সুখ চাহি নাই মহারাজ—জয়! জয় চেয়েছিনু, জয়ী আমি আজ। ক্ষুদ্র সুখে ভরে নাকো ক্ষত্রিয়ের ক্ষুধা কুরুপতি! দীপ্তজ্বালা অগ্নিঢালা সুধা জয়রস, ঈর্ষাসিন্ধুমন্থনসঞ্জাত,সদ্য করিয়াছি পান—সুখী নহি তাত, অদ্য আমি জয়ী।
... যার কবিতা আমাকে একটা দীর্ঘ সময় ধরে আপ্লুত করে রেখেছে, এখনও রাখে। তাঁর "ফিরে এসো, চাকা" কাব্যগ্রন্থটি গীতবিতান সহ বহুদিন ধরে আমার মাথার শিয়রে নিয়ে ঘুমিয়েছি। আপনারা অনেকেই নিশ্চয়ই এই কবির সাথে পরিচিত আছেন।
তবু, যারা নন, তাদেরকে, আর যারা আছেন, তাদের সাথে আরেকবার এই কবির কবিতা ভাগাভাগি করে নিতে এই পোস্ট।
বিনয়ের লিখিত আমার সবচে' ভালোলাগা একটি কবিতা:
একটি উজ্জ্বল মাছ একবার উড়ে
দৃশ্যত সুনীল কিন্তু প্রকৃত প্রস্তাবে স্বচ্ছ জলে
পুনরায় ডুবে গেল- এই স্মিত দৃশ্য দেখে নিয়ে
বেদনার গাঢ় রসে আপক্ক রক্তিম হলো ফল।
বিপন্ন মরাল ওড়ে, অবিরাম পলায়ন করে,
যেহেতু সকলে জানে তার সাদা পালকের নীচে
রয়েছে উদগ্র উষ্ণ মাংস আর মেদ;
সম্পলায়ু বিশ্রাম নেয় পরিশ্রান্ত পাহাড়ে পাহাড়ে
সমস্ত জলীয় গান বাষ্পীভূত হয়ে যায়, তবু
এমন সময়ে তুমি, হে সমুদ্রমৎস্য তুমি, তুমি
কিংবা দ্যাখো, ইতস্তত অসুস্থ বৃক্ষেরা
পৃথিবীর পল্লবিত ব্যাপ্ত বনস্থলী
দীর্ঘ দীর্ঘ ক্লান্তশ্বাসে আলোড়িত করে;
তবু সব বৃক্ষ আর পুষ্পকুঞ্জ যে যার ভূমিতে দূরে দূরে
চিরকাল থেকে ভাবে মিলনের শ্বাসরোধী কথা।
*******************************
ফিরে এসো, চাকা
আমার আশ্চর্য ফুল, যেন চকোলেট, নিমেষেই
গলাধঃকরণ না করে ক্রমশ রস নিয়ে
তৃপ্ত হই, দীর্ঘ তৃষ্ণা ভুলে থাকি আবিষ্কারে, প্রেমে।
অনেক ভেবেছি আমি, অনেক ছোবল নিয়ে প্রাণে
জেনেছি বিদীর্ণ হওয়া কাকে বলে, কাকে বলে নীল-
আকাশের, হৃদয়ের, কাকে বলে নির্বিকার পাখি।
অথবা ফড়িং তার স্বচ্ছ ডানা মেলে উড়ে যায়।
উড়ে যায় শ্বাস ফেলে যুবকের প্রাণের উপরে।
আমি রোগে মুগ্ধ হয়ে দৃশ্য দেখি, দেখি জানালায়
আকাশের লালা ঝরে বাতাসের আশ্রয়ে আশ্রয়ে।
আমি মুগ্ধ; উড়ে গেছ, ফিরে এসো, ফিরে এসো, চাকা,
রথ হয়ে, জয় হয়ে, চিরন্তন কাব্য হয়ে এসো।
আমরা বিশুদ্ধ দেশে গান হবো, প্রেম হবো, অবয়বহীণ
সুর হয়ে লিপ্ত হবো পৃথিবীর সকল আকাশে।
*******************************
হৃদয়, নিঃশব্দে বাজো
হৃদয়, নিঃশব্দে বাজো, তারকা। কুসুম অঙ্গুরীয়-
এদের কখনো আর সরব সংগীত শোনাবো না।
বধির সস্থানে আছে, অথবা নিজের রুপ ভুলে
প্রেমিকের তৃষ্ণা দ্যাখে, পৃথিবীর বিপণিতে থেকে;
কবিতা লিখেছি কবে, দুজনে চকিত চেতনায়।
অবশেষে জল ঝ’রে অশ্রু ঝরে আছে শুধু সুর
কবিতা বা গান... ভাবি, পাখিরা... কোকিল গান গায়
নিজের নিষ্কৃতি পেয়ে, পৃথিবীর কথা সে ভাবে না।
অনুবাদ:
Heart, play the tune silently
Heart, play the tune silently, stars, flowers finger rings-
I will never again play audible music for them.
The deaf is in her own place, inattentive to her beauty
Thinks about the thirst of her lover, in this emporium of the world;
Long ago we wrote poems, two of us out of startled sensation.
Water and tears fell in drops, in the end, music is the only remnant
Poems or songs… I think, birds… the cuckoo sings
Attaining its freedom, not thinking of this world.
*************************************************
বিনয় মজুমদারের একটি ইন্ট্রো (ইংরেজীতে দিলাম বলে ক্ষমাপ্রার্থী):
Binoy Majumdar (1934-2006) was a brilliant, eccentric, obscure and controversial poet whose life and work await chapters of penetrating research. Despite being a fine and talented engineer, a brilliant, innovative mathematician and an even more brilliant poet, Binoy led a rather distraught and disoriented life of extreme poverty. Failed by one-sided love (for Gayatri Chakraborty), he lost his mental composure and attempted suicide several times in his life. At times, he would turn violently schizophrenic. In the 1990s, the state government of West Bengal, upon request from fellow poets, provided some support. It didn't restore his physical and mental health. However, during his stay at the state-run hospital, he wrote a book -"haaspaataale lekhaa kabitaaguchchha' (Hospital Poems) which won him the prestigious national poetry award (Sahitya Academy Purashhkaar). Today, Binoy has a huge following among poets three or four decades younger. Binoy has often been regarded by critics as a true successor of Jibanananda Das, the poet who revolutionized Bengali Poetry in the post-Tagore era. Like Jibanananda, Binoy drew his material from bountiful nature, the fields and the jungles and the rivers and the fauna of Bengal. But Binoy's originality lay in his attempt to relate the various elements of nature to one another through objective logic and scientific enquiry. Binoy Majumdar was born in Myanmar (erstwhile Burma) on the 17th of September 1934. His family later moved to what is now West Bengal in India. Binoy loved mathematics from his early youth. He completed 'Intermediate' (pre-University) from the Presidency College of the University of Calcutta. Although he graduated with a degree in mechanical engineering from Bengal Engineering College, Calcutta, in 1957, Binoy turned to poetry later in life. He was fluent in English and Russian and translated a number of science texts from the Russian to Bengali. When Binoy took to writing, the scientific training of systematic observation and enquiry of objects found a place, quite naturally, in his poetry. His first book of verse was Nakshatrer Aloy (in the light of the stars). However, Binoy Majumdar's most famous piece of work to date is Phire esho, Chaka (Come back, O' Wheel, 1962), which was written in the format of a diary. The book is dedicated to Gayatri Chakravorty Spivak, a fellow-Calcuttan and contemporary of Majumdar.
বিনয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে wikipedia ও ফেইসবুকের লিঙ্ক যথাক্রমে এখানেঃ
উইকিপেডিয়া
ফেইসবুক
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।