সম্পাদনা করি আমিরাত-বাংলা মাসিক মুকুল। ভালবাসি মা, মাটি ও মানুষকে..
সিলেটের এক ঐতিহ্যবাহী উপজেলা আমাদের বিয়ানীবাজার। মুক্তিযুদ্ধে এ উপজেলার মানুষের রয়েছে গরীয়ান ঐতিহ্য। এখনকার শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে সংগঠকের ভূমিকা পালন করেছেন। তার সেই উপজেলায়আজ শহীদ সমাধিতে টেলিটক টাওয়ার।
‘জিয়ারতে গিয়ে দেখি বাবার বুকের উপর টাওয়ার’-মাহতাব
একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে বড়লেখা উপজেলার শাহবাজপুর অঞ্চল শত্র“ দখল মুক্ত করে স্বাধীন চেতনায় দেশের মাটিতে বাংলার মানচিত্র খচিত পতাকা উড়াতে গিয়ে যিনি পাক হানাদার বাহিনীর বুলেটের আগাতে ক্ষতবিক্ষত হয়ে লুটিয়ে পড়েছিলেন সেই বীর সেনা শহীদ মুক্তিযোদ্ধা হাবিলদার কুতুব উদ্দিনের সমাধির উপর দাড়িযে আছে সরকারি মালিকানাধীন মোবাইল ফোন কোম্পানি টেলিটকের বিশাল টাওয়ার।
অমানবিক এই ঘটনাটি ঘটেছে বিয়ানীবাজার উপজেলার লাউতা ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে। অভিযোগ উঠেছে উক্ত পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে সম্পূর্ণ বিধিবহির্ভূতভাবে এই টাওয়ারটি স্থাপনের অনুমোদন দিয়েছেন।
স্বাধীন-সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্র গঠনের প্রত্যয়ে যিনি নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন দেশ-মাতৃকার তরে সেই অকোতভয় বীর সৈনিক কি কখনো ভেবেছিলেন জীবন উৎসর্গ করে যেয়েও স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে তাঁর হাঁড়-কংকাল গুলো নিরাপদে থাকার জন্য একমুঠো মাটি ভাগ্যে জুটবে না। ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণ তথা সরকারি জায়গা নিরাপদ স্থান ভেবে সহযোদ্ধারা একদিন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা হাবিলদার কুতুব উদ্দিনকে যেখানে সমাহিত করেছিলেন সেই নিরাপদস্থলের সমাধিটি অর্থের বিনিময়ে হয়ে উঠবে বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান!
বর্তমান তথা নতুন প্রজন্মকে একাত্তরের চেতনায় উদ্বেলিত করে তুলতে রাষ্ট্র যেখানে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি রক্ষার্থে পাকিস্তান থেকে মুক্তিযোদ্ধা বীর শ্রেষ্ট হামিদুর রহমান, বীর শ্রেষ্ট্র মতিউর রহমান’র দেহাবশেষ এনে দেশের মাটিতে সমাহিত করে শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন করছে সেই লাল-সবুজের দেশে কী করে কোন ক্ষমতা বলে শহীদ বীর সেনা হাবিলদার কুতুব উদ্দিনের সমাধিতে বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের টাওয়ারটি স্থাপনের অনুমোদন পেল! এ প্রশ্ন এখন সাধারণ মানুষের।
প্রশ্ন উঠেছে, তিন তিনবারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি আব্দুল জলিল নিজেই শহীদ কুতুব উদ্দিনের সহযোদ্ধা হয়েও কী করে তাঁর সহযোদ্ধার সমাধির উপর এই টাওয়ার স্থাপনের অনুমতি দিলেন। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাসহ সুশীল সমাজের চোখে মুখে কেবল একই প্রশ্ন-তবে কী রক্তে কেনা স্বাধীনতা তথা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি এভাবে টাকার বিনিময়ে বিক্রি হয়ে যাবে।
শহীদ মুক্তিযোদ্ধা হাবিলদার কুতুব উদ্দিন (৪০)-’র বাড়ি বিয়ানীবাজার উপজেলার লাউতা ইউনিয়নের গোলাটিকর গ্রামে। তিনি দেশের মানুষের মুক্তির সংগ্রামে পাকিস্তান ইপিআর হাবিলদার পদ থেকে চাকুরি ছেড়ে মুক্তিযুদ্ধের চার নম্বর সেক্টরের বারপুঞ্জির অধীনে মুক্তিবাহিনীর প্লাটুন কমান্ডার হিসেবে যোগ দান করেন। হাবিলদার কুতুব উদ্দিন ছিলেন দুই সন্তানের জনক।
সরেজমিন প্রতিবেদনকালে টাওয়ার স্থাপন প্রসঙ্গে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের অভিমত জানতে চাইলে, তাঁদের ভেতর চাপা ক্ষোভ ও কষ্ট লক্ষ করা যায়। টাওয়ার স্থাপনকালে প্রতিবাদ করে ছিলেন কিনা এমন প্রশ্নোত্তরে তাঁরা অনেকেই অকপটে স্বীকার করলেন চেয়ারম্যানের ক্ষমতার দাপট। তাদের ভাষায়, ‘ইচ্ছে থাকা সত্বেও চেয়ারম্যান আব্দুল জলিলের ক্ষমতার ভয়ে মুখ খুলিনি। ’ আবার কেউ কেউ পাশ কাটিয়ে গিয়ে বলেন, ‘বহু দিনের পুরনো কথা মনে না থাকায় প্রতিবাদ করতে যাইনি। ’
এ প্রতিবেদকের সাথে একান্ত আলাপচারিতায় শহীদ মুক্তিযোদ্ধা হাবিলদার কুতুব উদ্দিনের সহযোদ্ধা ফলিক আলী বলসহ স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা টেলিটক টাওয়ার উচ্ছেদপূর্বক অনতিবিলম্বে শহীদ মুক্তিযোদ্ধার এই সমাধিকে পূণ্য মর্যাদা দিয়ে সমাধিস্থলকে কমপ্লেক্্ের রপান্তরিত করার জোর দাবি জানান।
তাঁদের বিশ্বাস স্বাধীনতার স্বপক্ষের সরকার এখন ক্ষমতায় অতএব অজ্ঞতাবশত কিংবা অর্থের মানদণ্ডে যেই বিবেচনায় লিজ দেয়া হোক তা বাতিল করে সরকার শীঘ্রই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, সরকারি মালিকানাধীন মোবাইল ফোন কোম্পানি টেলিটক টাওয়ার কর্তৃপক্ষ লাউতা ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্্েরর ভেতরে টেলিটকের নিজস্ব টাওয়ার স্থাপনের জন্য জায়গা ভাড়ার প্রস্তাব দিলে ইউপি চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত না করে কেবল মাত্র ইউনিয়ন পরিষদের সাধারন সভায় রেজুল্যাশনের মাধ্যমে সম্পূর্ণ বিধিবহির্ভূতভাবে টাওয়ার স্থাপনের অনুমোদন দেন। প্রথম ২ বছর দু’হাজার টাকা মাসিক ভাড়া নির্ধারণ করে ১০ বছরের জন্য টেলিটক কোম্পানির সাথে একটি চুক্তিও হয়। ফলশ্র“তিতে ২০০৭ সালে ইউনিয়ন পরিষদের ভেতর তথা শহীদ মুক্তিযোদ্ধা হাবিলদার কুতুব উদ্দিনের সমাধিস্থলের উপর টেলিটক টাওয়ারটি নির্মিত হয়। এবং ঐ সালে যথারীতি কার্যক্রম শুরু করে।
চলতি বছর থেকে টাওয়ার কর্তৃপক্ষ ৫ হাজার মাসিক ভাড়া দেয়ার কথা রয়েছে বলে জানান চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল।
যেভাবে শহীদ হন হাবিলদার কুতুব উদ্দিন : বর্তমান বড়লেখা উপজেলাধীন লাতুর শাহবাজপুর স্টেশনে অবস্থান পাকিস্তানি বাহিনীর, অদূরেই ইপিআর ক্যাম্প। শত্র“ ঘাঁটি আক্রমন করে এই এলাকাকে শত্র“র দখলমুক্ত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করে চার নম্বর সেক্টরের বারপুঞ্জি সাব-সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধারা। ক্যাপ্টেন আব্দুর রব’র নেতৃত্বে ১০ আগস্ট ভোর ৫ টায়-এ অভিযান পরিচালিত হয়। মাত্র কয়েক মিনিটের যুদ্ধাভিযানে মুক্তিবাহিনী দখল করে নেয় শাহবাজপুর।
মুক্তিযোদ্ধাদের জয়বাংলা শ্লোগানের সঙ্গে আকাশে স্বাধীন বাংলার পতাকা উড়িয়ে দিতে কুতুব উদ্দিন পতাকা উত্তোলন করতে যান। এদিকে এলাকার দখল ফিরে পেতে মরিয়া হয়ে বড়লেখা থেকে ছুটে আসে পাক-বাহিনীর বিশাল বহর। সকাল ৭ টার দিকে তারা আকশ্মিকভাবে উপর্যপরি হামলা শুরু করলে মর্টার সেলের আগাতে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে পতাকার নিচেই শহীদ হন কুতুব উদ্দিন। এ যুদ্ধে হাবিলদার কুতুব উদ্দিনসহ ৬ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। অদম্য সাহস আর দুর্জয় শক্তি সত্বেও পাকবাহিনীর অতর্কিত আক্রমনে হাবিলদার কুতুব উদ্দিনসহ অপর শহীদদের লাশ রেখে পিছু হটতে বাধ্য হন সহযোদ্ধারা।
স্বাধীরতার পরবর্তী তথা ’৭২ সালের এপ্রিলে লাতুর চিহিৃত সেই স্থান থেকে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা হাবিলদার কুতুব উদ্দিনের দেহাবশেষর অবশিষ্ট হাড়-কংকাল এনে নিজ গ্রামে জানাযার নামায শেষে লাউতা ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে সমাহিত করা হয়।
সহযোদ্ধাদের কথা : মুক্তিযুদ্ধের চার নম্বর সেক্টরের বারপুঞ্জি সাব-সেক্টরের অধীনে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা হাবিলদার কুতুব উদ্দিনের সাথে ঐদিন যাঁরা যুদ্ধ করেছিলেন তাঁদের কয়েকজনের সাথে এ প্রতিবেদকের আলাপ হয়। আলাপকালে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা হাবিলদার কুতুব উদ্দিনের সহযোদ্ধা লাউতা ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার ফলিক আলী বল জানান ‘দেশ স্বাধীনের পর আমরা কয়েকজন লাতুতে গিয়ে চিহ্নিত স্থান থেকে শহীদ কুতুব উদ্দিনের হাড়গুলো কুড়িয়ে এনে জানাজা করে ইউনিয়ন অফিসের সামনে কবর দিয়েছিলাম। ’ তিনি বলেন ‘আমার স্মৃতি শক্তি এখনো ভোতা হয় নাই, স্পষ্ট মনে আছে বর্তমানে যেখানে টাওয়ার করা হয়েছে এর ঠিক নিচেই শহীদ হাবিলদার কুতুব উদ্দিনের কবর। ’
তিনি অভিযোগ করে ক্ষোভের স্বরে বলেন ‘ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নিজে মুক্তিযোদ্ধা হয়ে একজন শহীদের বুকের উপর কি করে টাওয়ার স্থাপনের মতো একটি অমানবিক কাজ করলেন তা আমার বোধদয় হয়না।
’
তিনি বলেন ‘ টাওয়ার স্থাপনের সময় প্রতিবাদ করেও কোন লাভ হয়নি, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল মন্নানকে বিষয়টি জানালে তিনি বলেছিলেন, চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে টাওয়ার নির্মান বন্ধ করাবেন কিন্তু তিনি কিছুই করেননি। আমরা গরিব মানুষ, সরকার তাদের, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমাণ্ডও তাদের। তাই আমরা ভয়ে জোরালো পদক্ষেপ নিতে পারিনি। ’
অবসর প্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিলদার তোতা মিয়া বলেন ‘লাউতা ইউনিয়ন কমপ্লেক্্র প্রাঙ্গনে এখন যেখানে টেলিটকের টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছে তার ঠিক নিচেই কবর দেয়া হয়েছিল শহীদ হাবিলদার কুতুব উদ্দিনের হাড়গুলোকে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলাম দেশের মানুষের হাত থেকে পরাধীনতার শিকল খুলে তাদের বুক থেকে শোষণ নির্যাতনের পাথর নামাতে কিন্তু শহীদ মুক্তিযোদ্ধার কবরের উপর বিশাল পাথর আর টাওয়ার তুলে কোন অপরাধের সাজা দেয়া হচ্ছে।
তবে কি দেশের জন্য জীবন দানই অপরাধ হয়েছে। ’ এ প্রতিবেদকের সাথে কথা বলার সময়-কাঁদো কাঁদো হয়ে ছলছল করেছিল তাঁর দু’চোখ, অনেক কিছুই বলতে গিয়ে থেমে গেলেন।
অবসরপ্রাপ্ত অপর সহযোদ্ধা হাবিলদার আজির উদ্দিন বলেন ‘টেলিটক টাওয়ারের নিচেই কুতুব উদ্দিনের সমাধি এতে কোনো সন্দেহ নাই। তিনি শহীদের স্মৃতি রক্ষার্থে টাওয়ার উচ্ছেদপূর্বক সমাধিতে নামফলক লাগানোর দাবি জানান।
শহীদ মুক্তিযোদ্ধা হাবিলদার কুতুব উদ্দি’র সন্তান মাহতাব উদ্দিন এর বক্তব্য : শহীদ মুক্তিযোদ্ধা হাবিলদার কুতুব উদ্দিনের সন্তান মাহতাব উদ্দিন বলেন ‘ বাবা যখন শহীদ হন আমি তখন খুব ছোট।
বাবাকে মনে নেই। বড় হয়ে মা এবং বাবার সহযোদ্ধাদেও কাছ থেকে জেনেছি লাউতা ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে বাবার সমাধি। যখনই সময় এবং সুযোগ পেতাম বাবার কবর জিয়ারতে যেতাম। বছরখানেক পূর্বে জিয়ারতে গিয়ে দেখি বাবার কবরের উপর দাড়িয়ে আছে বিশাল টাওয়ার। আমার কিছুই করার ছিলনা কেঁদে কেঁদে বাড়ি ফিরেছি।
’ ঐ টাওয়ারের নিচেই পিতার সমাধি দাবী করে তিনি বলেন ‘ আমার খুব ইচ্ছে ছিল নিজের উপার্জনের অর্থ দিয়ে বাবার স্মৃতি রক্ষার্থে সমাধির চারপাশে দেয়ার করার; কিন্তু সে ইচ্ছে অপূর্ণ রয়ে গেল। ’
সংগঠকদের কথা : জাতির জন্য যে জীবন উৎসর্গ করলো সেই শহীদের বুকের উপর টাওয়ার স্থাপন এর চেয়ে ন্যাক্কারজনক ঘটনা আর কী হতে পারে উল্লেখ করে বিয়ানীবাজার উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মাথিউরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আতাউর রহমান খান বলেন, ‘ ঘটনাটি সম্পর্কে আমি স¤প্রতি অবগত হয়েছি। জাতির শ্রেষ্ট সন্তানের সমাধি এভাবে টাকার বিনিময়ে বিক্রি এরকম জঘন্যতম কাজ কখনো মেনে নেয়া হবে না; আমরা তাঁর স্মৃতি রক্ষার্থে স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি বর্তমান সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাই। ’
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও তরুনদের সমন্বয়ে গঠিত শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি সংসদ লাউতা ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছরয়ার হোসেন বলেন ‘দেশ জুড়ে যখন ’৭১-’র যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে গণজাগরণ সৃষ্টি হয়েছে একই সময়ে একজন শহীদের সমাধিতে সরকারি সহযোগী প্রতিষ্ঠানের বিশাল টাওয়ার-যা কখনো কোনো স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশে মেনে নেয়া যায়না। ’
তিনি বলেন ‘অচিরেই টাওয়ার উচ্ছেদ না হলে এলাকার সর্বস্তরের মানুষকে সাথে নিয়ে কঠোর আন্দোলনের ডাক দিতে বাধ্য হবো।
’
চেয়ারম্যানের বক্তব্য : লাউতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যান শহীদ মুক্তিযোদ্ধা হাবিলদার কুতুব উদ্দিনের সহযোদ্ধা আব্দুল জলিল; যিনি খুব কাছ থেকে শহীদ কুতুব উদ্দিনের মৃত্যু দেখেছিলেন। সেই সহযোদ্ধা বলেন ‘স্বাধীনতার পর আমি নিজেই কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়ে লাতুর ঐ স্থান থেকে শহীদ কুতুব উদ্দিনসহ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার হাড় কংকাল এনে ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে সমাধি করেছি। ’ টেলিটক টাওয়ারের নিচে কুতুব উদ্দিনের সমাধি স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের এমন দাবি সঠিক নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি নিজে একজন মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ হাবিলদার কুতুব উদ্দিন আমার সহযোদ্ধা। সে যখন মৃত্যুবরণ করে তখন আমারও মৃত্যু হতে পারতো। টাওয়ার স্থাপনের সময় আমি শহীদ কুতুব উদ্দিনের কবরের জায়গা রেখে পাশে টাওয়ার স্থাপনের জায়গা দিয়েছি।
তাঁর কবর টাওয়ারের নিচে নয়। ’
সরেজমিন পরিদর্শনকালে টাওয়ারের পশ্চিম পাশে এক কোনায় কিছু খালি জায়গা দেখিয়ে তিনি বলেন ‘এই স্থানে আছে শহীদ হাবিলদার কতুব উদ্দিনের কবর। ’
বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুব্রত কুমার দে বলেন, ‘ আমি সদ্য যোগদান করেছি, বিষয়টি ভালো করে খতিয়ে না দেখে কোনো মন্তব্য করতে পারবোনা। ’ তিনি শীঘ্্রই সরেজমিন পরিদর্শন করবেন বলেও জানান।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।