বাসে বা রিকশায় বা অটোরিক্সায় চড়লে একটা অভিজ্ঞতা মোটামুটি সবারই হয়, একটা চিরকুটের মত কাগজ ছুড়ে দেয়া হয় যাত্রীর গায়ে, যেখানে বিজ্ঞাপন থাকে কোন হারবাল বা ইউনানীর, বিভিন্ন জটিল রোগের সমাধান গ্যারান্টিসহ......আচ্ছা থাক আর অত গভীরে না যাই।
ছোটবেলায় এমন কাগজ পেলে দেখতাম আম্মা না পড়েই ছুড়ে ফেলে দিতেন। একবার আমার হাতে একটা চিরকুট এসে পড়ায় আমি রিকশায় বসেই জোরে জোরে পড়া শুরু করলাম (মাত্র পড়তে শিখেছি তখন)। কিন্তু একটা দুইটা শব্দ পড়তে না পড়তেই আম্মা ছোঁ মেরে কাগজটা নিয়ে ফেলে দিলেন, শুধু নামটা পড়তে পেরেছিলাম, মঘা ইউনানী। আম্মার কাছে জানতেও চেয়েছিলাম মঘা ইউনানী মানে কী? আম্মা বকা দিয়ে চুপ করিয়ে দিয়েছিলেন।
ব্যাপারটা পুরোপুরি বুঝতে না পারলেও এটুকু আন্দাজ করেছিলাম যে নিশ্চয়ই এটা এমন কিছু যা আমার পড়া বা জানা শোভনীয় না।
এদের বিজ্ঞাপনের আরও অনেক পদ্ধতি আছে, বাসে বা অটোরিক্সায় স্টিকার লাগিয়ে রাখে এমন ভাবে যে যাত্রীর চোখে পড়তে বাধ্য। একবার এক রিক্সা ঠিক করে উঠে বসেছি, রিক্সাওয়ালা চালানো শুরু করতেই চোখে পড়ল রিকশাওয়ালার পিঠের উপর এরকম একটা রঙীন চিরকুট যেটা একটা চিকন তারের মাথায় আটকানো, আর তারের আরেক মাথা রিকশাওয়ালার শার্টের কলারের পেছনদিকে আটকানো।
ঘটনাটা কী বোঝার চেষ্টা করতে থাকলাম। এমন হতে পারে রিকশাওয়ালার সাথে এদের চুক্তি হয়েছে এভাবে বিজ্ঞাপন করার, আবার এমনও হতে পারে যে কোন বান্দর পুলাপাইন রিকশাওয়ালার অজান্তে তার শার্টের কলারে এটা আটকে দিয়েছে।
একবার ভাবলাম জিজ্ঞেস করি চাচামিয়াকে, আবার মনে হল আমার জিজ্ঞেস করাটা শোভনীয় হবে না। তারপরও জানতে ইচ্ছা করছিল চাচামিয়া এই অভিনব বিজ্ঞাপনে অংশ নিয়ে কোন সম্মানী পাচ্ছেন কি না।
যা হোক চলতে চলতেই আমার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেলাম। দমকা বাতাসে কাগজটা উড়াল দিল, আর তখন তা রিকশাওয়ালার নজরে আসল। সে জীবনে কোনদিন দেখেনি এই আজব জিনিস এমন একটা চেহারা নিয়ে তাকিয়ে রইল উড়ন্ত কাগজটার দিকে।
কাগজটা উড়েই গেল, তারসহ। কেউ চাচামিয়াকে না জানিয়েই কাজটা করেছিল তাহলে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।