আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সরকারের নীতিমালাঃ মেয়াদী সঞ্ছয়পত্র

সাহাদাত উদরাজী www.udrajirannaghor.wordpress.com

প্রতিটি বিষয়ে সরকারের কিছু নীতিমালা বা সিদান্ত থাকে। সে নীতিমালার আলোকে সরকার পরিচালিত হয়। আর নীতিমালা গুলো বানানো হয় সে দেশের মানুষ কে সামনে রেখে। অর্থাৎ মানুষের মঙ্গলের জন্য অথবা মানুষকে সুষ্ট ভাবে পরিচালিত করার জন্যই এসব নীতিমালার প্রযোজন। সরকার যখন একটি নীতিমালা বানান তখন তার পিছনে অনেক গবেষনা থাকে, কি লাভ, কি ক্ষতি হতে পারে তার সবই চুল চোরা বিশ্লষন থাকে।

এত সব কিছু পাশ করে তবেই একটি নীতিমালা জনগনের সামনে আসে। মানুষ তা মানতে বাধ্য হয়। মানুষ তখন ওই নীতিমালার ভুল খুজে পায় না। যে কোন নীতিমালা যখন সরকার বাস্তবায়ন করতে যায়, তখন তা জনগনকে বুঝিয়ে দেওয়া হয় এবং আমার মনে হয় এটাই সভ্য সমাজের রীতি। যাক, মনের দুঃখে উপরের কথা গুলো বলছি।

আপনারাও যে দেশের নাগরিক আমি সে দেশের। আমাদের দেশের সরকার যখন কোন বিষয়ের উপর একটা নীতিমালা বা সিধান্ত বানান, আমার মনে হয় না এর পিছনে থাকে কোন গবেষনা! অনেক বিষয়ে এমন দেখেছি। আজ সকালের একটা সরকারী সিদান্ত বা নীতিমালা দেখে আমার কাছে এ বিষয়টা আরো পরিস্কার হলো। আমরা কোন নরকে আছি? আমাদের সরকার আছে কি? আমাদের সরকার কি আমাদের মত সাধারন মানুষের কথা ভাবেন? নানাবিধ। মনটা কস্টে ভরে যায়।

হায় আমার প্রিয় দেশ! কাজের কথায় আসি। আমার একটা কম টাকার 'তিন মাস মেয়াদী সঞ্ছয় পত্র' আছে। প্রতি তিন মাস পর পর আমি এর ইন্টারেস্ট তুলি এবং সংসার চালাই। আমি যা বেতন পাই তাতে আমার সংসার চলে না। জমানো এ টাকার ইন্টারেস্ট দিয়ে কোন মতে টিকে আছি।

(আমি দুঃখিত - ইন্টারেস্ট নেয়ার জন্য, আমাদের ধর্মে এটা মনে হয় হারাম, তবু আমি অপরাগ, উপায় নাই গোলাম হোসেন অবস্থা) এ টাকা গুলো আমার অনেক কস্টে জমানো, সহজে হাত ছাড়া করতে ইচ্ছে হয় না। বুড়োকালের কথা ভেবে জমিয়ে রেখেছি। কে কাকে দেখবে! টাকা গুলো দিয়ে শেয়ার কিনবো কিনবো করেও সাহস হয় না। না জানি আবার আমও যায়, চালাও যায়। আমি এ টাকার একান্ত নিরাপত্তার কথা ভেবে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে 'তিন মাস মেয়াদী সঞ্ছয় পত্র' কিনেছি।

আমার মত এমন হাজারো কস্টে থাকা মানুষ গুলো আমি দেখে আসছি আজ অনেক বছর। খুব একটা চোকষ চোহারার লোকের দেখা মিলা ভার। মাঝ বয়সি, রিটায়ার্ড় বৃধ ও মহিলাদের আনাগোনাই বেশী। সঞ্ছয়পত্রটি জমা দিয়ে টোকেন নিয়ে বসে থাকেন ঘন্টার পর ঘন্টা। হাজারো (!) টেবিল ঘুরে ব্যাংক এর নিচ তলা থেকে নুতন টাকা নিয়ে ফিরে যান।

আমার মনে হয় ও দিন ওনারা আর কোন কাজ করতে পারেন। আজ সকালে এ মুখ গুলোকে আমার কাছে আরো মলিন মনে হয়েছে। কারন বুঝতে পেরেছি আমি আমার টাকা হাতে পেয়ে। ইন্টারেস্ট থেকে ১০% টাকা কেটে রাখা হয়েছে! হায় রে সরকার! হায় তার নীতিমালা! এ কেমন কথা, এ কোন রাজ্যে আমাদের বসবাস! আমি যে নীতিমালা দেখে আজ থেকে ১ বছর আগে তিন বছর মেয়াদী সঞ্ছয় পত্র কিনেছি তার নীতিমালা আজ উলটে গেল। আমি তিন বছর এ ভাবে পাব - এ দেখেই তো কিনেছিলাম।

আমার চুক্তি তো এমনই ছিলো। মাঝ পথে সরকার এমন করবে, হবে জানলে আমি হয়ত কিনতাম না। আমার সংসার চালানোর টাকা আবার কমে গেল! আজ সকালের মানুষ গুলোর চোহারা দেখে সত্যি খারাপ লাগলো। আমি নিজেও কস্ট পেলাম। এটা অন্যায়।

যার সাথে যে চুক্তি সে মত দিয়ে দিন। যদি নুতন নীতিমালা কিংবা সিদান্ত থাকে তবে তা নুতন যারা কিনবে তাদের জন্য কার্য্যকরী করুন। এটাই সুন্দর এবং বাস্তব। (নীতি নিধারকদের জানাতে চাই, আপনারা চিরকালের জন্য নয়!)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.