জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেতার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন এবং চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে তাদের সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছেন। বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে যে সংকট দানা বেঁধে উঠেছে, সে ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উৎকণ্ঠার কথা তিনি প্রকারান্তরে জানিয়ে দিয়েছেন। জাতিসংঘ মহাসচিবের আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সংবিধানের আলোকে তারা পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নিচ্ছেন। তবে তার সরকার সংলাপের বিরুদ্ধে নয়। তিনি নিজেও এর আগে সংলাপের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। বিরোধী দল যদি সংসদের আসন্ন অধিবেশনে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব আনে বা আলোচনা করতে চায় তবে সরকার তাতে স্বাগত জানাবে। তিনি বলেন, সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করা হয়েছে। সংবিধান সংশোধনে সংসদীয় কমিটি গঠনের সময় বিরোধী দলকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও তারা তাতে অংশ নেয়নি। জাতিসংঘ মহাসচিবের আহ্বানে সাড়া দিয়ে বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, তারা সব সময় সংলাপের মাধ্যমে সমঝোতায় বিশ্বাসী। সংকট সমাধানে সংলাপের বিকল্প নেই। তিনি জাতিসংঘ মহাসচিবকে জানিয়ে দেন, বিএনপি আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না। কারণ বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য নির্দলীয় সরকারের বিকল্প নেই। একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশনও জরুরি। জাতিসংঘ মহাসচিব দুই শীর্ষ নেত্রীর সঙ্গে টেলিফোন সংলাপে বলেছেন, তারা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ও সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চান। এ বিষয়ে দুই পক্ষকে সমঝোতায় উপনীত হওয়ার তাগিদ দেন তিনি। জাতিসংঘ মহাসচিব বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে সরকার ও বিরোধী দলের মতপার্থক্যে যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তাতে বিশ্ব সমাজের মনোভাব প্রতিফলিত হয়েছে। উদার গণতান্ত্রিক মুসলিম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের যে ভাবমূর্তি গড়ে উঠেছে, বিদ্যমান সংকট তা ক্ষুণ্ন করছে। সরকার ও বিরোধী দল উভয়পক্ষ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে। এ বিষয়ে দ্বিমত না থাকলেও কোন পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে তা নিয়ে মতবিরোধ দানা বেঁধে উঠেছে। নিজেদের সমস্যা নিজেরা মিটিয়ে ফেলার ঔদার্যতার অভাব থাকায় এখন বিশ্ব সমাজকেও এ ব্যাপারে তাদের উদ্বেগের কথা বলতে হচ্ছে। আমরা মনে করি, জাতিসংঘ মহাসচিবের আহ্বানেই শুধু নয়, নিজেদের স্বার্থেই এ ব্যাপারে সমঝোতায় উপনীত হতে হবে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।