আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সরকারের মিডিয়া পলিসি বুঝার চেষ্টা করতেছি

সাহিত্যের সাইটhttp://www.samowiki.net। বইয়ের সাইট http://www.boierdokan.com

জরুরি অবস্থার দুই বছর মিডিয়ার চরম অশান্তি চলতেছিল। আগ বাড়ায়ে জরুরি সরকারকে সমর্থন দেওয়ার ঘটনা যেমন আছিল তেমনি জরুরি সরকারের নির্দেশে নানা রকম দলন-পীড়নের ঘটনা ছিল। টিভি-সংবাদপত্র-রেডিওর নিউজ, টক শো চরম নিয়ন্ত্রণের শিকার হইছিল। সিএসবি নামে একটা নিউজ চ্যানেল এই সময় বন্ধ হইছি।

যায়যায়দিন সংকটে পড়ে অর্ধেক কর্মী ছাঁটাই করছিল। বন্ধ হইছিল আজকের কাগজ। বিভিন্ন টিভির বিএনপি মালিকরা কারাগারে গেছিলেন। ফলে, টিভিগুলা আপোষ ও সংগ্রামের পথে গিয়া কোনো রকমে অস্তিত্ব টিকায়া রাখতে পারছিল। শুনা যায়, এইসব দমন-পীড়ন নিয়ন্ত্রণের মধ্যেও জরুরি সরকার কিছু টিভি ও পত্রিকা করার অনুমতি দিছিল।

কিন্তু সেইগুলার সামান্যই আলোর মুখ দেখছে। ইনভেস্টররা ওই সরকারের স্থায়িত্ব নিয়া সংশয়ে আছিলেন। ফলে, অনেকেই ভাবছিলেন আওয়ামী লীগ আসুক। গণতন্ত্রে মিডিয়া করবো। শুধু বিনিয়োগকারীরা না, সাংবাদিক-কর্মচারিরাও আশা করতেছিল গণতন্ত্র আসলে মিডিয়ার বিকাশ হবে।

নতুন ইনভেস্টমেন্ট আসবে। সবচেয়ে বড় কথা মিডিয়ার বিকাশের জন্য মতপ্রকাশের যোগ্য পরিবেশ তৈয়ার হবে। আওয়ামী লীগ সরকার আসার পর দশ বা ততোধিক টিভি ও পাঁচ বা ততোধিক সংবাদপত্র প্রকাশিত হওয়ার কথা শুনা যাইতেছিল। আওয়ামী লীগ আমলে আওয়ামী পন্থীরা টিভি করবে, রেডিও করবে, সংবাদপত্র করবে এইটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ক্ষমতাধর হওয়ার দুই বছরের মধ্যে নতুন অনুমোদন পাওয়া টিভি, পত্রিকা, রেডিওর দেখা মিলতেছে না।

যা দুই একটার দেখা মিলছে তার কয়েকটা জরুরি সরকারের সময়কার। আবার আওয়ামী লীগ জরুরি সরকারের সময়কার অনেক অনুমোদন স্থগিত কইরা দিতেছে। যমুনা টিভি এমন একটি টেলিভিশন। যমুনার আগে সরকার বন্ধ করছে চ্যানেল ওয়ান। একথা ঠিক, বিএনপি একুশে টিভি সম্প্রচার বন্ধ করছিল।

আদালত-নিয়ম-কানুন দেখায়া। নিয়ম-কানুন যতই থাক ইটিভি বন্ধ করার ঘটনা সবাই মনে রাখছে। এখন আওয়ামী লীগ যখন চ্যানেল ওয়ান বন্ধ করছে তখন ইটিভির স্মৃতি সবার মনে ভাইসা উঠছে। নিয়ম-কানুন, আইন আদালত সবই আছে। কিন্তু এইটারে প্রতিশোধ হিসাবে দেখতেছেন অনেকেই।

হিসাব করি এখন, বিএনপি বন্ধ করছে ইটিভি। জরুরি সরকার বন্ধ করছে, সিএসবি, আজকের কাগজ আওয়ামী লীগ বন্ধ করছে, চ্যানেল ওয়ান, যমুনা এর আগে আওয়ামী লীগ বন্ধ করছে, দৈনিক বাংলা, বাংলার বাণী, বিচিত্রা তার আগে আওয়ামী লীগ বাকশাল কইরা সব পত্রিকা বন্ধ কইরা শুধু দলীয় কয়টা রাখছিল। দেখা যায়, বাংলাদেশে আর্মি সরকার, আর্মিপন্থী বিএনপির চাইতে আওয়ামী লীগ বেশি মিডিয়া বন্ধ করেছে অতীতে, বর্তমানেও করতেছে। এখন প্রশ্ন হইলো, আওয়ামী লীগের মধ্যে মিডিয়া-বিরুদ্ধ এই প্রবণতা কেন কাজ করে। ব্যাপক জনসমর্থন থাকার পরও কেন আওয়ামী সরকারগুলা মনে করে মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করা দরকার? মিডিয়াকে আরও অনুগত করা দরকার? মিডিয়ায় নিজেদের লোক বেশি কইরা বসানো দরকার? এসব প্রশ্নে উত্তর বাইর করা কঠিন।

অনেকে আওয়ামী লীগকে ফ্যাসিস্ট বইলা ফ্যাসিবাদের গভীরে এর কারণ খুঁজতে চান। আমার কেন জানি মনে হয়, ফ্যাসিবাদ ছাড়াও আরও কোনো গুরুতর গভীর কারণ আছে। সেই কারণগুলা জানা দরকার। পাশাপাশি এই কথাগুলাও জানা থাকা দরকার, প্রকৃতপক্ষে আওয়ামী উদ্যোগ ইনভেস্টমেন্ট হিসাবে বাজারে কোনো মিডিয়া নাই। অথচ আওয়ামী লীগই সেই ভাগ্যবান দল যারা এখন এবং আগেও সিভিল সোসাইটি, আর্মি সমর্থিত, বিএনপি সমর্থিত বহু মিডিয়ার ফ্রি সমর্থন পাইছে এবং পাইতেছে।

এককভাবে আওয়ামী সমর্থক সাংবাদিক-কর্মচারিই মিডিয়া জগতে সবচেয়ে বেশি। তারপরও আওয়ামী লীগ সন্দেহ হইলেই মিডিয়া বন্ধ করে, সাংবাদিকদের বিপদে ফেলে, এবং নতুন মিডিয়া আসার পথে বাধা দেয়। এবং আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী সমর্থকরা যথেষ্ট মিডিয়া উদ্যোগ নেয় না। এর কারণ কী? এই সরকারের মিডিয়া নীতি যদি এইভাবে চলতে থাকে তাইলে শেষ পর্যন্ত মিডিয়ার অবস্থা কই গিয়া ঠেকবে?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.