অধ্যাদেশ জারি হওয়ার পরপরই মাল্টিলেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) কোম্পানি ডেসটিনিতে প্রশাসক নিয়োগ করবে সরকার। কোম্পানিটিতে একসঙ্গে একাধিক প্রশাসক নিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে। এমএলএম কোম্পানি নিয়ন্ত্রণ আইনের চূড়ান্ত অনুমোদনের পর এটি এখন আইন মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। খুব শীঘ্রই আইন মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদিত খসড়াটি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হবে। বাণিজ্য সচিব মাহবুব আহমেদ বলেন, এমএলএম কোম্পানি ডেসটিনি যেহেতু একাধিক কোম্পানি করে বিনিয়োগ সংগ্রহ করেছে, তাই এসব বিনিয়োগ রক্ষায় একাধিক প্রশাসক নিয়োগ হতে পারে। অধ্যাদেশ জারির ব্যাপারে তিনি বলেন, এমএলএম আইনের খসড়া গত বুধবার আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এখন তাদের মাধ্যমেই এটি রাষ্ট্রপতির কাছে যাবে।
সূত্র জানায়, এমএলএম আইন মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর এটি অধ্যাদেশ আকারে জারি করার জন্য পরবর্তী কার্যক্রম দ্রুত শেষ করার ব্যাপারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ডেসটিনিতে বিনিয়োগকারী গ্রাহকদের সম্পদ যাতে কোনোভাবে বেহাত বা পাচার হয়ে না যায় সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ নির্দেশনা রয়েছে।
সূত্র মতে, ডেসটিনির পরিচালকদের গ্রেফতার ও এ সংক্রান্ত আইন করা নিয়ে গ্রাহকদের মধ্যে এক ধরনের বিভ্রান্তি রয়েছে। ওই বিভ্রান্তি দূর করতেই আগামী নির্বাচনের আগে এমএলএম কোম্পানিটির ব্যাপারে এমন কিছু উদ্যোগ নেওয়া হবে যাতে গ্রাহকরা তাদের বিনিয়োগ ফিরে পাওয়ার ব্যাপারে আশ্বস্ত হতে পারে। সূত্রটি আরও জানায়, এর আগে আরেক এমএলএম কোম্পানি 'যুবক'-এ বিনিয়োগকারী গ্রাহকের সম্পদ ফিরিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে সরকারিভাবে একটি কমিশন করা হলেও আইনি জটিলতায় ওই কমিশন সংস্থাটির কোনো সম্পদ আয়ত্তে নিতে পারেনি। যুবক-এর অনেক সম্পদ অন্যত্র বিক্রি হয়ে গেছে। এ ছাড়া যে সম্পদ আছে সেগুলোও যৌথ নামে বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত। ফলে এসব সম্পদ আয়ত্তে নেওয়ার ক্ষেত্রে আইনি জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে অভিযোগকারী গ্রাহকরাও ফেরত পায়নি তাদের বিনিয়োগ। তবে ডেসটিনির ক্ষেত্রে সে ধরনের কোনো ঘটনা ঘটার আগেই সরকার এর পুরো নিয়ন্ত্রণ নিতে চাইছে। আর সে লক্ষ্যেই এমএলএম কোম্পানিতে প্রশাসক নিয়োগের ব্যাপারে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে নির্দেশনা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বছরই ডেসটিনিতে প্রশাসক নিয়োগের কার্যক্রম শুরু করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ১১ অক্টোবর তখনকার বাণিজ্য সচিব গোলাম হোসেন এ সংক্রান্ত সার-সংক্ষেপে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন নেন। পরে ওইদিন বিকালে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ডাকা এক সংবাদ সম্মেলনে সচিব জানান, এক সপ্তাহের মধ্যে ডেসটিনিতে প্রশাসক নিয়োগ হবে। কিন্তু সরাসরি প্রশাসক নিয়োগে জটিলতা দেখা দেওয়ায় কোম্পানি আইনে এটি করার সিদ্ধান্ত হয়। এর পর দায়মুক্তি (ইনডেমনিটি) সুবিধা দিয়ে প্রশাসক নিয়োগের খসড়া চূড়ান্ত হলে এটি নিয়েও আপত্তি তোলেন ব্যবসায়ীরা। শেষে ব্যবসায়ী ও আইনজীবীবদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করে এমএলএম আইনে প্রশাসক নিয়োগের বিধান যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। দীর্ঘ ৪ বছর যাচাই-বাছাই শেষে গত ১৯ আগস্ট মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ আইনের চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।