আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

..........শূন্য গর্ভ হাইকোর্টের মাযার.........

হাউকাউ পার্টি

যদি বলা হয় ঢাকার কোন মাযারে সবচেয়ে বেশি লোক সামাগম হয়, নিশ্চিত মনে সবাই বলবে হাইকোর্টের মাজার। কিন্তু সেই মাযারের মধ্যে যে কিছুই নেই, তা কে কাকে বোঝাবে!!! ঢাকার হাই কোর্ট কাছেই এই মাযারের অবস্থান হবার কারণে এর নাম হয়ে গেছে হাইকোর্টের মাযার। বাংলার মধ্যযুগীয় ইতিহাসে এর কোন উল্লেখ পাওয়া যায়না। যদিও মাযারের গায়ে লেখা আছে এটা শরফ-উদ-দীন-চিশতী বা চিশতী বেহেশতির মাজার। বর্তমানের কালের বিশাল চকচকে বিল্ডিংটার ভেতরে এর মুল কাঠামোটা একেবারেই ঢাকা পরে গেছে।

বাইরে থেকে আসল স্থাপত্যটিকে বোঝার কোন উপায় নেই, তবে ভেতরে কিছু কিছু এখনও অবশিষ্ট আছে। মুল স্থাপত্যের ছিল বর্গাকার কাঠামোর উপরে চৌচালা টাইপের ছাদ। পপশ্চিম, দক্ষিন ও পূর্বে একটি করে দরজা ছিল। এই দরজা গুলো এখনও আছে। ইসলাম খান চিশতি ছিলেন ঢাকার প্রথম মুঘল সুবাদার।

মির্জা নাথান নামে তার একজন ইতিহাসবিদ সেনাপতি ছিলেন, তিনি বাহার-ই-স্তান-ই গায়েবি নামক বইতে তৎকালিন অনেক ঘটনা লিপিবদ্ধ করে গেছেন। এই বইতে লেখা আছে যে, ইসলাম খান চিশতি ১৬১২ সালে ঢাকায় মারা যাবার পরে তাকে বাগ-ই-বাদশাহীতে সমাহিত করা হয়েছিল। অন্য আরেক বই হতে জানা যায়, এর ছয় মাস পরে এখান থেকে তাঁর মৃতদেহ তুলে ফতেহপুর সিক্রিতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বিখ্যাত দরবেশ ও তাঁর নানা সেলিম চিশতির কবরের পাশে কবর দেয়া হয় আর একটা মাযার স্থাপত্য তৈরি করা হয়, এটা এখনও আছে। এই বাগ-ই-বাদশাহীই হলো বর্তমান কালের প্রতিরক্ষা মন্ত্রানালয়, শিশু একাডেমী, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকা।

মনে হয় এখানেই, এই হাইকোর্টে মাজারেই এক সময় সমাহিত করা হয়েছিল ইসলাম খান চিশতি মৃতদেহ, পরে তা স্থানান্তর করা হয়। এরপরে বহুকাল ভাঙ্গাচোরা অবস্থায় পরিত্যক্ত এই মাযার অযত্নে পরেছিল। পরে ১৯৩৯ সালের দিকে কোন পুরানো ঢাকার কয়েক জন লোক মিলে হটাৎ একদিন শিরিনি বেধে লালসালু জড়িয়ে মাযার করার চেষ্টা করেছিল প্রথম বারের মতো, কিন্তু এদের উদ্দেশ্য সেই সময় সফল হয়নি। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পরে কোন এক মজিদ আবার এখানে মাযার গড়ে তোলে এবং কোন এক অজানা কারণে মাযারের জৌলুশ এই সময় থেকেই দিনে দিনে বাড়তেই থাকে, বাড়তেই থাকে। আর আজ ঢাকায় যত মাযার আছে তার মধ্যে সবচেয়ে জমজমাট এই হাইকোর্টের শূন্য গর্ভ মাযার.......... বি: দ্র: মাযারের ভেতরের ছবি তোলার নিষিদ্ধ বিধায়, কোন ছবি দিতে পারলাম না, দু:খিত /# তথ্যসূত্র: বাংলাদেশের প্রাচীন কীর্তি, আ ক মো যাকারিয়া


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।