আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঢাকার নিমতলীর ট্র্যাজেডিতে অসহায় মকবুল হোসেনের পরিবারের ৭ জনই দগ্ধ হয়েছে নিয়তির সরাইখানায়



নিমতলীর অগ্নিদাহ লেগেছে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলার বজরা ইউনিয়নের বারাইনগর গ্রামে। এ গ্রামের ভিটেমাটিহীন অসহায় মকবুল হোসেনের পরিবারের ৭ জনই দগ্ধ হয়েছে নিয়তির সরাইখানায়। স্ত্রী, মেয়ে, নাতি-নাতনি ও মেয়ে জামাইসহ ৭ জনের মর্মান্তিক মৃত্যুর পর পরম স্বজন বলতে কেউ নেই- যারা কাঁদবেন। ভাগ্যক্রমে বেঁচে থাকা ১২ বছরের ছেলে সোহাগও অনেকটা বাকহীন। মকবুল হোসেনের স্ত্রী শাহার বানু স্বামী সন্তানদের দেখতে গিয়েছিলেন নিমতলীর কাঠের দোতলা সেই টঙ্গে।

সেখানে প্রিয় নাতিনকে বুকে জড়িয়েই মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছেন তিনি। স্বজনরা জানান, ঢাকা মেডিকেল ও গ্রামের বাড়িতে এনে বহু চেষ্টা করেও তাদের আলাদা করা যায়নি, তাই কবরও দেয়া হয়েছে একসঙ্গে একই কবরে। বৃহস্পতিবার রাতে নিমতলীর ট্র্যাজেডির ৪ জনের লাশ শোক দিবসের দিন শনিবার রাত ৯টায় নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার বজরা ইউনিয়নে বারাই নগর গ্রামের চান গাজী ভুইয়া বাড়িতে দাফন করা হয়। এ ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মর্মান্তিক মৃত্যু হয় নোয়াখালীর বারাই নগর গ্রামের মুকবুল হোসেনের পরিবারের ৭ জনের। এরা হচ্ছেন মুকবুল হোসেন (৫০), তার স্ত্রী শাহার বানু (৪০) মেয়ে শারমিন (২১) শারমিনের আড়াই বছরের ছেলে সানি, মকবুল হোসেনের আরেক মেয়ে ফেরদৌস ও শারমিনের স্বামী ছিদ্দিক উল্যাহ (২৮) এবং ৩ বছরের ছেলে ফাইম।

তারা ঢাকার নিমতলীর ৫৫ নম্বর বাসায় ভাড়া থাকতেন। মকবুল হোসেন তার স্ত্রী শাহার বানু, মেয়ে শারমিন এবং শারমিনের ছেলে সানি সহ ৪ জনের লাশ ঢাকা থেকে নোয়াখালী বজরা ইউনিয়নে বারাইনগর গ্রামে পৌছলে শোকাভিভুত উপস্থিত এলাকবাসী ও স্বজনরা স্তদ্ধ হয়ে পড়েন। কান্না আর আহজারিতে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারনা হয়। পুরো এলাকায় নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। রাত ১০টায় জানাজা শেষে পারিবারিক গোরস্থানে তাদেরকে দাফন করা হয়।

মুকবুল হোসেনের আরেক মেয়ে ফেরদৌসী ও তার ছেলে ফাহিমের লাশ ফেরদৌসীর স্বামীর বাড়ি চাঁদপুর জেলার মতলব উপজেলায় দাফন করা হয়। অপর মেয়ে শরমিন ও তার স্বামী ছিদ্দিক উল্যাহর লাশ দাফন করা হয় গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার কচুয়ায়। মেয়ে আকলিমা জানান, আমি চট্টগ্রাম থাকি। খবর পেয়ে বাড়ি এসেছি। আমাদের আপন বলতে আর কেউ রইলো না।

আমরা কোথায় যাবো। বলতে বলতে অঝোর কান্নায় মুষড়ে পড়েন তিনি। সমস্থ কথা যেনো মূহুর্তেই জড়িয়ে যায়। নিহত মকবুল হোসেনের শ্যালক দুলাল জানান, আমাদের নিজেদের অর্থনৈতিক অবস্থাই ভালো না। এখন এ অসহায় ৩ বাচ্চাদের কে দেখবে।

সরকারের সহায়তা ছাড়া আর কোনো উপায় তাদের নেই। বাবার কাছে না থাকায় আকলিমা, তাসলিমা ও সোহাগ বেঁচে গেলেও এখন অনেকটা অনিশ্চিত জীবনের মুখোমুখি তারা। কঠিন দারিদ্র থেকে বাঁচার তাগিদেই ঢাকা মেডিকেলের সামনে ফুটপাতে নরসুন্দরের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন মকবুল হোসেন। এমন মৃত্যুতে হতবিহবল নিরাশ্রয় সন্তানদের এখন কেউ নেই শান্তনা দেবার। http://www.youtube.com/watch?v=UujrRVkewxQ


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।