সত্য সন্ধানে সর্বদা নির্ভিক
বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার মতায় আসার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হতে বিএনপিপন্থী ১১ জন অধ্যাপক চাকরি হারানোর পর সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে চাকরি হারালেন আরো একজন অধ্যাপক। সার্জারি বিভাগের প্রধানের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগে ওই বিভাগের এক অধ্যাপককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, হেপাটোবিলিয়ারী ওপেনক্রিয়েটিক ও লিভার ট্রান্সপ্লান সার্জারী বিভাগের অধ্যাপক ডা. শহিদুর রহমান গত ২০০৯ সালের ৮ সেপ্টম্বরর দুপুর ১২ টা ৩০ মিনিটে সার্জারী বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ সিরাজুল ইসলামের কে গিয়ে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন এবং তাকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি প্রদান করেন।
এব্যাপারে অভিযুক্ত অধ্যাপক শহিদুর রহমান ফোকাস বাংলাকে জানান, অভিযোগে যে তারিখ ও সময়ের কথা বলা হয়েছে ঐ তারিখ ও সময়ে তিনি একটি জটিল অপারেশনের জন্য অপারেশন থিয়েটারে অবস্থান করছিলেন। এব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রি খাতায় উল্লেখ রয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, তার বিরূদ্ধে আনা অভিযোগের কোন দালিলিক বা শক্ত প্রমাণ পাওয়া যায় নি। তা সত্ত্বেও তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হল। তিনি বলে, প্রাথমিক তদন্ত কমিটিতে তার পে যাবতীয় প্রমাণ পেশ করার পরও তাকে এই শাস্তি পেতে হল।
বরখাস্ত ডা. শহিদুর আরো বলেন, শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এর আগে আরো ১১ জন অভিজ্ঞ অধ্যাপককে বিভিন্ন অজুহাতে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
এব্যাপারে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত ফোকাস বাংলাকে জানান, সার্জারী বিভাগের প্রধান সৈয়দ সিরাজুল ইসলাম অভিযুক্ত অধ্যাপক শহিদুর রহমানের বিরূদ্ধে তার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন। পরে তিনি অভিযোগের প্রেেিত অধ্যাপক সৈয়দ আতিকুল হক ও অধ্যাপক শফিকুল ইসলামের সমন্বয়ে দুই সদস্যের একটি প্রাথমিক তদন্ত কমিটি গঠন করেন। প্রাথমিক তদন্ত শেষে কমিটি অধ্যাপক শহিদুর রহমানের বিরূদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য বলে রিপোর্ট প্রদান করেন এবং তারা স্বচ্ছতার জন্য অধিকতর তদন্তের সুপারিশ করেন।
উপাচার্য আরো বলেন, প্রথম তদন্ত কমিটির রিপোর্টে অভিযোগ প্রমাণিত হলেও তিনি অধিকতর তদন্তের স্বার্থে সাত সদস্য বিশিষ্ট দ্বিতীয় তদন্ত কমিটি গঠন করেণ। তিনি ফোকাস বাংলাকে জানান, দ্বিতীয় তদন্ত কমিটিও অভিযোগ সত্য বলে রিপোর্ট প্রদান করে এবং অধ্যাপক শহিদুর রহমানকে স্থায়ী ভাবে বরখাস্তের সুপারিশ করে।
উপাচার্য জানান, দ্বিতীয় তদন্ত কমিটির সুপারিশ তিনি গ্রহণ না করে অধ্যাপক ডা. শহিদুর রহমানকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেন এবং আত্মপ উপস্থাপনের জন্য সময় বেঁধে দেন।
এসময় উপাচার্য এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ঘটনার দিন এবং ঐ সময়ে অধ্যাপক শহিদুর রহমান কোন অপারেশনের কাজে ব্যস্ত ছিলেন না বা এব্যাপারে তদন্ত কমিটি কোন প্রমাণ পায়নি। তিনি ডা. শহিদুর রহমানের বিরূদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কোন মন্ত্রনালয়ের আওতাভুক্ত না হওয়া সত্ত্বেও বিনা কারণে ডা. শহিদুর রহমান অফিস ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে ঘুরে বেড়ান।
এব্যাপারে অভিযোগকারী সার্জারী বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে ফোকাস বাংলার প্রতিবেদক কথা বলতে চাইলে তিনি রাগান্বিত কন্ঠে বলেন, এই ব্যাপারে তিনি ফোনে কোন কথা বলতে চান না।
এদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হেপাটোবিলিয়ারী ওপেনক্রিয়েটিক ও লিভার ট্রান্সপ্লান সার্জারী বিভাগের কয়েক সহকারী অধ্যাপক জানান, অধ্যাপক শহিদুর রহমানের সঙ্গে সঙ্গে তাদেরকেও বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করা হচ্ছে এবং তাদের বিভিন্ন বিভাগে সরিয়ে দিয়ে অনভিজ্ঞ ডাক্তারদের সার্জারী বিভাগে আনা হয়েছে।
তারা আরো বলেন, সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও অধ্যাপক শহিদুর রহমানে কে তালা লাগিয়ে রাখা হয়েছে। এবং তার অধিণে কর্মরত কর্মচারীদের বিভিন্ন বিভাগে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।