বাংলায় কথা বলি,বাংলায় লিখন লিখি, বাংলায় চিন্তা করি, বাংলায় স্বপ্ন দেখি। আমার অস্তিত্ব জুড়ে বাংলা ভাষা, বাংলাদেশ।
দেশের স্বনামধন্য পত্রিকা দৈনিক ইত্তেফাকের পুরো মালিকানা চলে গেল আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর কাছে। আর ইত্তেফাকের প্রতিষ্ঠাতা তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার বড় ছেলে মইনুল হোসেন এর বিনিময়ে পেলেন জমিসহ পুরো ইত্তেফাক ভবন ও নগদ ১০ কোটি টাকা। তবে মানিক মিয়ার দুই মেয়ে আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে থাকছেন।
আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর শেরাটন হোটেলে এ ব্যাপারে দুই পক্ষের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে এ চুক্তি সই হয়।
এ সময় মইনুল হোসেন, আনোয়ার হোসেনসহ ইত্তেফাকের ১০ জন পরিচালক উপস্থিত হয়ে এ সংক্রান্ত চুক্তিতে সই করেন। দুই পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে রফিক-উল হক, মাহমুদুল হাসান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
১৯৬৯ সালে মানিক মিয়ার মৃত্যুর পর ইত্তেফাকের মালিক হন তাঁর দুই ছেলে ও দুই মেয়ে। দুই বোনের ১২ শতাংশ করে অংশ থাকলেও এর নিয়ন্ত্রণ ছিল দুই ভাইয়ের হাতেই।
দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের কারণে কয়েক দফা বন্ধও হয়েছিল ইত্তেফাক। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে জরুরি অবস্থা চলাকালে পুরো নিয়ন্ত্রণ নেন ওই সময়ের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন উপদেষ্টা মইনুল হোসেন।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, ১৯৪৯ সালে সাপ্তাহিক পত্রিকা হিসেবে ইত্তেফাকের যাত্রা শুরু হয় মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর হাত ধরে। এর প্রতিষ্ঠাতা প্রকাশক ছিলেন আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ইয়ার মোহাম্মদ খান।
১৯৫৩ সালে দৈনিক ইত্তেফাক প্রকাশিত হয়।
কলকাতায় ইত্তেহাদ পত্রিকায় কর্মরত তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া এ সময় সম্পাদক হন। ওই বছরই মানিক মিয়া সাপ্তাহিকের প্রকাশনা বন্ধ করে দেন।
পরের বছর পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে যুক্ত ফ্রন্টের বিজয়ে পত্রিকা তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
পত্রিকাটি সামরিক শাসক আইয়ুব খান ও ইয়াহিয়া খানের বিরুদ্ধে জোরালো অবস্থান নিয়ে তৎকালীন পূর্ববাংলায় রাজনৈতিক প্রভাব তৈরি করে। আইয়ুব খান ১৯৬৬ থেকে ৬৯ পর্যন্ত দুই দফা পত্রিকার প্রকাশের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে।
মানিক মিয়া কয়েক বার কারাভোগও করেন।
১৯৬৯ সালে মানিক মিয়ার মৃত্যুর পর তার দুই ছেলে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ও মইনুল হোসেন পত্রিকা পরিচালনার দায়িত্ব নেন।
পত্রিকা পরিচালনা ও মালিকানা নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে বিরোধ চলেছে দীর্ঘদিন।
ইত্তেফাক ভবনে একাধিক খুনের ঘটনাও ঘটে। সর্বশেষ ২০০৫ সালে নিহত হন এক প্রেস কর্মচারী।
অভিযোগ রয়েছে, মালিকানা দ্বন্দ্বের জের ধরেই এসব অঘটন ঘটেছিল।
২০০৭ সালে সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করলে বড়ভাই মইনুল আইন উপদেষ্টা হন। এসময় সাবেক মন্ত্রী মঞ্জুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলার প্রেক্ষাপটে তিনি দেশত্যাগ করেন। একাধিক মামলায় তার সাজাও হয়।
মঞ্জু বিদেশে থাকার সময় ২০০৭ সালের ১৭ অক্টোবর মইনুলের স্ত্রী সাজু হোসেনকে সাময়িকভাবে প্রকাশক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের অনুমতি দেয় জেলা প্রশাসক।
এসময় ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক রাহাত খান সম্পাদকের দায়িত্ব নেন। ইত্তেফাকের অনেক সাংবাদিক-সংবাদকর্মীকে সে সময় অব্যাহতি দেওয়া হয়। নতুন করে বেশকিছু নিয়োগও দেওয়া হয়।
মঞ্জু দেশে ফিরে চাকরিচ্যুতদের বড় একটা অংশকে চাকুরি ফিরিয়ে দেন। ( কৃতজ্ঞতা- প্রথম আলো ও বিডি নিউজ২৪ ডট কম)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।