লর্ডস টেস্টে নিউজিল্যান্ড যখন ২৩৯ রানের লক্ষ্য নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং করতে নামে, তখন হয়তো বিরল একটা জয়ের স্বপ্নই দেখতে শুরু করেছিলেন কিউই সমর্থকেরা। কিন্তু মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যেই সেই স্বপ্ন পরিণত হয় দুঃস্বপ্নে। স্টুয়ার্ট ব্রডের দুর্ধর্ষ বোলিংয়ে সফরকারী নিউজিল্যান্ড গুটিয়ে যায় মাত্র ৬৮ রানে। ক্যারিয়ারসেরা বোলিং করে মাত্র ৪৪ রানের বিনিময়ে সাতটি উইকেট তুলে নেন ব্রড। চরম হতাশাজনক এই ব্যাটিং পারফরমেন্সের পর ম্যাককালাম বাহিনীর তীব্র সমালোচনা করেছে দেশটির গণমাধ্যম।
এ বছরেরই জানুয়ারিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নিউজিল্যান্ড গুটিয়ে গিয়েছিল ৪৫ রানে, তবে সেটা ছিল ম্যাচের প্রথম ইনিংসে। আর এবার লর্ডস টেস্টে কিউইদের এই ব্যাটিং বিপর্যয়টা হয়েছে ম্যাচের চতুর্থ ইনিংসে। আগের তিনটি ইনিংস থেকেও যথেষ্ট শিক্ষা নিয়ে, উইকেট কন্ডিশন বুঝেই নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমেছিলেন টেলর-উইলিয়ামসন-ম্যাককালামরা। আর এ ব্যাপারটিই সমালোচনার তীব্রতা বাড়িয়ে দিয়েছে অনেকগুণ। সেই স্মৃতি স্মরণে রেখে ফেয়ারফ্যাক্স মিডিয়ার জ্যেষ্ঠ ক্রিকেট লেখক লিখেছেন, ‘এক পলকেই সবকিছু শেষ হয়ে গেছে।
জানুয়ারিতে কেপটাউন টেস্টে ৪৫ রানে গুটিয়ে যাওয়ার স্মৃতিটাও এর কাছে ফিকে হয়ে পড়েছে। মধ্যাহ্নবিরতির আগ পর্যন্ত ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ায় স্কোরবোর্ডের চেহারা দাঁড়ায় ২৯ রানে ৬ উইকেট। এর মধ্যে ব্রডই নিয়েছিলেন পাঁচটি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই পারফরমেন্সটা দ্বিতীয় টেস্টের আগে খেলোয়াড়দের মনে কী ধরনের প্রভাব ফেলবে। ’
নিউজিল্যান্ড হেরাল্ডের অ্যান্ড্রু অ্যালডারসন লিখেছেন, ‘যদি নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংস নিয়ে একটা বিজ্ঞাপন তৈরি করা হয়, তাহলে হয়তো সেখানে লেখা হতো ২০১৩ সালে লর্ডসে নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংস।
অনেক কিছুর প্রতিশ্রুতি ছিল। কিন্তু মাত্র দুই ঘণ্টায়ই জ্বালানিঘাটতি দেখা দেওয়ায় সেটি হারিয়ে গেল ইতিহাসের অতলে। হতাশা জানানোর জন্য ১৯৬০৫৮ নম্বরে ফোন করুন। ’ তবে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং পারফরমেন্সের কড়া সমালোচনা করলেও দুই ইংলিশ পেসার স্টুয়ার্ট ব্রড ও জেমস অ্যান্ডারসনের ভূয়সী প্রশংসাও করেছেন অ্যালডারসন। লিখেছেন, ‘বিশ্বের যেকোনো ব্যাটসম্যানই এই বোলিং পারফরমেন্সের সামনে থমকে যাবে।
মূল আঘাতটা ব্রডই হেনেছেন কিন্তু অ্যান্ডারসনও সুইংয়ের মাধ্যমে নানারকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। ’
দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাটিং বিপর্যয় চরমভাবে হতাশ করলেও লর্ডস টেস্টে কিউই বোলারদের পারফরমেন্স ছিল সত্যিই আশাজাগানিয়া। এটাকেই এখন দ্বিতীয় টেস্টের আগে অনুপ্রেরণা হিসেবে দেখতে চাইছেন দেশটির আরেক ক্রীড়ালেখক জেন্টি। তিনি লিখেছেন, ‘হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হলেও লর্ডস টেস্টের অভিজ্ঞতা পুরোপুরিই হতাশাজনক নয়। এর মধ্যেও অনেক ইতিবাচক ব্যাপার আছে।
বিশেষ করে বোলাররা দারুণ খেলেছেন। টিম সাউদি ১০ উইকেট নিয়ে লর্ডসের অনার্স বোর্ডে নাম উঠিয়েছেন। ট্রেন্ট বোল্ট আর ওয়াগনারও ভালো বোলিং করেছেন। যার কারণে ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরাও চাপের মুখে থেকেছেন। ’
এখন এই ইতিবাচকতার অনুপ্রেরণা ও ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে দ্বিতীয় টেস্টে নিউজিল্যান্ড ঘুরে দাঁড়াতে পারবে কি না, সেটাই দেখার বিষয়।
২৪ মে থেকে লিডসে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে মুখোমুখি হবে ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড। রয়টার্স।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।