আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাইফেল সিরিজ - এফএন এফএএল (FN FAL)

অলস মস্তিস্ক বহু বান্দরামীর উর্বর ভূমি
সিরিজের আজকের রাইফেল FN FAL। FN FAL একটি গ্যাস অপারেটেড মেইন ব্যাটেল রাইফেল । এটি সেমি অটোমাটিক, অটোমেটিক এবং সিলেক্ট ফায়ার মোড রয়েছে। এর প্রস্তুতকারক বেলজিয়ামের Fabrique Nationale de Herstal সংক্ষেপে FN । FN FAL মূলত ২য় বিশ্বযুদ্ধকালীন জার্মান ব্যাটেল রাইফেল Sturmgewehr 44 এর উন্নত সংস্করন।

Sturmgewehr 44 জার্মান Sturmgewehr 44 বিশ্বযুদ্ধকালীন সময়ে ইউরোপিয়ান ব্লকের দেশগুলোর কাছে মুর্তিমান আত্বন্ক ছিল । কারণ এর ভারি বুলেট যা কিনা (7.92x33mm Kurz) নামে পরিচিত ছিল । বিশ্বযুদ্ধের পরে প্রায় সব ইউরোপিয়ান দেশই Sturmgewehr 44 এর অনুরুপে নিজ নিজ ভার্শনের উন্নত রাইফেল তৈরির চেষ্টা শুরু করে। এবং বেলজিয়াম ১৯৪৭ সালে FN FAL এর ডিজাইন এবং ১ম প্রটোটাইপ তৈরি করে । যার বুলেট ছিল জার্মান 7.92x33mm Kurz ।

পরে ব্রিটিশরা ১৯৪৮ সালে এর কার্টিজ ও আরও কিছু পরির্ব্তন করে তৈরি করে EM-2 ব্রিটিশ EM-2 ১৯৫১ সালে ন্যাটোর সিদ্ধান্ত অনুসারে FN FAL এর বুলেট কার্টিজ 7.62x51mm NATO করা হয় এবং ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর সেনাবাহিনী বেসিক রাইফেল মডেল হিসাবে নির্বাচিত হয়। এটিকে তাড়াহুড়ো সার্ভিসে আনার পিছনে ছিল সোভিয়েত AK 47 । এবং ন্যাটোর দেশ গুলো AK 47 কে FN FAL দিয়ে ঠেকানোর আশা করেছিল। বিবরন: ভর : ৪.৩ কেজি (বেসিক মডেল) এমুনিশান : ৭.৬২*৫১ মি.মি ন্যাটো মাজল ভেলোসিটি :৭৫০মিটার/সেকেন্ড কার্যকরী দুরত্ব : ৫০০ মিটার / সেমি অটোমেটিক ৪০০ মিটার / অটোমেটিক ফায়ারিং রেট : ৬০০রাউন্ড/ মিনিট ম্যাগাজিন: ২০ রাউন্ডের বক্স ম্যাগাজিন FN FAL প্রায় ৭০ টি দেশে ব্যাবহৃত হয়েছে। এতে ব্যবহৃত হয়েছিল Tilting Breechblock লোডিং সিস্টেম ।

যা মূলত মেক্যানিকাল সেলফ লোডিং আর গ্যাস অপারেটেড লোডিং সিস্টেমের মিশ্রণ। এই পদ্ধতিতে গ্যাস অপারেটেড অংশ গুলি বের হবার সময় মেক্যানিকাল অংশের একটি স্প্রিংকে (পিক স্প্রিং) ধাক্কা দেয় যা কিনা কার্টিজ থেকে গুলি লোড করতে সাহায্য করত। যদিও এটি পুরোপরি গ্যাস অপারেটেড নয় তবুও কোন এক কারনে একে গ্যাস আপারেটেড রাইফেল হিসাবেই ডাকা হয় । রাইফেল হিসাবে FN FAL তেমন কোন দক্ষতা দেখাতে পারেনি । উপরন্তু এর অনেক দুর্বলতা আছে।

ফায়ারিং এর সময় এর ঝাকি অনেক বেশী। ফলে এর অ্যাকুরেসি খুবই বাজে । টানা ফায়ারিং এর সময় এই রাইফেল প্রায়ই হ্যাং করে। বুলেট লোডিং সিস্টেম মেক্যানিকাল হওয়ায় কোন কারণে বুলেট আটকে বা পিক স্প্রিং ভেংগে গেলে তৎক্ষনাত কোন কিছু করার থাকে নাহ । আর হ্যান্ডেলিং ও যথেষ্ট বাজে ।

প্রশ্ন আসতে পারে এত অসুবিধার পরেও এই রাইফেল কেন ৭০টা দেশে ব্যবহার হইল ??? উত্তর সহজ , আমেরিকা আর তার ইউরোপিয়ান সহচরেরা যেখানে সুযোগ পেয়েছে সেখানেই এই রাইফেল ফ্রি ফ্রি দিয়েছে। এমনকি অনেক সন্ত্রাসী গ্রুপ ও এই অস্ত্র পেয়েছে । সব চেয়ে মজার বিষয় হল, যে একে ৪৭ কে কাউন্টার করার জন্য FN FAL কে সার্ভিসে আনা হয়েছিলো তার ধারে কাছেও FN FAL যেতে পারেনি। কোল্ড ওয়ারের সময় ন্যাটো ভুক্ত সব দেশই তাদের বাহিনী গুলোকে FN FAL দিয়ে প্রস্তুত করে। কিন্তু বর্তমানে এর ব্যবহার দিনকে দিন কমছে ।

উপমহাদেশে ভারত ১৯৬০ সাল থেকে FN FAL তাদের বেসিক রাইফেল মডেল ঘোষনা করে , এবং FN FAL এর ভারতীয় সংস্করন INSAS তৈরি করে। কিন্তু নিন্মমানের কারনে ভারতীয় সেনাবাহিনীই INSAS এর ব্যাবহার কমিয়ে দেয় এবং বিক্রির চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তেমন কোন ক্রেতা পায়নি ভারত , পরে ৭০% সাবসিডি দিয়ে নেপালের কাছে ২৩ হাজার INSAS রাইফেল গছানো হয় রাইফেল সিরিজের আগের পোষ্ট : রাইফেল সিরিজ - বিডি ০৮ সাবমেশিন/ মেশিনগান গান রাইফেল সিরিজ - হেকলার এন্ড কচ্ - জি ৩ রাইফেল সিরিজ - একে ৪৭ রাইফেল সিরিজ - এম ১৬ রাইফেল সিরিজ- উজি গান রাইফেল সিরিজ - এম ৪ কারবাইন রাইফেল সিরিজ - এম ৪ কারবাইন
 

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.