেমিকারা আসে জোড় বেঁধে। অবশ্য সৌন্দর্যের পরমতা বিরাজ করে যে শহরে, সেখানেতো সবাই সবার প্রেমিক বা প্রেমিকা!
জোড় বেঁধে পাশাপাশি বসে থাকে উঠতি বয়সী তরুণ-তরুণী।
তারা চুমু খায় একে অপরকে।
জোড় বেঁধে বসে থাকে চতুর ব্যবসায়ী আর তার বিদেশী বিনিয়োগকারী। তারা আলিঙ্গনে বাঁধে একে অপরকে।
পাশাপাশি বসে থাকে বিগতযৌবণা প্রসাধনোচ্ছল নারী তার তরুণ বহুগামী অনুরাগীর সাথে। এরকম নানাবিধ সৌন্দর্যের ফুল ফোটে অন্ধকার প্রেক্ষাগৃহে।
আজকে নাকি একটা ভিন্নধর্মী চলচ্ছিত্র দেখানো হবে। পোস্টারে উল্লেখ ছিলো। প্রেক্ষাগৃহে প্রবেশের সময় টিকিটচেকার বেশ আগ্রহভরে জানিয়েছিলো। আমরা সাগ্রহে বসে থাকি অভূতপূর্ব কিছু দেখার জন্যে। বিজ্ঞাপনচলাকালীন সময়ে কেউ কেউ প্রসাধনকক্ষে গিয়ে তার সাজসজ্জা ঠিক করে নেয়, কেউ চুমু খেতেই ব্যস্ত থাকে।
অবশেষে শুরু হয় আমাদের সপ্তাহান্তের বিনোদনপর্ব। বড়পর্দার দিকে অজস্র সৌন্দর্যপিয়াসী চোখ তাকিয়ে থাকে। একটু পর শুরু হয় ব্যতিক্রমধর্মী সেই চলচ্চিত্রটি। চলচ্চিত্রটি ছিলো সম্পূর্ণ কাল্পনিক এবং নাটকীয়তায় ভরপুর। সেখানে হার জিরজিরে শিশু, চর্মরোগাক্রান্ত পুঁজ এবং পতি গন্ধময় বৃদ্ধ শরীর, রাস্তায় পড়ে থাকা গলাকাটা লাশ এবং ধর্ষিতা কিশোরীদের করুণ মুখের স্থিরচিত্র দেখানো হয় প্রথমে।
আমাদের আলো ঝলমলে সুন্দর শহরে এসবের কোন অস্তিত্ব নেই বিধায় অলৌকিক এবং অবাস্তব এসব দৃশ্যকল্প সঠিকভাবে নির্মাণের জন্যে আমরা পরিচালকের সৃজনশীলতা এবং প্রখর কল্পনাপ্রবণ মনের প্রশংসা করি। স্থিরচিত্র শেষে যখন চলমান নৃশংসতা দেখানো শুরু হয়, আমরা পরস্পরকে চুম্বন এবং দলিতমথিতকরণ থেকে বিরত হয়ে উত্তেজনায় মেরুদন্ড টানটান করে বসি। আমাদের চোখ শঠতা করেনা কখনও। এসব ভয়াবহ সহিংসতা সইয়ে নেয় খুব সহজেই। বিনোদনের এক নতুন ধারা ঊন্মোচিত করার জন্যে পরিচালকের পুরস্কার প্রাপ্য বলে মতামত ব্যক্ত করি।
তবে আমাদের কেন যেন মনে হয় এসব ঘটনা আমরা আগেই কোথাও দেখেছি, বাস্তবে। কিন্তু এর পেছনে কোন গ্রহণযোগ্য যুক্তি খুঁজে না পাওয়ায় তা নাকচ করে দিই। প্রেক্ষাগৃহ থেকে বের হই আমরা আনন্দের অনুভূতি নিয়ে। কোমল হৃদয়ের কেউ কেউ বিষাদাক্রান্ত হবার অভিব্যক্তি প্রকাশ করে, তবে তার সঙ্গী বা সঙ্গিনীর প্রথাগত সান্তনা এবং আদরে তা সাথেসাথেই ভুলে যায় প্রথাগতভাবেই।
সন্ধ্যার শহরে জ্বলে ওঠে নিয়ন আলো।
আমাদের সৌন্দর্য এবং উৎসবের প্রিয় শহর!
আজ রাতে সিনেমা দেখে বাড়ি ফেরার পথে আমি ছিলাম সঙ্গিহীন। এ ঘটনাটা অদ্ভুৎ বটে! আমার পাশে বসে ছিলো যে তরুণীটি, যার সাথে আমি ঘন্টাতিনেক আমাদের কর্মস্থলের সুন্দর সুন্দর ফাইলপত্র, ঊর্ধ্বতনের অপূর্ব গলা খাকারি, পবিত্র কাগজ, যা আমাদের সৌন্দর্যের যোগান দিয়ে যায় আর পরস্পরের ঘরদোরের নতুন আসবাবপত্র নিয়ে প্রেমময় আলাপ করছিলাম। আমি তার সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়ে নতুন আসবাব হিসেবে তাকে ঘরে সাজিয়ে রাখার কথাও ভেবেছিলাম। কিন্তু সে প্রস্তাবটা দেবার পর যখন আমরা সম্মত হয়ে শততম চুম্বনটা দিতে যাই, চুম্বনের চুম্বক প্রাবল্যে তার একটি নকল দাঁত খসে পড়ে। ফলে সে কিছুদিনের জন্যে ব্রাত্য হয়ে যায় আমাদের সমাজে।
ঘটনাটা অনুধাবন করার মত মানসিক পরিপক্বতা আমাদের দুজনেরই ছিলো বলে এখন আমি একা হাঁটছি, আর সে প্রাণবাজী রেখে দৌড়োচ্ছে দন্ত চিকিৎসকের দপ্তরে।
একা একা হাঁটতে আমার একটু বিরক্তই লাগে। হাঁটতে হাঁটতে আনমনা হয়ে আমি শহরের নির্জন এক প্রান্তরে এসে উপস্থিত হই। এখানে আগে কখনও আসিনি। এই এলাকাটা বড়ই মলিন আর জরাজীর্ণ।
মোটেও সুন্দরনা। কৃত্রিম আলো নেই। মোমবাতি জ্বলছে ঘরগুলোতে। রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো, হুল্লোড় করা মানুষগুলোও মলিন আর ভদ্রাতাজ্ঞানহীন। তারা উচ্চস্বরে কথা বলে, আর হাসে।
আমার দিকে ঈর্ষার চোখে তাকায়। সৌন্দর্য দেখে অভ্যস্ত নয় তো তারা!
হঠাৎ কোন এক প্রান্ত থেকে মিষ্টি সুরে এক কিশোরী গান গেয়ে ওঠে। এরকম অপার্থিব সুর, এরকম অপার্থিব সুন্দর সুর আমি আগে কখনও শুনিনি। আমি সুরের উৎসস্থল খুঁজতে পাগলের মত ছুটতে থাকি। এবড়ো থেবড়ো রাস্তায় আমি হোঁচট খাই, আমার জুতোর শুকতলা বিদীর্ণ হয়ে যায়, ছিড়ে যায় দামী পোষাক।
এসব দেখে বিদ্রুপাত্মক মন্তব্য ছুড়ে দেয় লোকগুলো। উচ্চস্বরে হেসে ওঠে তারা। কিন্তু কোন কিছুই সেই সুরকে ছাপিয়ে যেতে পারেনা। সুরের টানে আমি ছুটে চলি, কিন্তু কথাগুলি বুঝতে পারিনা মোটেও। এর মর্মোদ্ধার আমাকে করতেই হবে।
তাই আমি পাগলপারা হয়ে ছুটতেই থাকি...
এই শহরে যে সমুদ্র ছিলো তা আমার জানা ছিলোনা। আমরা আমাদের এ্যাকোরিয়ামগুলো নিয়ে বেশি ব্যস্ত ছিলাম। তাই সমুদ্র তৈরী করতে পারিনি। অথচ শহরের এ প্রান্তের দরিদ্র এবং অসুন্দর মানুষগুলো কি চমৎকার এবং বিশাল একটা সমুদ্র বানিয়ে রেখেছে! বাতাসের কি তান্ডব এখানে! আর কি ভীষণ গর্জন সমুদ্রের! তবে সব কিছু ছাড়িয়ে সেই সুর। প্রবল বাতাসের বাধার কারণে আমি তার কাছে যেতে পারিনা।
বাতসের ঝাপটায় বারবার উল্টে পড়ি। তাই আমি দূর থেকেই চিৎকার করে বলি,
"এই মে.......য়ে এই! গানের কথাগুলো আমাকে একটু বুঝিয়ে বলবে? কিচ্ছু বুঝতে পারছিনা"
মেয়েটি আমার দিকে তাকিয়ে হাসে এবং সম্মতির মাথা নাড়ে। সে আমার কথা বুঝেছে। কিন্তু সে যখন গান থামিয়ে চিৎকার করে কিছু বলে, আমি কিছুই বুঝতে পারিনা। বাতাসের ধাক্কায় শব্দগুলো সমুদ্রে পড়ে যায়...ভেসে যায়।
আমি দেখি চেয়ে চেয়ে শব্দগুলোকে। ভেসে যাচ্ছে। আমি পড়তে পারি, কিন্তু বুঝতে পারিনা অর্থগুলো।
মায়া
আবেগ
ভালোবাসা...
আরো কি কি যেন! শহরের এই প্রান্তের সমুদ্রে কত কিছুইনা মিশে আছে, আমি ভাবি। নিজেকে, নিজেদেরকে খুব অক্ষম মনে হয়।
আমরা একটা সমুদ্র বানাতে পারলামনা! আমি তার দিকে তাকিয়ে আবার চিৎকার করি। কিন্তু তার প্রত্যুত্তর আবারও বুঝতে ব্যর্থ হই। অগত্যা মেয়েটি, বুদ্ধিমতী মেয়েটি চমৎকার উপস্থিত বুদ্ধির পরিচয় দিয়ে কাগজে কিছু একটা লিখে, সম্ভবত গানের কথাগুলোই, একটা নুড়িপাথরে বেঁধে আমার দিকে ছুড়ে দেয়। তারপর সুন্দর করে হেসে নাচতে নাচতে অদৃশ্য হয়ে যায় দূরে কোথাও। দৃষ্টিসীমার বাইরে।
মেয়েটি ছিলো সুন্দর! প্রেক্ষাগৃহে আমার পাশে বসা মেয়েটিও সুন্দর ছিলো। আমার এই হতশ্রী অবস্থাতেও কেন যেন সৌন্দর্যের ব্যাপারে আমার প্রাক্তন দর্শনের কথা ভেবে হাস্যউদ্রেক হয়। আমি প্রকৃত সৌন্দর্যের দেখা পেয়ে সুখের অনুভূতি নিয়ে ফুরফুরে মনে বাড়ি ফিরি।
কাগজটা খুলে দেখি। আমার চেনা ভাষাতেই লেখা।
কিন্তু মানে বোঝা যায়না। দুর্বোধ্য। অপার্থিব সেই সুরটা ভাঁজতে ভাঁজতে আমি অভিধান নিয়ে বসি। শব্দগুলোর পাঠোদ্ধার করার চেষ্টা করি। আমি শব্দগুলো খুঁজে চলি।
কিন্তু পাইনা কোনভাবেই। অভিধান অভিযাত্রা এভাবে ব্যর্থ হবে! কোথায় হারালো শব্দগুলো? এরকমতো হবার কথা না। এত দাম দিয়ে কেনা সুন্দর একটা অভিধান... আমি আরো নিবিষ্ট মনোযোগ দিই। কিন্তু একসময় যে গানের সুরটা ভাঁজছিলামতাও ভুলে যাই। সুর, শব্দ সব হারিয়ে আমি মুক ও বধির হয়ে যাই।
বড় বিপন্ন অনুভব করি। সেসময় উপস্থিত হয় দন্তবিড়ম্বনায় পড়া আমার সান্ধ্যপ্রেমিকা। সে নতুন দাঁত লাগিয়ে মহাউৎসাহে ছুটে এসেছে। সে এখন সুন্দর এবং উচ্ছসিত। আমাকে মোহিত করার উদ্দেশ্যে সে মদির হাসি দেয়।
কিন্তু মুক ও বধির আমি কিছুই বলতে পারিনা। উপরন্তু তাকে আমার বিকট এবং বিভৎস লাগতে থাকে। আমি সৌন্দর্য খোঁজার প্রাণপন চেষ্টা করি। কিন্তু কিছুতেই পারিনা। প্রেমিকা, বসার ঘরের সাজসজ্জা, ঝাড়বাতি সবকিছুই কেন যেন ঘোলাটে হতে থাকে।
আমি অন্ধ হয়ে যাই। আমার চোখ শঠতা করে বসে।
*****************************************
কিন্তু তাতে কি! অন্ধকারে একা বসে থাকতে থাকতে আমি আবার স্মরণ করতে পারি সেই সুর, মনঃশ্চক্ষে ভাসে সেই সমুদ্দুর আর কিশোরীর মুখ।
অসুন্দর এই আমাকে আমাদের সৌন্দর্যনগরী থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। আমি এখন শহরের ওই প্রান্তে সমুদ্রের পাশে বসে দূর থেকে ভেসে আসা সেই অচেনা সুর শুনি।
আহা! এই তো সুখের জীবন!
## এই গল্পটি লেখার প্রেরণা প্রিয় সিনেমা La dolce vita'র একটা দৃশ্য।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।